গত সরকারের সময়ে সেনাবাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ১৫ জন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা এখন মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কারাবন্দি। দীর্ঘদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটে দাপটের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা এই কর্মকর্তারা বর্তমানে সেনানিবাসের সাব–জেলে অবস্থান করছেন। বুধবার (২২ অক্টোবর) তাদের প্রথম সাক্ষাতের দিন ছিল। কর্মকর্তাদের স্বজনরা সাক্ষাৎ করতে আসেন। যদিও কিছু পরিবার রান্না করা খাবার নিয়ে এসেও তা নেওয়া হয়নি, কারা কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত খাবার প্রদান করেছে। প্রাথমিকভাবে সাক্ষাতের সময় আধা ঘণ্টা নির্ধারিত থাকলেও স্বজনদের সংখ্যার কারণে প্রত্যেককে ২০ মিনিট করে দেখা করার সুযোগ দেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন দুইজন এআইজি (প্রিজন্স) ও তিনজন ডেপুটি জেলা ও জ্যেষ্ঠ কারা কর্মকর্তা।
প্রশাসন আশঙ্কা করেছিল আবেগঘন বা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে, তবে শেষ পর্যন্ত সাক্ষাত নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয়। কারাবিধি অনুযায়ী, প্রথম সাক্ষাতের ১৫ দিন পর আবারও স্বজনদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাবেন তারা। বুধবারের সাক্ষাতে শুধুমাত্র স্ত্রী ও সন্তানরা উপস্থিত ছিলেন। পরবর্তী সাক্ষাত অনুষ্ঠিত হবে ৫ নভেম্বর, যেদিন কিছু আসামি আদালতে হাজির হবেন। দৈনন্দিন কার্যক্রমে, সাব–জেলে তাদের সময় শান্তিপূর্ণভাবে কাটছে। অধিকাংশ সময় শুয়ে–বসে বা বই–পত্রিকা পড়ছেন। কেউ কেউ টেলিভিশন দেখছেন এবং নামাজ বা ধর্মীয় কার্যক্রম পালন করছেন। সহায়তায় কয়েকজন সেবক নিয়োজিত রয়েছেন। খাবারে সকাল ও দুপুরে ভাত, ডাল, সবজি এবং পছন্দ অনুযায়ী মাছ বা মাংস দেওয়া হচ্ছে, রাতের খাবারও মিল রয়েছে। আদালতে হাজির করার জন্য প্রসিকিউশন পক্ষ সেনাবাহিনীর গাড়ি চেয়েছিলেন, তবে ‘বিতর্কের আশঙ্কা’ দেখিয়ে তা অনুমোদিত হয়নি।
পরে কারা কর্তৃপক্ষ একটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আধুনিক সবুজ প্রিজন ভ্যান প্রস্তুত রাখে, যেটিতে তাদের আদালতে আনা–নেওয়া করা হয়। প্রত্যেককে পৃথক কক্ষে রাখা হয়েছে। মোট ১৬টি কক্ষ রয়েছে, তবে নতুন আসামি এলে এক কক্ষে দুই–তিনজন রাখা যেতে পারে। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার বলেন, “সাব–জেলটি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের অধীনে হলেও সব বিধি–বিধান অন্যান্য কারাগারের মতোই মানা হচ্ছে। আসামিরা কিছুটা বিমর্ষ মনে হলেও অস্বাভাবিক আচরণ করেনি। তারা কারাবিধি মেনে চলার আশ্বাস দিয়েছেন।“



