গত বছর এই সময়ে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি ছুঁয়েছিল। এ বছর এখনও ৪০ ডিগ্রি না পেরোলেও ভ্যাপসা গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা সাধারণ মানুষের। তীব্র গরমে মানুষ, পশুপাখি সবাই অতিষ্ঠ। কাঠফাটা রোদ্দুরে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে গায়ে ফোসকা পড়ার মতো অনুভূতি হচ্ছে। রাজধানীতে গতকাল শনিবার আগের দিনের চেয়ে তাপমাত্রা কমেছে ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, তবে কমেনি গরমের কষ্ট। রাজশাহী বিভাগ এবং দিনাজপুর, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, বাতাসে আর্দ্রতা বা জলীয় বাষ্প বেড়ে যাওয়ায় গরমে অস্বস্তিকর অনুভূতি বেড়ে গেছে। তবে স্বস্তি আসতে পারে আগামী দু–একদিনের মধ্যেই। হতে পারে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে ৩৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা নথিবদ্ধ হয় ৩৫ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজশাহীতে তীব্র তাপদাহে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে। রোদের তাপে মানুষ ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। খেটে খাওয়া মানুষ অল্প পরিশ্রমেই কাহিল হয়ে পড়ছেন। চলমান তাপমাত্রাকে আবহাওয়া অফিস মাঝারি তাপদাহ উল্লেখ করছে। তবে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকায় মানুষ ঘেমে কাহিল হয়ে পড়ছেন। রিকশাচালক আবদুর রহমান বলেন, কাজ করতে পারছি না। বের হলেই কাহিল হয়ে পড়ছি। পিপাসা লাগছে।
রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রহিদুল ইসলাম জানান, গত বছর এপ্রিলে তাপমাত্রা ৪৩ ডিগ্রিতে উঠেছিল। তখন বাতাসের আর্দ্রতা কম ছিল। শনিবার ৩৮ দশমিক ৩ ডিগ্রিতে তাপমাত্রা উঠলেও বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৫২ শতাংশ। এ কারণে মানুষের শরীরে ঘাম ঝরেছে। ভ্যাপসা গরম অনুভূত হয়ে কষ্ট হচ্ছে। চুয়াডাঙ্গায় টানা কয়েক দিন ধরে চলছে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ। তীব্র গরমে নাকাল হয়ে পড়েছে জেলার সাধারণ মানুষ। সবচেয়ে বেশি কষ্টে রয়েছেন খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষ। তাপপ্রবাহের প্রভাব পড়ছে শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থদের ওপরও। শনিবার বিকেল ৩টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ খন্দকার হাফিজুর রহমান বলেন, রোববার (আজ) পর্যন্ত তাপপ্রবাহ থাকবে। এরপর তাপমাত্রা কমে আসবে। তখন সারাদেশেই কমবেশি বৃষ্টি হবে। আবহাওয়াবিদ মুহাম্মদ আবুল কালাম মল্লিক বলেন, মে মাসে সাধারণত ১৩টির মতো কালবৈশাখী হয়। এবার আবহাওয়ার যে গতিপ্রকৃতি দেখছি, সে অনুযায়ী এবার ১২ থেকে ১৩টির মতো কালবৈশাখী হতে পারে। তা যদি হয় তবে এবার একটানা তীব্র তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা কম। তবে তাপমাত্রা যতটা স্বাভাবিক, তা–ই থাকবে।