পেটের ক্ষুধার জ্বালায় ১০ বছর বয়সে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল শমসের আলী। এরপর ঘুরেছেন বিভিন্ন এলাকায়। কাজ করেছেন হোটেলে। চালিয়েছেন রিকশাও। অবশেষে ছোট ভাইয়ের হাত ধরে গত রবিবার বাড়িতে ফিরেছেন তিনি। মা–ছেলের সাক্ষাত এলাকার মানুষকে যেমন আনন্দ দিয়েছে তেমনি কাঁদিয়েছে সবাইকে।
শমসেরের বাড়ি নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মণপুর–কদমতলীর বাড়াইশালপাড়া গ্রামে। তার বাবা বজর মামুদ ২০ বছর আগে মারা গিয়েছিল।
পরিবারের লোকজন বলেন, শমসের দরিদ্র পরিবারে সন্তান। তার বাবা দিনমজুর কাজ করতেন। আট ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি পরিবারে সবচেয়ে বড়। টাকার অভাবে না খেয়ে থাকতে হতো তাদের পরিবারকে। অভাবের তাড়নায় খাবার না পেয়ে ৫২ বছর আগে রাগ করে বাড়ি থেকে চলে যায় ১০ বছরের শমসের। দিনাজপুরের পার্বতীপুরে একটি হোটেলে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন দুই বছর। সেখান থেকে চলে যান পুরোনো ঢাকার কলতাবাজার এলাকায়। সেখানে গিয়ে কয়েক বছর হোটেলে কাজ করেছেন তিনি। দুই বছর আগে তার ছোট ভাই মোতালেব হোসেন ঢাকায় গিয়ে রিকশা চালানো শুরু করেন। তখন মোতালেবের সঙ্গে পুরোনো ঢাকায় দেখা হয় শমসেরের। প্রথমে চিনতে না পারলেও কথাবার্তার একপর্যায়ে একে–অপরের মধ্যে পরিচয় হয়। এ সময় নিশ্চিত হন তারা সম্পর্কে আপন ভাই। পরে মোতালেব বাড়িতে নিজের ভাইকে ফিরিয়ে আনে।
তাদের মা সবেজান বেগম বলেন, অনেক খোঁজাখুঁজির পর ছেলের সন্ধান না পেয়ে দীর্ঘ ৫২ বছর ধরে চোখের জল ফেলেছি। কিন্তু এত দিন পর হলেও সৃষ্টিকর্তা ছেলেকে আমার কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। আমার যে কত আনন্দ হচ্ছে তা বোঝাতে পারব না।