এবাদত বন্দেগী ও ভক্তি–শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করার জন্য সর্বাগ্রে যা করণীয় তা হলো পূর্ব পরিচিতি, সুসম্পর্ক, আত্মীয়তা তথা উভয়ে মিলে একাত্মতা ও ঐকমত্য স্থাপিত, যা থাকবে আজীবন বলবত। স্বাভাবিকভাবে চলার পথে একজন অপরিচিত ব্যক্তিকে হঠাৎ করে সালাম ঠুকে দিলে আগন্তুক অপ্রতিভ হতে বাধ্য। আর জানা শোনা ব্যক্তিকে বুকে জড়িয়ে নিলেও আপত্তিজনক কিছু হয় না। কালামপাকে পরিষ্কারর দেখা যায়, মানবজাতির সুনিপূণ নির্মাতা নিজের হাতে গড়া মানুষের সাথে পরিচিত হবার জন্য নিজের বিষয়ে ঘোষণা দিয়েছেন, “হে ইয়াকুব, যিনি তোমাকে সৃষ্টি করেছেন, হে ইসরাইল, যিনি তোমাকে তৈরী করেছেন, সেই মাবুদ এখন এই কথা বলছেন, “তুমি ভয় কোরো না, কারণ আমি তোমাকে মুক্ত করেছি। আমি তোমার নাম ধরে ডেকেছি, তুমি আমার। তুমি যখন পানির মধ্য দিয়ে যাবে তখন আমি তোমার সংগে সংগে থাকব। যখন তুমি নদীর মধ্য দিয়ে যাবে, তখন সেগুলো তোমাকে ডুবিয়ে দেবে না; তুমি যখন আগুনের মধ্য দিয়ে যাবে, তখন তুমি পুড়বে না; আগুনের শিখা তোমার গায়ে লাগবে না;” “আমি, আমিই আমার নিজের জন্য তোমার অন্যায় মুছে ফেলি; আমি তোমার গুনাহ্ আর মনে আনব না” (ইশাইয়া ৪৩ : ১–২, ২৫)।
একটি নবজাতক শিশু গর্ভধারিনী মাতাকে চিনতে বেশ সময় নেয়। মা কিন্তু যথাযথ মাতৃযত্ন দিয়ে শিশুটিকে বড় করে তোলে, আর তাই হলো প্রকৃত মাতৃত্ব। সমাজে যেমন অগণীত শিশু পাবেন, আবার অন্য দিকে মায়ের সংখ্যাও কম নয়। তাই বলে সকল শিশু যে সকল মাকে ভক্তিশ্রদ্ধা করবে তা কিন্তু প্রত্যাশিত নয়। যে শিশু যে মায়ের গর্ভে জাত হয়েছে, কেবল তেমন ক্ষেত্রে মায়ের উক্ত শিশুর প্রতি স্নেহ পুরোপুরিভাবে হয়ে থাকে কার্যকর। একইভাবে দেবতা ভক্তি অনুরূপ বাস্তবায়িত হতে বাধ্য। দেবতা রয়েছে অগণীত, অন্যপক্ষে ভক্তবৃন্দও পাবেন অজস্র; যে ভক্ত যে দেবতার কাছ থেকে হয়েছে উপকৃত, তার কাছে উক্ত দেবতা হয়ে থাকে পূজিত।
সুতরাং ভক্তি শ্রদ্ধা বা এবাদত বন্দেগীর ক্ষেত্রেও হৃদয়ের সাথে হৃদয়ের একাত্মতা অপরিহার্য্য। শুধু কেতাদুরস্থ জানাশোনা থাকলেই উভয়ের মধ্যে হার্দিক সম্পর্ক বা আত্মিয়তা গড়ে ওঠে না; চাই উভয়ের সাথে উভয়ের অস্থিমজ্জা তথা দেহ ও প্রাণের মত সম্পর্ক ও নির্ভরতা। যেমন প্রাণহীন দেহ ও দেহহীন প্রাণ পারে কি কর্মক্ষম হতে? খোদা প্রথম মানুষ আদম সৃষ্টি করলেন মাটি দিয়ে। শুধু মাটির দেহ কোন কাজের হবার নয়, কেবল তা পুড়ে ফেলা হয় অথবা