জলের অনেকগুলো নাম রয়েছে। পৃথিবীতে যতগুলো ভাষা প্রচলিত রয়েছে, হয়তো মনে করবেন ততগুলো নাম তো রয়েছেই যা নিশ্চিত করে বলা চলে। আমি বলব, জলের নাম আরও অনেক বেশি খুঁজে পাবেন। যেমন বাংলা ভাষায় জলের অনেকগুলো নাম রয়েছে: পানি, বারি, সলিল, পয়, নীর, অপ, উদ, অম্বু, পুষ্কর, তোয় ইত্যাদি। যদি মাত্র একটি ভাষায় একই পদার্থের এতগুলো নাম থাকে, তবে উক্ত দ্রব্যের কত লক্ষকোটি নাম পাবেন বিশ্বের সার্বিক প্রচলিত ভাষায়! একটু বিবেচনা করে দেখুন।
জলের ব্যবহার করার সময় ব্যক্তির কাছে শব্দান্তরের ফলে কোনো প্রভাব পড়ে না। কারণ পদার্থগত প্রভাব সকল ভাষাভাষীর উপর একই প্রতিক্রিয়া বর্তায়। যেমন তৃষ্ণার্ত ব্যক্তি জলপান করে তার তৃষ্ণা মেটায়। সে যদি কোন নামও না জানে, তাতে কি এসে যায়, চাই তার উক্ত জলীয় পদার্থ। জলের বৈজ্ঞানিক চিহ্ন হলো H2O অর্থাৎ হাইড্রোজেন গ্যাসের দুইটি মলিকিউল আর অক্সিজেন গ্যাসের একটি মালকিউল মিলে জল উৎপন্ন হয়।
এবার আমার প্রশ্ন হলো, বিশ্ব চরাচরের নির্মাতা, রক্ষাকর্তা, সর্বশক্তিমান মাবুদ যিনি এক রূহানি সত্ত্বা নিয়ে অনন্তকাল থেকে অনন্তকাল ধরে অবস্থান করে চলছেন, যারা দাবি করে ফিরছেন, তেমন প্রেমের পারাবার অবিনশ্বর মাবুদের সাথে রয়েছে তাদের এক মধুময় সম্পর্ক এবং তাদের সৃষ্টি করা হয়েছে মাবুদের স্বীয় সুরতে ও নিজস্ব প্রতিনিধি হিসেবে, তারা কেন মাবুদের বিষয়ে বর্ণনা দিতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে ফেলে? বর্ণনার ভিন্নতার কারণে নিজেদের মধ্যে যুদ্ধবিগ্রহ বাধিয়ে বিনাশ করে চলছে পরষ্পর। তথাকথিত ভক্ত বা উপাসকবৃন্দ মাবুদের বিষয়ে গভীর জ্ঞান না জেনেই পার্থীব স্বার্থে নিজেদের মনগড়া ফতোয়া দিয়ে ফেরার কারনে পূজারীদের মধ্যে বহুধাবিভক্তির কারণ দেখা দিয়েছে। মাবুদের প্রকৃত পরিচয় হলো, তিনি প্রেম, যার মধ্যে মিথ্যা মরীচিকা বলতে কিছুই নেই। “বনি–ইসরাইলরা শোন, আমাদের মাবুদ আল্লাহ এক” (দ্বিতীয় বিবরণী ৬:৪)।
কেবল অভিশপ্ত ইবলিস প্রথম দিন থেকে মানুষকে ধোকা দিয়ে আসছে, মানুষের সাথে মানুষের বৈরিতা সৃষ্টি করে তাদের মধ্যে খুন–খারাবী সৃষ্টি করে চলছে। তা বলতে পারেন প্রথম মানুষ আদমের যাত্রারম্ভ থেকে, তাদের প্রথম জোড়া পুত্র কাবিল ভ্রাতা হাবিলকে খুন করে নিজের হাত কলঙ্কিত করে নিল।
