পহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার পর চার রাত ধরে ভারত–পাকিস্তান সীমান্তে গুলির লড়াই চলছে। কাশ্মীরে ভারত পাকিস্তান সীমান্তের বিভিন্ন সেক্টরে পরপর চার রাত ভারতীয় ও পাকিস্তানি সেনার মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা চলেছে। তবে ছোট আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করা হয়েছে। ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তানই বিনা প্ররোচনায় গুলি চালাল শুরু করেছে। ভারতীয় সেনারা তার জবাব দিয়েছে। রবিবার ও সোমবারের মধ্যে দিবাগত রাতেও গুলি চলেছে পুঞ্চ ও কুপওয়ারাতে। এবার এই প্রথম পুঞ্চে গুলি চলল। ভারতীয় সেনার অভিযোগ, পুঞ্চে যুদ্ধবিরতি ভেঙে গুলি চালিয়েছে পাকিস্তানের সেনা। কুপওয়ারাতেও তারা গুলি চালায়। ভারতীয় সেনার পক্ষ থেকে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, পুঞ্চ ও কুপওয়ারাতে বিনা প্ররোচনায় পাকিস্তানের সেনা প্রথমে গুলি চালায়। ভারতীয় সেনা তার জবাব দিয়েছে। পাকিস্তান এখানে যুদ্ধবিরতি লংঘন করেছে। এই গুলিচালনার ফলে কেউ হতাহত হননি। ডয়চে ভেলে বাংলার প্রতিনিধি স্যমন্তক ঘোষ উরি গেছিলেন। তিনি জানিয়েছেন, উরি হচ্ছে শ্রীনগর থেকে ১০৭ কিলোমিটার দূরে। উরির তিনদিকে পাকিস্তানের সীমানা। সেখানে সীমান্তের গ্রামগুলোতে মানুষ আছে, কিন্তু কোনো বেসামরিক মানুষকে সেখানে যেতে দেয়া হচ্ছে না। এখানেই আছে আমন ব্রিজ, যেখান দিয়ে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যাতায়াত করা যায়। সেই ব্রিজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। উরিতে নদীর ওপর থেকেই উঠে গেছে কাঁটাতারের বেড়া। উরিতে সেনার গতিবিধি অনেক বেড়েছে। সেনার তরফ থেকে বলা হয়েছে, দিনের বেলায় কোনো গোলাগুলি হচ্ছে না। রাত বারোটার পর হচ্ছে। গুলিতে কেউ হতাহত হননি। সীমন্তের একেবারে কাছের গ্রামে যারা থাকেন তারা বলছেন, ২০১৬ সালে সীমান্তে ভয়ংকর গোলাগুলি চলেছিল, তখন তাদের অনেককে এখান থেকে সরিয়ে উরি শহরে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা আবার আশঙ্কা করছেন, এবারও সেরকম পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। ২০১৬ সালে যখন কামানের গোলা পড়ে, তখন অনেকের বাড়ি ভেঙে যায়। স্থানীয় বাসিন্দা মহম্মদ ইশফাক ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ‘এখানে অনেকদিন ধরে বাংকার তৈরির দাবি করা হয়েছে। কিন্তু যথেষ্ট বাংকার নেই। তাই মাঝরাতে গোলাগুলি শুরু হলে তারা বাংকারে যেতে পারেন না।’ উরি শহরের মানুষেরও বাংকার নিয়ে ক্ষোভ রয়েছে। তারাও দীর্ঘদিন ধরে বাঙ্কার তৈরির দাবি করছেন।