কবর দেয় হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত দেহে প্রাণের সঞ্চার থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত উক্ত মানুষ মহামূল্যবান; যেই মুহুর্তে তার মধ্য থেকে প্রাণ বায়ু বেরিয়ে গেল অমনি তা হয়ে গেল মৃত অকার্যকর। খোদা তাই মাটির আদমের মধ্যে প্রাণবায়ু ফুঁকে দিলেন, অমনি আদম হলেন একজন প্রজ্ঞাপূর্ণ ব্যক্তি, আদম জাতির আদি পিতা।
আদমের সাথে খোদার আলাপচারিতা চলতো নিত্যদিন। পারষ্পরিক সম্পর্কে তারাই উভয়ে ছিলেন এক মানিক জোড়। অবশ্য আদমের অবাধ্যতার ফলে সেই মধুময় সম্পর্ক উল্টে গিয়ে আদম হয়ে দাড়ালো খোদাদ্রোহী ইবলিসের তাবেদার। আদম শুরু করে দিলেন এমন সব কাজকর্ম যাতে কেবল অন্যেরই ক্ষতি করা না, নিজেদেরও ক্ষতি ডেকে আনে। দৃষ্টান্ত হবে নিজের পায়ে নিজে কুঠারাঘাত করা।
পূতপবিত্র খোদার সাথে আর মধুময় সম্পর্ক রইল না, ফলে নরঘাতি কর্মকান্ড করে গোটা জীবন শেষ করে দিল। আদমের পুত্র কাবিল স্বীয় ভ্রাতা হাবিলকে কতল করে ধরাপৃষ্ট কলঙ্কিত করে তুলল। মানুষ প্রথম থেকেই পাপী, তা একজন দুইজন নয়, গোটা বিশ^বাসী পাইকারীহারে গুনাহগার। মানুষের কৃত আনুষ্ঠানিক ধার্মিকতা খোদার কাছে ঘৃণার বস্তু তুল্য, “আমরা প্রত্যেকে নাপাক লোকের মত হয়েছি আর আমাদের সব সৎ কাজ নোংরা কাপড়ের মত। আমরা সবাই পাতার মত শুকিয়ে গেছি, আমাদের গুনাহ্ বাতাসের মত করে আমাদের উড়িয়ে নিয়ে গেছে” (ইশাইয়া ৬৪ : ৬)।
আজকে আমাদের জেনে নিতে হবে, আমাদের আরাধ্য বা পূজিত মাবুদকে যিনি এক মহান পরিকল্পনা নিয়ে স্বীয় সুরতে, আপন প্রতিনিধি হিসেবে, মানুষ সৃষ্টি করেছে; অর্থাৎ প্রথম মানুষটি (আদম) হলো অবাধ্য, হারিয়ে ফেললো ঐশি আদর্শ। আদম বংশে এমন কোনো লোকের জন্ম হয়েছে কি যে কিনা থাকতে পেরেছে সম্পূর্ণ নিষ্পাপ, পূতপবিত্রতার দিক দিয়ে খোদার হুবহু প্রকাশ? কালামপাকে প্রমাণ রয়েছে, সকলে পাপ করেছে এবং খোদার গৌরব বিনাশ করেছে, “আর যেমন তারা আল্লাহকে নিজেদের জ্ঞানে ধারণ করতে সম্মত হয় নি, তেমনি আল্লাহ তাদের অনুচিত কাজ করতে গুনাহপূর্ণ মনের হাতে ছেড়ে দিয়েছেন। তারা সমস্ত রকমের অধার্মিকতা, নাফরমানী, লোভ, হিংসা ও পরশ্রীকাতরতায় পরিপূর্ণ। তারা হত্যা, ঝগড়া, ছল ও দুর্বৃত্তিতে পূর্ণ; তারা অন্যের বিষয় নিয়ে আলোচনা করে, অন্যের নিন্দা করে ও আল্লাহকে ঘৃণা করে। তারা বদমেজাজী, অহংকারী ও গর্বিত, মন্দ বিষয়ের উৎপাদক ও পিতা–মাতার অবাধ্য। তারা নির্বোধ, নিয়ম ভঙ্গকারী, হৃদয়হীন ও নির্দয়। তারা আল্লাহর এই বিচার জানত যে, যারা এরকম আচরণ করে, তারা মৃত্যুর যোগ্য। তবুও তারা সেরকম আচরণ করে, কেবল তা নয় কিন্তু যারা তা করে তাদের তারা অনুমোদনও করে” (রোমীয় ১ : ২৮–৩২)।