মাবুদ হলেন পূতপবিত্র প্রেমের পারাবার, অপরাধি যখন স্বীয় অপরাধ বুঝতে পারে, তজ্জন হয় অনুতপ্ত, মাবুদের কাছে ফরিয়াদ জ্ঞাপন করে, নিজেকে তাঁর কাছে সমর্পণ করে, দয়ার সাগর মাবুদ তাৎক্ষণিক তাকে ক্ষমা করে দেন এবং স্নাতশুভ্র করার ব্যবস্থা করে স্বীয় ক্রোড়ে তুলে নেন। খোদাকে ডাকার জন্য কোনো নামের প্রয়োজন পড়ে না। মূসা নবী বেশ সওয়াল জওয়াব করতেন খোদার সাথে। তিনি খোদার নাম জানতে চেয়েছিলেন? আল্লাহ মূসাকে বললেন, “যিনি ‘আমি আছি’ আমিই তিনি। তুমি বনি–ইসরাইলদের তোমাকে পাঠিয়েছেন। (হিজরত ৩ : ১৪)। আসলে মাবুদ হলেন অনন্তজীবি সর্বশক্তিমান সর্বত্র বিরাজমান, সর্বদর্শী প্রেমের পারাবার রূহানি সত্ত্বা, তাঁকে কোনো মানুষ দেখতে পারে না। তবে তাঁর অসীম প্রেম ও পরাক্রম আমরা সহজেই বুঝতে পারি। “মানুষ খোদার কালামে বেঁচে থাকে। মানুষ কেবল রুটিতেই বাঁচে না খোদার মুখের প্রত্যেকটি কথায় বেঁচে থাকে” (মথি ৪ : ৪)। খোদা যখন মাটি দিয়ে প্রথম মানুষ আদম সৃষ্টি করলেন, পূর্ণ কলেবর থাকা সত্ত্বেও আদম জীবিত হতে পারলেন না। যখনই মাবুদ তার নাশিকায় প্রাণবায়ু ফুঁকে দিলেন, অমনি আদম জীবিত প্রজ্ঞাবান মানুষের পরিণত হলেন। বর্তমানেও প্রত্যেকটি মানুষের চাই ঐশি রূহ সত্যিকার মানুষের মত মানুষ হয়ে বেঁচে থাকার জন্য। মানুষের মধ্যে অভিশপ্ত ইবলিসের আছর বা প্রভাব সদাসর্বদা থাকে কার্যকর মাংসিক মানুষ ইতোমধ্যে হয়ে গেছে পরাভুত। অবশ্যই তাকে পাকরূহের দ্বারা নতুন জন্ম লাভ করতে হবে। যেমন অন্ধকার গৃহে বসবাস করা অসম্ভবই হয়ে দাড়ায়। বসবাসের জন্য ঘরটিতে অবশ্যই থাকতে হবে আলোর ব্যবস্থা। পাকরূহ হলেন একক চালিকাশক্তি যিনি জগতের নূর, যেমন খোদাবন্দ হযরত ঈসা মসিহ হলেন দূনিয়ার নূর। আপনি জানেন তো, খোদা হলেন রূহানি সত্ত্বা। তাই নূরের সাথে সাযুজ্য রয়েছে নূরের। মাবুদ হলেন নূর, মসীহ হলেন ঐশি নূর যিনি মানবরূপ ধারণ করে ধরাপৃষ্ঠে আবির্ভুত হয়েছেন, আর যারা তাঁকে আপন আপন হৃদয়ে বিশ্বাসপূর্বক স্থান দিয়েছেন, মুক্তিদাতা হিসেবে বরণ করে নিয়েছেন তারাও দুনিয়ার নূরে হয়েছন পরিণত। “তোমরা দুনিয়ার আলো। পাহাড়ের উপরের শহর লুকানো থাকতে পারে না।” (মথি ৫ : ১৪)।
এবার আসুন আলোর মেখলা বলতে কি বোঝানো হয়ে থাকে। একসাথে শতসহস্র আলো যখন জ¦লতে থাকে তখনই তা আলোর মেখলা বলে চিহ্নিত হয়। বিশ্বের সকল বিশ্বাসীবর্গ যখন খোদার নূর যা মসীহ দাতব্যদান হিসেবে বিশ্বাসীদের জীবনে দান করেছেন, তারা যখন পাকরূহের আলোতে প্রজ্জ্বলিত থাকে, তখনই তাদের বলতে হবে নূরের মেখলা, অর্থাৎ নূরের সন্তান। মৌলিক দিক দিয়ে মানুষের সাথে মানুষের খুব একটা পার্থক্য নেই। যত পার্থক্য দেখা যায় প্রথমত: ভাষা, তারপর পার্থীব স্বার্থ, বলতে পারেন হীনস্বার্থ যা লোভ নামে আখ্যাত, আর লোভে মানুষ বিবেকহারা হয়ে পড়ে, কথায় আছে লোভে পাপ, আর পাপ বয়ে আনে মৃত্যু। দেহের কামনা, চোখের লোভ আর সাংসারিক বিষয়ে অহংকার মাবুদের উপর আস্থা ও বিশ্বাস খতম করে দেয়। মসীহ অভয়বাণী দিতে