বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে একটি ভাঙ্গা পুলের কারণে চরম দুর্ভোগে পোহাচ্ছে তিন ইউনিয়নের মানুষ। শত শত স্কুল কলেজ মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা পড়ছে বিপাকে। তাকে ক্লাস বন্ধ হওয়ার উপক্রম। পুলটি সংস্কার কিংবা নির্মাণে নেই উদ্যোগ। উপজেলার বারইখালী ইউনিয়নের উত্তর সুতালড়ী গ্রামের শেখপাড়াগামী পূর্ব কাটাখালের ওপর নির্মিত এ কাঠের পুলটি। এ খালের দুই পাড়ে উপজেলার বৃহত্তম দুই ইউনিয়ন। বারইখালী– বহরবুনিয়া সংযোগ এ পুলটি অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ। এ পুল দিয়ে এ দুই ইউনিয়ন ছাড়াও আরও একটি বৃহত্তম ইউনিয়ন জিউধরার লোক যাতায়াত করে।
কিন্তু পুলটি দীর্ঘদিন যাবৎ ভেঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পুলটিতে পুনরায় ২০ ফুট জুড়ে নেই কোনো কাঠের পাটাতন। ভেঙ্গে গেছে, হারিয়ে গেছে কিংবা পর্যায়ক্রমে তক্তাগুলো বিনষ্ট হয়ে গেছে। খাম্বা নেই, রেলিং নেই। যা আছে তা মরিচা পড়ে নড়বড়ে হয়ে গেছে। অনেক লোহার খাম্বা চুরি হয়ে গেছে। স্থানীয়রা বাঁশ, সুপারি গাছ দিয়ে নামমাত্র পারাপারের চেষ্টা করছে। শিশু, মহিলা কিংবা বয়স্করা এ পুল দিয়ে যাতায়াত করতে পারে না।
বিশেষ করে, এখানের ১১০ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এস.বি. আদর্শ বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও বিএস ওয়াহেজিয়া দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন। শিক্ষক ও অভিভাবকদের বড় ধরনের দুর্ঘটনা আশঙ্কায় ভুগছে। তিন ইউনিয়নের মানুষ উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন এ ঝুঁকিপূর্ণ পুল পাড়িয়ে। পাশাপাশি ঘষিয়াখালী, ফুলহাতা, ফকিরবাড়ি, শনিরজোড়, কলেজবাজার, কালিবাড়ি বাজার, সিরাজ মাস্টার বাজার, বহরবুনিয়া আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও স্থানীয় কমিউনিটি ক্লিনিকে যাওয়ার জন্য এ পুলটিই একমাত্র ভরসা। এলাকাবাসী জানান, ২০২৩ সালের মে মাসে পুলের একটি অংশ ভেঙে গেলে বাঁশ ও সুপারি গাছ দিয়ে অস্থায়ী সাঁকো তৈরি করা হয়েছে।
সেটাও বর্তমানে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। প্রায় ১৫ বছর আগে নির্মিত এ কাঠের পুলটি নামমাত্র মেরামত হলেও আজ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গভাবে পুনর্নির্মাণ হয়নি। ইউপি সদস্য মো. নুরুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, পুলটির পুনর্নির্মাণের জন্য ইউনিয়ন পরিষদে প্রস্তাব করা হয়েছিল। তবে এখনো কোনো বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি আমাদের জানা আছে। জেলা পরিষদে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পাওয়া গেলে টেন্ডার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে। এখানে পুল সংস্কার কিংবা পুল পুনর্নির্মাণ নয়। গুরুত্ব বিবেচনায় পাকা ব্রিজ নির্মাণ জরুরী বলে স্থানীরা জানান।