পাঁচটি আরব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমি থেকে জোরপূর্বক উচ্ছেদের আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে একটি যৌথ বিবৃতি জারি করেছেন। গত শনিবার জারি করা বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের বহিষ্কারের আহ্বানের বিরুদ্ধে মিসর ও জর্ডানের ঐক্যবদ্ধ অবস্থান তুলে ধরা হয়েছে। মিসর, জর্ডান, সউদী আরব, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং আরব লীগের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং কর্মকর্তারা বলেছেন যে, ট্রাম্পের প্রস্তাবিত পদক্ষেপ এ অঞ্চলে স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ, সংঘাত ছড়িয়ে দেবে এবং শান্তির সম্ভাবনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা ফিলিস্তিনিদের অবিচ্ছেদ্য অধিকারের সাথে আপস করার [যেকোনো প্রচেষ্টা] প্রত্যাখ্যান করছি, তা বসতি স্থাপন কার্যক্রম, উচ্ছেদ বা জমি সংযুক্তির মাধ্যমে হোক বা জমি তার মালিকদের কাছ থেকে খালি করার মাধ্যমে হোক… যেকোনো রূপে হোক বা যেকোনো পরিস্থিতিতে বা ন্যায্যতার ভিত্তিতে হোক’। ট্রাম্প গত সপ্তাহে বলেছিলেন যে, মিসর ও জর্ডানের উচিত গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের গ্রহণ করা, যাকে তিনি ‘ধ্বংসস্থল’ বলে অভিহিত করেছেন ১৫ মাস ধরে ইসরাইলি বোমাবর্ষণের পর যা তার ২.৩ মিলিয়ন মানুষের বেশিরভাগকে গৃহহীন করে তুলেছিল। এ অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান মিত্র মিসর এবং জর্ডান বারবার ট্রাম্পের গাজাকে ‘পরিষ্কার’ করার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। জর্ডান কয়েক মিলিয়ন ফিলিস্তিনিদের আবাসস্থল, যখন কয়েক হাজার ফিলিস্তিনি মিসরে বাস করে।
মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল–সিসিও বুধবার ট্রাম্পের ধারণা প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং বলেছেন যে, মিসরীয়রা তাদের অসম্মতি প্রকাশ করতে রাস্তায় নেমে আসবে। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনি জনগণকে তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা একটি অবিচার যা আমরা অংশগ্রহণ করতে পারি না’। তবে বৃহস্পতিবার ট্রাম্প এ ধারণাটি পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, ‘আমরা তাদের জন্য অনেক কিছু করি এবং তারাও একই কাজ করবে’, স্পষ্টতই মিসর এবং জর্ডানকে সামরিক সহায়তাসহ প্রচুর মার্কিন সহায়তার কথা উল্লেখ করে।
বিশ্লেষকরা বলেছেন যে, ট্রাম্পের প্রস্তাব জাতিগত নির্মূলের শামিল হবে। ওয়াশিংটন ডিসির আরব সেন্টারের ফিলিস্তিন/ইসরাইল প্রোগ্রামের প্রধান ইউসুফ মুনাইয়ার এ সপ্তাহের শুরুতে আল জাজিরাকে বলেছিলেন যে, ট্রাম্পের ‘অপমানজনক’ বক্তব্যের নিন্দা করা উচিত, কারণ এটি সমস্ত নিয়ম এবং মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করে। সূত্র : আল–জাজিরা।