গিয়ে একটি চড়াই পাখীর সাথে তুলনা করে শিক্ষা দিয়েছেন। সামান্য একটি চড়াই পাখী পর্যন্ত বেঁচে থাকে মাবুদের সুনিপূণ ব্যবস্থায়, সেক্ষেত্রে সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ কেন খোদার উপর আশা–ভরসা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে. মানুষকে মুক্তপাপ করার জন্য তাদের পাপের কাফফারা মসীহ নিজেই বহন করেছেন, প্রেমের জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত এর চেয়ে অধিক আর কি থাকতে পারে? আজকে আমাদের সেই নিখুঁত বিশ্বাস থাকা চাই। বিশ্বাসের বিষয়ে মসীহ কি বলেছেন শুনুন: “ঈসা তাঁদের বললেন, “তোমাদের অল্প বিশ্বাসের জন্যই পারলে না। আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, যদি একটা সরিষা দানার মত বিশ্বাসও তোমাদের থাকে তবে তোমরা এই পাহাড়কে বলবে, ‘এখান থেকে সরে ওখানে যাও,’ আর তাতে ওটা সরে যাবে। তোমাদের পক্ষে কিছুই অসম্ভব হবে না” (মথি ১৭ : ২০)। কেননা, কেবল বিশ্বাসহেতু মানুষ বেঁচে থাকে, হতে পারে মুক্তপাপ। কোনো কর্মের দ্বারা বা ধার্মিকতা বা কৃচ্ছ্রতার দ্বারা পাপের প্রায়শ্চিত্ত পরিশোধ করা সম্ভব নয়। “আল্লাহর রহমতে ঈমানের মধ্য দিয়ে তোমরা নাজাত পেয়েছ। এটা তোমাদের নিজেদের দ্বারা হয় নি, তা আল্লাহরই দান। ৯এটা কাজের ফল হিসাবে দেওয়া হয় নি, যেন কেউ গর্ব করতে না পারে। ১০আমরা আল্লাহর হাতের তৈরী। আল্লাহ মসিহ ঈসা সংগে যুক্ত করে আমাদরে নতুন করে সৃষ্টি করেছেন যাতে আমরা সৎ কাজ করি। এই সৎ কাজ তিনি আগেই ঠিক করে রেখেছিলেন, যেন আমরা তা করে জীবন কাটাই।” (ইফিষীয় ২ : ৮–১০)। কেননা মানুষের ধার্মিকতা খোদার পবিত্রতার তুলনায় ছেড়া নোংরা ঘৃণীত কাপড়ের তুল্য। “আমরা প্রত্যেকে নাপাক লোকের মত হয়েছি আর আমাদের সব সৎ কাজ নোংরা কাপড়ের মত। আমরা সবাই পাতার মত শুকিয়ে গেছি, আমাদের গুনাহ্ বাতাসের মত করে আমাদের উড়িয়ে নিয়ে গেছে।” (ইশাইয়া ৬৪ : ৬)।
খোদার কাছে অনুতপ্ত ভগ্নচূর্ণ হৃদয় কবুল হয়ে থাকে। কালামপাকে একটি বিষয় বর্ণীত রয়েছে, মসীহের মহীতলে আগমনের একমাত্র কারণ হলো, হারানো মানিক খুঁজে পাওয়া। লুক লিখিত সুসমাচারে যেমন বর্ণীত রয়েছে, “যারা হারিয়ে গেছে তাদের তালাশ করতে ও নাজাত করতেই ইবনে–আদম এসেছেন।” (লুক ১৯ : ১০)। হারানো মানিক আখ্যা দেয়ার কারণ হলো, সৃষ্টিলগ্নে মাবুদ মানুষ সৃষ্টি করেছেন নিজের সাথে মিল রেখে, নিজেকে প্রকাশ করার জন্য। কেননা তিনি হলেন বাতেনী সত্ত্বা যাকে কেউ কখনোই দেখে নি। মূসা নবী প্রান্তরে যা দেখেছিলেন তা হলো খোদার নূর, যা তার সামনে আগুনের সাদৃশ্যে প্রতিভাত হয়েছিল। গানের সুরে বলা হয়, “খোদার নূরে