আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি ফেরত নেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে তার এই প্রচেষ্টার বিরোধিতা করে আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে ভারত। শুধু ভারতই নয়, একই বিষয়ে চীন, পাকিস্তান ও রাশিয়াও আফগানিস্তানকে সমর্থন জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে এই চার দেশের এমন একমত অবস্থান বিরল ঘটনা। ভারতের এই অবস্থান আসে এমন এক সময়ে, যখন তালেবান সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি সরকারি সফরে নয়াদিল্লি যাচ্ছেন। জাতিসংঘের অনুমোদনে তিনি ৯ থেকে ১৬ অক্টোবর পর্যন্ত ভারত সফর করবেন। আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা নেওয়ার পর এটাই হবে প্রথম কোনো মন্ত্রীর ভারত সফর, যদিও ভারত এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। গত মঙ্গলবার মস্কোয় অনুষ্ঠিত ‘মস্কো ফরম্যাট কনসালটেশন’-এর সপ্তম বৈঠকে ভারত, চীন, পাকিস্তান ও রাশিয়া আফগানিস্তানের পাশে অবস্থান নেয়।
বৈঠক শেষে দেওয়া যৌথ বিবৃতিতে বাগরাম বিমানঘাঁটির নাম সরাসরি উল্লেখ না করে জানানো হয়, আফগানিস্তান বা তার প্রতিবেশী দেশে নতুন সামরিক অবকাঠামো স্থাপনের উদ্যোগ আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য ক্ষতিকর। এর আগে হঠাত্ করেই ট্রাম্প বাগরাম বিমানঘাঁটি যুক্তরাষ্ট্রকে ফেরত দেওয়ার দাবি জানান। যদিও পাঁচ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহার করে এবং সে সময় দুই দেশের মধ্যে এ নিয়ে একটি চুক্তিও হয়েছিল। ট্রাম্পের নতুন দাবি বিশ্বকে বিস্মিত করেছে। তালেবান সরকার তাত্ক্ষণিকভাবে দাবি নাকচ করে জানায়, কোনো অবস্থাতেই আফগান ভূমি অন্যের হাতে তুলে দেওয়া হবে না। আফগান মুখপাত্র জাবিহুল্লাহ মুজাহিদ স্পষ্ট করে বলেন, আফগানরা কখনো তাদের জমি হস্তান্তর করবে না। এ অবস্থার মধ্যেই আফগান প্রতিনিধি দল প্রথম বারের মতো মস্কো বৈঠকে যোগ দেয়, যেখানে দেশটির প্রতিনিধিত্ব করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুত্তাকি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের দাবি উপেক্ষা করার পরও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চাপ অব্যাহত রেখেছেন। এই পরিস্থিতিতে ভারতের প্রকাশ্য সমর্থন কূটনৈতিকভাবে তাত্পর্যপূর্ণ। আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি না দিলেও নয়াদিল্লি ইতিমধ্যেই তালেবান সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ বৃদ্ধি করেছে।