আফগানিস্তানের সঙ্গে পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সীমান্ত সংঘর্ষের পিছনে ভারতের ভূমিকা রয়েছে বলে দাবি করেছিলেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির। একই সঙ্গে ভারত ও আফগানিস্তানকে যোগ্য জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন। তার সেই দাবি অস্বীকার করেছেন তালেবান সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মৌলভী মোহাম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ‘আলজাজিরা’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন ‘আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনায় ভারতের কোনও ভূমিকা নেই। এই অভিযোগগুলি ভিত্তিহীন। আমাদের নীতিতে কখনও অন্য দেশের বিরুদ্ধে আমাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করা হবে না।’ গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই পাকিস্তান সেনার সঙ্গে আফগানিস্তানের সীমান্ত সংঘর্ষ চলছে। ওই সীমান্ত সংঘর্ষে দুই দেশের একাধিক সেনা সদস্যের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকও মারা গিয়েছেন।
পাকিস্তানের বিমান হামলায় তিন তরুণ আফগান ক্রিকেটার মর্মান্তিকভাবে প্রাণ হারিয়েছেন। শেষ পর্যন্ত কাতারের মধ্যস্থতায় দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘটেছে। সংঘর্ষের সময়ে বার বার পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির থেকে শুরু করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ আভিযোগ করেছেন, ‘আফগানিস্তানকে পিছন থেকে উস্কানি দিচ্ছে নয়াদিল্লির সরকার।’ সম্প্রতি ভারত সফরে গিয়েছিলেন তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি। তার ওই সফরকেও নিশানা করেছে পাকিস্তান সরকার। সোমবার (২০ অক্টোবর) ‘আলজাজিরা’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তালেবান সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মৌলভী মোহাম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ বলেছেন, ‘আমরা একটি স্বাধীন জাতি হিসেবে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখি। আমাদের জাতীয় স্বার্থের কাঠামোর মধ্যে সেই সম্পর্কগুলিকে আরও শক্তিশালী করব। একই সঙ্গে আমরা পাকিস্তানের সাথে সুপ্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক বজায় রাখব।
আমাদের লক্ষ্য সম্পর্ক সম্প্রসারণ করা, উত্তেজনা তৈরি করা নয়। পাকিস্তানের অভিযোগ ভিত্তিহীন, অযৌক্তিক এবং অগ্রহণযোগ্য।’ পাকিস্তান হামলা চালালে যোগ্য জবাব দেওয়া হবে বলে হুঙ্কার ছেড়ে তালেবান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যদি কোনও দেশ আফগানিস্তান আক্রমণ করে, তবে যোগ্য জবাব দেওয়া হবে। আফগানদের তাদের মাতৃভূমি রক্ষার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে।’ তালিবান সরকার পাকিস্তান বিরোধী জঙ্গি সংগঠনকে মদত জুগিয়ে চলছে বলে যে অভিযোগ করেছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান তাও খারিজ করে দিয়েছেন মুজাহিদ। এ বিষয়ে খানিকটা শ্লেষাত্মক কণ্ঠে তিনি বলেন ‘পাকিস্তান তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে বর্ণনা করে। এই ‘সন্ত্রাসী’ শব্দটির কোন স্পষ্ট সংজ্ঞা কখনই ছিল না। আফগানিস্তানের নীতি হল, পাকিস্তানসহ অন্য কোনও দেশের বিরুদ্ধে সশস্ত্র গোষ্ঠীকে সমর্থন না করা।’