পাহাড় জ¦লে, মূসা জ¦লে না”। “মাবুদ আল্লাহর তৈরী ভূমির জীব–জন্তুদের মধ্যে সাপ ছিল সবচেয়ে চালাক। এই সাপ একদিন সেই স্ত্রীলোকটিকে বলল, “আল্লাহ কি সত্যি তোমাদের বলেছেন যে, বাগানের সব গাছের ফল তোমরা খেতে পারবে না?” জবাবে স্ত্রীলোকটি বললেন, “বাগানের গাছের ফল আমরা খেতে পারি। তবে বাগানের মাঝখানে যে গাছটি রয়েছে তার ফল সম্বন্ধে আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা তার ফল খাবেও না, ছোঁবেও না। তা করলে তোমাদের মৃত্যু হবে।” তখন সাপ স্ত্রীলোকটিকে বলল, “কখনও না, কিছুতেই তোমরা মরবে না। আল্লাহ জানেন, যেদিন তোমরা সেই গাছের ফল খাবে সেই দিনই তোমাদের চোখ খুলে যাবে। তাতে নেকী–বদীর জ্ঞান পেয়ে তোমরা আল্লাহর মতই হয়ে উঠবে।” স্ত্রীলোকটি যখন বুঝলেন যে, গাছটার ফলগুলো খেতে ভাল হবে এবং সেগুলো দেখতেও সুন্দর আর তা ছাড়া জ্ঞান লাভের জন্য কামনা করবার মতও বটে, তখন তিনি কয়েকটা ফল পেড়ে নিয়ে খেলেন। সেই ফল তিনি তাঁর স্বামীকেও দিলেন এবং তাঁর স্বামীও তা খেলেন।” (পয়দায়েশ ৩ : ১–৬)।
মসীহ হলেন খোদার পাকরূহ, যিনি মানবরূপ ধারণ করে ভূপৃষ্টে করেছেন আগমন। তিনি পথহারা লোকদের পথের সন্ধান দিয়েছেন। তাইতো তিনি দাবী করেছেন, আমিই পথ, যে আমার পথে চলে সে কখনোই অন্ধকারে হোচট খাবে না। মসীহ হলেন জীবন অর্থাৎ অনন্ত জীবন, যার মধ্যে মিথ্যার ছায়াটুকু পর্যন্ত নেই। খোদার মনোনীত মানব জীবন থাকবে মসীহের মত পূতপবিত্র, নূরে পরিপূর্ণ, যে ব্যবস্থা সুসম্পন্ন করেছেন মসীহ অতীব চুড়ান্ত মূল্যে, স্বীয় প্রাণের দামে। তিনি সেবা পেতে আসেন নাই বরং সেবা করার জন্যই এসেছেন। “মনে রেখো, ইবনে–আদম সেবা পেতে আসেন নি বরং সেবা করতে এসেছেন এবং অনেক লোকের মুক্তির মূল্য হিসাবে তাদের প্রাণের পরিবর্তে নিজের প্রাণ দিতে এসেছেন।” (মথি ২০ : ২৮)।
গুনাহগার ব্যক্তি যখন অনুতপ্ত হয়ে মাবুদের কাছে পানাহ চায়, মানুষকে মুক্তপাপ করার জন্য মসীহ যে কোরবানি দিয়েছেন উক্ত কোরবানি নিজের কোরবানি হিসেবে বিশ্বাসপূর্বক বরণ করে নেয়, সাথে সাথে মসীহ তাকে ধারণ করেন এবং স্নাতশুভ্র করে খোদার সন্তান খোদার হাতে তুলে দেন। নাজাত প্রাপ্ত ব্যক্তি সম্মান ও বিশেষ উপাধি লাভ করেন এবং খোদার সমতলে সমাসীন করেন নেন। “ঈসা মসিহের মধ্যে কোন গুনাহ ছিল না; কিন্তু আল্লাহ আমাদের গুনাহ তাঁর উপর তুলে দিয়ে তাঁকেই গুনাহের জায়গায় দাঁড় করালেন, যেন মসিহের সংগে যুক্ত থাকবার দরুন আল্লাহর পবিত্রতা আমাদের পবিত্রতা হয়।” (২করিন্থীয় ৫ : ২১)।
