পারিবারিক বিরোধের জেরে পাবনার সাঁথিয়ায় ছেলে ও পুত্রবধূর হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কাঞ্চন খাতুন (৭৫) নামের এক নারী। শনিবার বিকেলে উপজেলার ধোপাদহ ইউনিয়নের হাঁপানিয়া রামচন্দ্রপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। শুরুতে ওই বৃদ্ধাকে মাটিতে ফেলে মারতে থাকেন পুত্রবধূ সোনালি খাতুন (৪০), পরে তার সঙ্গে যোগ দেন স্বামী নজরুল ইসলামও (৪৫)। একপর্যায়ে নজরুল মাকে উঁচুতে তুলে আছাড় মারেন। এই নির্যাতনের ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সাঁথিয়া থানা পুলিশ ও সেনা ক্যাম্পের সদস্যদের যৌথ অভিযানে সোনালি–নজরুল দম্পতিসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়। অন্যরা হলেন– সোনালির ভাই মনিরুজ্জামান (৪২); বোন ফরিদা খাতুন (৩৮) ও মুরশিদা খাতুন (৩৬)।
এ ঘটনায় কাঞ্চন খাতুনের মেয়ে আম্বিয়া খাতুনের মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ রোববার তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। আম্বিয়া খাতুনের ভাষ্য, ‘পারিবারিক বিষয় নিয়ে কিছু বিরোধ আছে। আমার মায়ের নামে কে যেন ভাবির (সোনালি) কাছে মিথ্যা বলেছেন, মা নাকি তাকে (সোনালি) গালমন্দ করেছেন। সে কথা শুনেই শনিবার বিকেলে ভাবি সরাসরি মাকে মাটিতে ফেলে মারধর করে। পরে আমার ভাইও এসে মাকে মারধর করে।’ শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তারা কাঞ্চন খাতুনকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন জানিয়ে এই নির্যাতনের বিচার দাবি করেন তিনি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, প্রথমে কাঞ্চন খাতুনকে মাটিতে ফেলে মারধর করছেন পুত্রবধূ সোনালি। খানিক পরই ছেলে নজরুলকে মায়ের গলাটিপে ধরতে দেখা যায়। একপর্যায় তিনি (নজরুল) মাকে উঁচুতে তুলে মাটিতে আছড়ে ফেলেন। সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনিসুর রহমান বলেন, বৃদ্ধ মাকে মারধরের ঘটনায় ছেলে ও তার স্ত্রীসহ পাঁচজনকে আটক করা হয়।
ভুক্তভোগীর মেয়ের মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে রোববার পাবনা আদালতে পাঠিয়েছেন তারা। এ বিষয়ে সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিজু তামান্নার ভাষ্য, ঘটনাটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে প্রশাসনের নজরে আসে। থানা পুলিশের সদস্যরা শনিবার সন্ধ্যায় ঘটনাস্থলে গেলে স্থানীয় কিছু লোক সমস্যার সৃষ্টি করেন। পরে সেখানে যান সেনাবাহিনীর সদস্যরা। তাদের সহায়তায় অভিযুক্তদের আটক করা হয়। তাদের সেনা ক্যাম্পে জিজ্ঞাসাবাদের পর থানায় হস্তান্তর করা হয়।