সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ব্যাটে–বলে টাইগারদের কাছে পাত্তাই পাইনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ক্যারিবীয়দের ১৭৯ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম ম্যাচে জেতার পর দ্বিতীয় ম্যাচে সুপার ওভারে গিয়ে হেরেছিল বাংলাদেশ, এবার জিতেছে তৃতীয় ম্যাচে। জিতে নিল সিরিজও। মিরপুরে টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ২৯৬ রানের সংগ্রহ দাঁড় করায় বাংলাদেশ। ওপেনিং জুটিতে সাইফ হাসান এবং সৌম্য সরকার মিলে তুলে ফেলেন ১৭৬ রান। ৪৫ ইনিংস পর ওয়ানডে ফরম্যাটে ১০০ রানের ওপেনিং জুটির দেখা পেয়েছে বাংলাদেশ। যে ওপেনিং জুটি নিয়ে এতদিন ভুগতে হয়েছে সেখানে এমন রানের বন্যা নিশ্চিতভাবেই দারুণ স্বস্তির। দারুণ শুরুর পর যদিও ৩০০ ছাড়াতে পারেনি বাংলাদেশ। ২৯৬ রানে থামতে হয়েছে। তবে এই রানের অর্ধেকও যেতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
টাইগার স্পিনারদের ঘূর্ণিতে কাবু হয়ে ১১৭ রানেই থেমেছে ক্যারিবিয়ানরা। ম্যাচ হেরেছে ১৭৯ রানের বিশাল ব্যবধানে। সিরিজ শেষে হতাশা ঝরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান কোচ ড্যারেন স্যামির কণ্ঠে। দলের পারফরম্যান্স নিয়ে হতাশ স্যামি কৃতিত্ব দিয়েছেন বাংলাদেশকে। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে স্যামি বলেন, ‘(ইতিবাচক দিক) হয়ত শাই হোপের ব্যাটিং। সে যেভাবে দলকে বয়ে নিয়ে গেছে, অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে তাকে। সে একজন লিডারও। দলকে টেনে নিয়ে গেছে প্রতিবারই। আমি খুবই হতাশ আমাদের বোলিং নিয়ে। এই বছর যেসব ওয়ানডে খেলেছি, আয়ারল্যান্ড–ইংল্যান্ডে এবং হোমে পাকিস্তানের বিপক্ষে, এরপর বাংলাদেশে আসলাম। স্পিনারদের আরও ধারালো হতে হবে। কারণ এখানেই প্ল্যানটা ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারবেন, এখানেই তাদের জন্য সবচেয়ে ভালো কন্ডিশন ছিল। ৩ ম্যাচে যেমন করেছি তা খুবই বাজে ছিল। একদমই ধারাবাহিক ছিলাম না। তিন ম্যাচেই আমরা বাংলাদেশকে পার স্কোরের চেয়ে বেশি রান করতে দিয়েছি।
আমি ভেবেছি ওভারপ্রতি ৩.৫ রানের পিচ এটি। তবে বাংলাদেশ ওভারে চার রানের বেশি নিয়েছে।’ স্যামি আরও বলেছেন, ‘ব্যাটিংয়ের ক্ষেত্রে কেসি কার্টি, শাই হোপরা চ্যালেঞ্জের মধ্যে দায়িত্ব নিয়েছে। অনেক হতাশ আমি। বাংলাদেশ অনেক ভালো খেলেছে। তাদেরকে অভিনন্দন। কন্ডিশন অনুযায়ী তাদের কাছাকাছি যেতে পারিনি আমরা ব্যাটিং, বোলিং বা ফিল্ডিংয়ে।’ সিরিজটি ২০২৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপ বিবেচনায় ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে স্যামি বলেছেন, ‘আসলে এটা মাইন্ডসেটের ব্যাপার। আমরা ড্রেসিংরুমে যেভাবে আলোচনা করি, এসব ম্যাচের গুরুত্ব নিয়ে, (আমরা বলি) বিশ্বকাপে সরাসরি খেলার ব্যাপারে মনোযোগী হতে হবে আমাদের। দুই দল লড়াই করছে শেষ জায়গার জন্য। পরে আপনি সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচ পেলেন, মাইন্ডসেট হতে হবে যে আমিই কাজটা করে দিব। ব্যাটারদের মাইন্ডসেট হতে হবে আমি সাহসী হব, আমিই সুর বেঁধে দিব। আমাদের স্কোর আসলে উইকেটের আচরণটা প্রতিফলিত করছে না।’ স্যামি আরও বলেছেন, ‘(বাংলাদেশের) ব্যাটাররা পাওয়ারপ্লেতে সাহসী ব্যাটিং করেছে, যে কারণে আমরা চাপে পড়ে গেছি। পরে সেই জবাব দিতে আমাদের অনেক সময় লেগে গেছে। এর ফলে চরমভাবে মূল্য দিতে হয়েছে। তিন বিভাগেই খারাপ করেছি আমরা। মনে হয় ছয়টা ক্যাচ ফেলেছি এক ম্যাচেই। সৌম্যর ইনিংসে ক্যাচ ফেলেছি। আজকে সব বিভাগেই অনেক বাজে ছিলাম আমরা।’