কেবল একাধিক বস্তু বা দ্রব্যের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট নাম বা নাম্বারের প্রয়োজন পড়ে। খোদা তো মাত্র একজন, তাই তার আবার নামের কোনো প্রয়োজন পড়ে কি করে। তারপর মসীহের উপর বিশ্বাস স্থাপনের মাধ্যম যে সকল ব্যক্তি লাভ করে নতুন জন্ম তারাও হয়ে গেল একক দল বা গোত্র, যাদের স্থানীয় ভাষায় একটা নাম দেয়া চলে। যেমন নূরের সন্তান বা আলোর সন্তান, সত্য পথের পথিক ইত্যাদি। মসীহের সাথে যুক্ত হওয়া ব্যক্তির শারীরিক কোনো পরিবর্তন ঘটে না, তার পরিবর্তন হয় মনোভাবের, চিন্তন প্রকৃয়ায়, ধ্যান–মননে এবং বিশ্বাসে। খোদা নিজেই তার কলুষিত হৃদয় পরিবর্তন করে সেখানে তাঁর স্বীয় হৃদয় স্থাপন করে দেন। “তখন তোমাদের চারপাশের বেঁচে থাকা জাতিরা জানবে যে, আমি মাবুদই ভাংগা জায়গা আবার গড়েছি এবং পতিত জায়গায় আবার গাছ লাগিয়েছি। আমি মাবুদই এই কথা বলেছি এবং আমি তা–ই করব” (ইহিস্কেল ৩৬ : ২৬)। মানবরূপী মসীহ মানুষের মধ্যে ৩৩ বৎসর জীবন–যাপন করে বিশ্বের কাছে খোদার মনোনীত পূতপবিত্র মানুষের প্রকৃত ও চমৎকার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন, যেন বর্তমানে মসীহিগণ তাঁর মত জীবন–যাপন করে চলেন।
প্রকৃত সুসমাচার হলো আপনার আমার জীবন আদর্শ, মানুষ যেন চিন্তা করে বুঝতে পারে, এ পরিবর্তন কেমন করে সম্ভব হলো। “শামুয়েলের কাছ থেকে চলে যাবার উদ্দেশ্যে তালুত ঘুরে দাঁড়াতেই আল্লাহ তাঁর মন বদলে দিলেন। সেই দিনই চিহ্ন হিসাবে বলা ঘটনাগুলো ঘটল। তালুত ও তাঁর চাকর গিরিয়াতে পৌছালে এক দল নবীর সংগে তাঁদের দেখা হল। তখন আল্লাহর রূহ তালুতকে সম্পূর্ণভাবে নিজের বশে আনলেন, আর তাতে তিনি ঐ নবীদের মাঝখানে গিয়ে আল্লাহর দেওয়া কথা বলতে লাগলেন। যারা তালুতকে আগে থেকেই চিনত তারা তাঁকে নবীদের সংগে আল্লাহর দেওয়া কথা বলতে দেখে একে অন্যকে বলতে লাগল, কীশের ছেলের এ কি হল? তালুতও কি তবে নবীদের মধ্যে একজন। তাতে সেখানকার একজন লোক বলল, কিন্তু এরা কাদের ছেলে? সেজন্য তালুতও কি নবীদের একজন? এই কথাটা চলতি কথা হয়ে উঠল” (১শামুয়েল ১০ : ৯–১২)।
মসীহের সাথে যুক্ত ব্যক্তি পাকরূহের নিয়ন্ত্রণে হয়ে থাকে পরিচালিত। যেমন মসীহ পিতার পক্ষেই সদা–সর্বদা কথা বলতেন। “কারণ আমি তো নিজে থেকে কিছু বলি নি, কিন্তু যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন সেই পিতা নিজেই আমাকে হুকুম দিয়েছেন কি কি বলতে হবে।” (ইউহোন্না ১২ : ৪৯)। কেননা মসীহ এবং বেহেশতি পিতা হলেন এক ও অভিন্ন। একইভাবে পাকরূহ একই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করার জন্যই প্রত্যেকটি বিশ্বাসীর মন–মনন তথা হৃদয় জুড়ে নিয়ত করেন বসবাস। আমরা যা পাব তার অগ্রিমাংশ হলো পাকরূহ। তিনি প্রত্যেকটি বিশ্বাসী ব্যক্তিকে নিয়ত করে পরিচালনা।