আমরা আর একবার আলোকপাত করবো মানবজাতির সর্বপ্রথম খোদাদ্রোহী কর্মের দিকে, যা ঘটেছিল খোদার নয়ণের মণিতুল্য সৃষ্ট মানবের দ্বারা, যে কিনা খোদার দুষমন অভিশপ্ত ইবলিসের কুটচালে ধরা খেল। খোদার চেয়ে তার কাছে সুচতুর ইবলিসকে অধিক যৌক্তিক মনে হয়েছিল বিধায় আদম খোদার আজ্ঞা লঙ্ঘন করে ইবলিসের অনুসারী হলো। অবাধ্যতার তাৎক্ষণিক প্রতিফল প্রকাশ পেল ভ্রাতৃঘাতি যুদ্ধের মাধ্যমে, যা হলো কাবিল তার সহোদর ভাই হাবিলকে খুন করা। মানব নিধনের জন্য যতপ্রকার ফন্দি–ফিকির রণডংকা অদ্যবধি বেজে চলছে এবং যারাই এহেন অপকর্মের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে, অতীতে যুক্ত ছিল এবং অনাগত ভবিষ্যতে থাকবে, তারা অবশ্যই হলো অভিশপ্ত ইবলিসের সহযোদ্ধা; আর ইবলিসের একক ব্রত হলো খোদার মহিমা বিনাশ এবং মানবজাতিকে দিয়ে নিজের হীন ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করা।
আদমের বংশজাত সকলেই যেক্ষেত্রে পাপাচারে লিপ্ত, খোদার বহিপ্রকাশ ঘটাতে কেউই আর উপযুক্ত থাকলো না, সেক্ষেত্রে মহান খোদার মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য তিনি নিজেই এক অভাবিত ব্যবস্থা কার্যকর করলেন, আর তা হলো স্বীয় পাকরূহ মানুষের মধ্যে মানুষের অবয়বে জগতে প্রেরণ করলেন, যেন তিনি প্রকাশ করতে পারেন খোদার ঐশি গুনাবলী।
মসীহ ঈসা রূহুল্লাহ হলেন বাতেনী রূহের (খোদার) জাহেরী প্রকাশ। যেহেতু তিনি পাকরূহের মানবরূপ ধারণ করলেন, তাই তিনিই হলেন একক বেগুনাহ ব্যক্তি। মানবরূপে প্রকাশিত পাকরূহ, খোদাবন্দ হযরত ঈসা মসীহ জগতের পাপের কাফফারা স্বীয় রক্তের মূল্যে করলেন পরিশোধ, ফলে যারাই মসীহের এই কোরবাণী নিজেদের পাপের কোরবানী হিসেবে কবুল করে নিল তারাই খোদার রহমতে হয়ে গেল মুক্তপাপ, খোদা তাদেরকে এক নতুন সৃষ্টি হিসেবে গ্রহন করে নিলেন।
খোদার পরিচয় পরিপূর্ণভাবে আমরা জানতে পারি মসীহের মাধ্যমে, মসীহ যেক্ষেত্রে অভয়বাণী দিয়েছেন, “যে আমাকে দেখেছে সে খোদাকে দেখেছে; আমি আর খোদা এক, “ফিলিপ ঈসাকে বললেন, “হুজুর, পিতাকে আমাদের দেখান, তাতেই আমরা সন্তুষ্ট হব।” ঈসা তাঁকে বললেন, “ফিলিপ, এতদিন আমি তোমাদের সংগে সংগে আছি, তবুও কি তুমি আমাকে জানতে পার নি? যে আমাকে দেখেছে সে পিতাকেও দেখেছে। তুমি কেমন করে বলছ, ‘পিতাকে আমাদের দেখান’? তুমি কি বিশ্বাস কর না যে, আমি পিতার মধ্যে আছি আর পিতা আমার মধ্যে আছেন? যে সব কথা আমি তোমাদের বলি তা আমি নিজে থেকে বলি না, কিন্তু পিতা, যিনি আমার মধ্যে আছেন, তিনিই তার কাজ করছেন।” (ইউহোন্না ১৪ : ৮–১০)।
