মহাসড়কের মাঝখানে বাস দাঁড় করিয়ে যাত্রী তুলছিলেন চালক। পাশেই দায়িত্ব পালন করছিলেন হাইওয়ে থানার পুলিশ। মহাসড়কের মাঝখান থেকে বাস সাইডে নিয়ে দাঁড় করানোর অনুরোধ করে পুলিশ। তাতে কর্ণপাত না করে চালক তাঁর বাস সেখানে দাঁড় করিয়েই রাখেন। যাত্রী ওঠানামা করান। এ নিয়ে এক পর্যায়ে পুলিশের সঙ্গে চালকের সহযোগীর বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে পুলিশ ওই বাস রেকার দিয়ে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চালক ও তার সহযোগী পুলিশের ওপর হামলা চালায়। পুলিশকে মারপিট করে। শুক্রবার সকাল ৯টার দিকে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার জৈনা বাজার এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। যার একটি ভিডিও অনলাইনে ভাইরাল হয়ে যায় মুহূর্তে। এ ঘটনায় ইমাম পরিবহনের ওই বাস জব্দ, চালক জাকির হোসেন সোহেল ও সহযোগী আরিফুল ইসলামকে আটক করেছে মাওনা হাইওয়ে থানার পুলিশ। হামলায় আহত পুলিশ কনস্টেবল আব্দুর রবকে হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। মাওনা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী জানান, শেরপুর থেকে আসা ঢাকাগামী ইমাম পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস জৈনাবাজার এলাকায় মহাসড়কের মাঝে থামিয়ে যাত্রী তুলছিল।
এ সময় সড়কে যানজট লেগে গেলে চালককে বাসটি সাইড করতে বলে পুলিশ। অবৈধ পার্কিংয়ের অভিযোগে ওই বাস চালককে রেকার, জ্বালানিসহ দুই হাজার টাকা বিলও করা হয়। তারা রেকার বিল দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে চালক ও তার সহকারী বাস থেকে নেমে পুলিশ সদস্যের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের
ভাষ্য, চালক ও সহযোগীর সঙ্গে মিলে স্থানীয় কয়েকজন পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়ায়। এক পর্যায়ে তারা কনস্টেবল আব্দুর রবকে ধাক্কা ও কিলঘুসি দিতে থাকে। তাঁর হাতে কামড় দেয়। মাথায় আঘাত করে। পরে সড়কের পাশে দোকানের ভেতরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ওসি আইয়ুব আলী জানান, খবর পেয়ে পুলিশ যাওয়ার আগেই ইমাম পরিবহনের চালক দ্রুত বাস নিয়ে ঢাকার দিকে চলে যায়। পরে গাজীপুরের সালনা এলাকা থেকে ওই বাস জব্দ করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় চালক ও সহযোগীকে।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েক যুবক হাইওয়ে পুলিশের কটি পরা কনস্টেবল আব্দুর রবকে ধাক্কাধাক্কি করছেন। কয়েকজনকে বলতে শোনা যাচ্ছে, তাকে জিজ্ঞাসা কর, কীসের টাকা নিয়েছে।
এ সময় লুঙ্গি পরা ও সাদা পাঞ্জাবি গায়ে এক ব্যক্তি এসে হাইওয়ে পুলিশের কনস্টেবলকে ধাক্কা দিয়ে মহাসড়কের পাশেই একটি দোকানের দিকে নিয়ে যাওয়ার সময় বলছে, ‘মামলা দিয়ে সে কেন দুই হাজার টাকা নিয়ে গেল?’ মাওনা হাইওয়ে থানার ওসি আইয়ুব আলী বলেন, থানা পুলিশের কাছে আটক চালক ও হেলপারকে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে টঙ্গীতে অটোরিকশার চাকা ফুটো করায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের মাথা ফাটিয়ে দিয়েছেন চালক মোস্তাকিন। আহত পুলিশ সদস্যের নাম মো. সাঈদ। এই ঘটনায় অটোরিকশাচালক মোস্তাকিনকে আটক করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাতে টঙ্গী স্টেশন রোড এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
আটক মোস্তাকিন হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ থানার শিবপাশা গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে। তিনি টঙ্গীর দত্তপাড়া কসাইবাড়ী এলাকায় ভাড়া বাসায় থেকে অটোরিকশা চালাতেন।
ভুক্তভোগী পুলিশ সদস্য গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক দক্ষিণ বিভাগের কনস্টেবল হিসেবে কর্মরত।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে টঙ্গীর স্টেশন রোড এলাকায় ট্রাফিক বিভাগে কর্তব্যরত ছিলেন কনস্টেবল মো. সাঈদ। এ সময় তিনি অটোরিকশাচালকদের মহাসড়কে যেতে নিষেধ করেন। নিষেধ অমান্য করে অটোরিকশাচালক মোস্তাকিন সামনে যেতে চাইলে সাঈদ তাঁর হাতে থাকা টেস্টার দিয়ে অটোরিকশার চাকা ফুটো করে দেন। এতে চালক মোস্তাকিন ক্ষিপ্ত হয়ে টেস্টার কেড়ে নিয়ে পুলিশ সদস্য সাঈদের মাথায় আঘাত করে তাঁর মাথা ফাটিয়ে দেন। পরে স্থানীয় লোকজন আহত পুলিশ সদস্যকে উদ্ধার করে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান।
টঙ্গী পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদুজ্জামানের ভাষ্য, ট্রাফিক পুলিশকে আহত করার ঘটনায় অটোরিকশাচালককে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।