দেখা, শোনা বা পাঠের মাধ্যমে কোনো বিষয়ে জ্ঞানার্জন আর ওই ঘটনার মধ্যে নিজেকে সম্পৃক্ত রেখে ঘাতপ্রতিঘাতের দ্বারা অভিজ্ঞতা অর্জন এক হতে পারে ন। গল্প শোনা আর গল্পের নায়ক হওয়া স্বপ্নের জগত আর বাস্তব জগতের মতো ব্যতিক্রমী ব্যাপার। দৃষ্টান্তস্বরূপ উল্লেখ করা চলে, বর্তমান প্রজন্মের (অর্থাৎ যাদের বয়স ২৫–৩০ এর কোঠায়) কাছে স্বাধীনতাযুদ্ধের কাহিনী আর টেলিভিশন–সিরিজ সিন্দবাদ বা রবিনহুডের কাহিনী একই রোমাঞ্চকর ব্যাপার নয় কি? মার–খাওয়া আর মার খেতে দেখা সমউপলব্ধিজনক নয়। স্বাধীনতাযুদ্ধে দুর্যোগ ও মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ সময়ে শত্রু“সেনাদের আক্রমণ থেকে বেঁচে থাকা এবং তাদের প্রতিহত করা মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য যেঙ কতোই কঠিন বিষয় ছিল তা ভাষায় বর্ণনার মাধ্যমে উপলব্ধি করা অসম্ভব। শত্রু“সেনাদের উপস্থিতি টের পেয়ে আত্মারক্ষার্থে পচাডোবায় কচুরিপানার মধ্যে ডুবে থাকা এবং তাদের স্থান ত্যাগ না করা অবধি অসাড় হয়ে থাকাটা যে কতোই প্রাণান্তকর বেদনা, তদুপপরি আরো বীভৎসকর দৃশ্যপটে রূপ নেয় ডোবা থেকে উঠে এসে যখন গোটা শরীরে দেখতে পায় প্রীতিভোজে পরিতৃপ্ত জোঁকের সমারোহ। যিনি কাহিনীর নায়ক তিনি যে শিক্ষা লাভ করেন নিঃসন্দেহে সে শিক্ষাই হলো সর্বোত্তম। দু’ছত্রু মুখস্ত করে তার নাগাল পাওয়া কী সম্ভব।
বকুলফুল কে–না ভালোবাসে! আমিও পছন্দ করি। কোনো এক ভোর বেলায় হেঁটে যাচ্ছিলাম বকুলতলা থেকে। নজরে পড়লো প্রচুর ধুলাবালু আর শিশিরকণার সাথে মিলেমিশে কদাকার হয়ে পড়েছে। বৃকষ থেকে ঝরে পড়লেও তো বকুলেরই বংশ, তাই কুড়িয়ে নিলাম দু’চারটে। গন্ধটা বেশ ভালোই লাগার কথা ছিল, তবে বাড়তি লাভ হলো ময়লা–আবর্জনার সোঁদাগন্ধ। অবশ্য দোষটা আমারই বলতে হবে, ফুলপ্রেমিক আমি, ফুল চয়নে কেন বিলম্ব করলাম, কেন ফুলটাইমে হাজির হলাম না ফুলবাগানে। জীবন থেকে বয়ে যাওয়া প্রতিটি মুহূর্ত সফলতা–ব্যর্থতা, আশা–নিরাশা, আনন্দ–শোকে পরিপূর্ণ স্মরণীয় ইতিহাসসম ব্যক্তি ও জাতির জীবনে প্রতিনিয়ত লাল–সবুজ সংকেত বহন করে চলছে।
মানুষ হলো সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব। ঝরাফুলের মতো আজকে মানুষের এতো করুণ হাল, মানবেতর অবস্থানে কেমন করে নেমে গেলো তারা? মানুষের অবস্থা আজকে কারাগারে বন্দিদের সাথে তুলনা করা চলে। কিন্তু এ কারাগারের চৌহদ্দি এতোই বড়ো যার ফলে নিজেদের বন্দিদশা সহজে অনুমেয় নয়। কয়েদিদের মধ্যে আবার কিছু ‘ম্যাড’ রয়েছে, যারা জেলখানায় থেকেও আয়–উপার্জন ভালোই করে। তেমন বন্দিদের কাছে কারামুক্তির প্রস্তাব দিলে উল্টো কঠিন শর্ত আরোপ করে বসে মানবপ্রেমিক স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে। এর অর্থ হলো, তারা আসলেই নিজেদের দূরে রাখে। অন্ধত্ব মানুষকে শব্দপাগল বানিয়ে ছাড়ে। ক্রমে ক্রমে শব্দের সাথে সে হয়ে উঠে পরিচিত। তখন তারা বিষয়বস্তুর প্রকৃত অবস্থা দেখতে না পেলেও সুপরিচিত শব্দঝংকারে হতে পারে মুগ্ধ এবং বলে দিতে পারে কি ঘটতে চলেছে। এ সমস্ত ক্ষেত্রে সে যে প্রতারণার স্বীকার হবে না তা কিন্তু বলা চলে না। আমরা ভাষা চাই, চাই লেখ্য ও কথ্য। পরিচিত হতে চাই শব্দ–সংকেতের সাথে তথা লিপিকলার ও চারুলিপির সাথে। তবে ভুলক্রমেও শব্দ সর্বস্ব হওয়া চলবে না। দাদাবাবু যেন কেবল কথার ফুলঝুরি দিয়ে আমাদের পরিতৃপ্ত করেই বিদায় নিতে না পারেন, সেদিকেও আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে।
খোদার মুখে প্রেমের বাণী শুনতে পাই আর সে প্রেমের বাস্তবায়ন দেখতে পাই তাঁরই হুবহু প্রকাশ খোদাবন্দ ঈসা মসিহের মাধ্যমে, যিনি জগতকে মুক্ত করা এবং তাদের পাপের কাফফারা পরিশোধ করার জন্য প্রেমের তাগিদে নিজের প্রাণ পর্যন্ত কোরবানি করে দিয়েছেন। তাই প্রত্যেয়েরসাথে বলতে পারিনি মানব জাতির প্রতি খোদার অসীম–অফুরন্ত প্রেম চূড়ান্ত ও বাস্তবরূপ লাভ করলো কেবলমাত্র ঈসা মসিহের জানের কোরবানির দ্বারা।প্রেমের পরাকাষ্ঠা মসিহের সাথে যুক্ত এবং মসিহের দ্বারা পরিচালিত ব্যক্তিবর্গের পক্ষেই সম্ভব হয়েছে খোদার খাঁটি প্রেমে পরিতৃপ্তি লাভ। এ সুযোগ সমভাবে জাতি–ধর্ম–বর্ণ নির্বিশেষে সকলের জন্য রয়েছে অবারিত। পরখ করার সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে কেবল আপনারই ওপর