কালামের অত্র আয়াতের তাৎপর্য হলো, খোদা যেমন রূহ, যিনি সম্পূর্ণ সত্য, প্রেম, পবিত্রতা ও ক্ষমার আঁধার, মানবরূপী মসীহও গোটা জীবন (৩৩ বৎসর) সত্য, প্রেম, পবিত্রতা, ত্যাগ ও ক্ষমায় জীবন যাপন করে আলোর বহিপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। তিনি বলেছেন, বাস্তবে তিনি হলেন জগতের নূর, যে কেউ তাকে বিশ্বাস করে এবং নিজেকে তাঁর হাতে তুলে দেয়, সেই পরিণত হয় জগতের জীবন্ত নূরে।
খোদার পরিচয় দিতে গিয়ে তিনি বলেছেন, খোদা হলেন রূহানী সত্তা। সুতরাং যারাই তাঁর আরাধণা করবে, অবশ্যই তাদের রূহে ও সত্যে খোদার এবাদত করতে হবে, “আল্লাহ রূহ; যারা তাঁর এবাদত করে, রূহে ও সত্যে তাদের সেই এবাদত করতে হবে” (ইউহোন্না ৪ : ২৪)।
এবার একটি মজার কথা বলবো, মসীহের উপর ঈমান স্থাপনকারী ব্যক্তি হলো জীবন্ত এবাদত গৃহতুল্য। মনে রাখতে হবে, মসীহ নিজের পূতপবিত্র রক্তের মূল্যে এমন জীবন্ত ঈমানদারদের ক্রয় করে নিয়েছেন, “আপনারা নিজেদের সম্বন্ধে সতর্ক থাকুন, আর পাকরূহ যে ঈমানদার দলের ভার পরিচালক হিসাবে আপনাদের উপর দিয়েছেন তাদের সম্বন্ধেও সতর্ক থাকুন। রাখাল যেমন তার ভেড়ার পালের দেখাশোনা করে ঠিক তেমনি করে আপনারাও ইমাম হিসাবে আল্লাহর জামাতের দেখাশোনা করুন। আল্লাহ সেই জামাতকে নিজের রক্ত দিয়ে কিনেছেন” (প্রেরিত ২০ : ২৮)। মসীহের পবিত্র রক্ত ক্ষরিত হয়নি ইটসিমেন্ট কাঠফাট তথা গৃহ নির্মাণ সামগ্রী ক্রয় করার জন্য; বরং পতীত আদম বংশের হারিয়ে যাওয়া ও ইবলিসের কব্জাবন্দী লোকদের অবমুক্ত করার জন্য এবং পাপের অভিশাপ থেকে নিষ্কৃতি দানের জন্য তিনি নিজেকে কোরবানি দিয়েছেন, “তবে আমরা কি বলবো? অ–ইহুদিরা, যারা ধার্মিকতার জন্য কঠোরভাবে চেষ্টা করতো না, তারা ধার্মিকতা লাভ করেছে, ঈমানের মধ্য দিয়ে ধার্মিকতা লাভ করেছে” (রোমীয় ৯ : ৩০) “তাহলে আমাদের পূর্বপুরুষেরা বা আমরা যে বোঝা বইতে পারি নি সেই বোঝা অ–ইহুদী ঈমানদারদের কাঁধে তুলে দিয়ে কেন আপনারা আল্লাহকে পরীক্ষা করবার চেষ্টা করছেন? আমরা বিশ^াস করি যে, হযরত ঈসার রহমতে অ–ইহুদী ঈমানদারেরা যেমন নাজাত পেয়েছে তেমনি আমরাও নাজাত পেয়েছি” (প্রেরিত ১৫ : ১০–১১), “ কিন্তু তবুও আমরা এই কথা জানি যে, শরীয়ত পালনের জন্য আল্লাহ মানুষকে ধার্মিক বলে গ্রহণ করেন না, বরং ঈসা মসিহের উপর ঈমানের জন্যই তা করেন। সেজন্য আমরাও মসিহ ঈসার উপর ঈমান এনেছি, যেন শরীয়ত পালনের জন্য নয় বরং মসিহের উপর ঈমানের জন্যই আমাদরে ধার্মিক বলে গ্রহণ করা হয়; কারণ শরীয়ত পালন করবার ফলে কাউকেই ধার্মিক বলে গ্রহণ করা হবে না” (গালাতীয় ২ : ১৬), “আমাকে মসিহের সংগে ক্রুশের উপরে হত্যা করা হয়েছে। তাই আমি আর জীবিত নই, মসিহই আমার মধ্যে জীবিত আছেন। এখন এই শরীরে আমি যে জীবন কাটাচ্ছি তা ইবনুুল্লাহর উপর ঈমানের মধ্য দিয়েই কাটাচ্ছি। তিনি আমাকে মহব্বত করে আমার জন্য নিজেকে দান করেছিলেন। আল্লাহর এই রহমতকে আমি বাতিল করব না, কারণ মানুষ যদি শরীয়ত পালনের মধ্য দিয়েই আল্লাহর গ্রহণযোগ্য হতে পারে তবে মসিহ মিথ্যাই মরেছিলেন” (গালাতীয় ২ : ২০–২১)।
যদিও বিষয়টি বহুবার আলোচিত হয়েছে, তথাপি পুনরায় বলতে হয়, কোনো গুনাহগার নিজের ধার্মিকতার বিনিময়ে নিজেকে মুক্তপাপ করার ক্ষমতা আদৌ রাখে না; ধর্মের অযুহাতে যে যা কিছু চর্চা করে চলছে তা যেমন দর্শকদের ধোকা দেয়া আর নিজেকে আইনানুগ ব্যক্তি হিসেবে সমাজে দাঁড় করানোর বৃথা প্রচেষ্টা। বর্তমান সমাজে ধর্মের নামে যে সকল অনুশীলন করা হচ্ছে, এবং যারাই সাধারণ জনতাকে প্রেশণা দিয়ে ফিরছে, বাস্তবে নরমেধযজ্ঞের পিছনে তাদের কি কোনো ভূমিকা নেই? আদম থেকে শুরু করে অদ্যাবধি মানুষের হাতে মানুষ কচুকাটা হচ্ছে। ব্যক্তি যদি পূতপবিত্র খোদার সাথে পরিচিত ও যুক্ত হতো, তবে তেমন ব্যক্তির দ্বারা নগর জনপদ ত্রাশমুক্ত থাকতো, পাড়া মহল্লা থেকে পালিয়ে বেরানোর কোনো প্রয়োজনই ছিল না।
সত্যিকারার্থে কেউ যদি খোদার বন্দেগী করতে চায় তবে সে যেন নির্জনে চলে যায়, নিশ্চিতভাবে খোদার উপস্থিতি রয়েছে সর্বত্র। খোদার সেবার অযুহাতে আপনাকে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থের পিছু ছুটতে হবে না। তবে যতদিন রক্তমাংসের দেহে জীবিত থাকবেন ততদিন অন্বজলের প্রয়োজনীয়তা কেউ অস্বীকার করছে না। কালামে সে কথা পরিষ্কারভাবে বর্ণীত রয়েছে, আমাদের যা কিছু আছে তাতে সন্তুষ্ট থাকতে হবে। পিতা সদা–সর্বদা অতন্দ্র নেত্রে তাকিয়ে আছেন, আমাদের প্রতি রয়েছেন যত্নবান। পুনরায় বলি, মসীহ স্বীয় পূতপবিত্র রক্তের মূল্যে আমাদের ক্রয় করে নিয়েছেন, যদি আপনার অনড় বিশ্বাস এবং বাস্তব নির্ভরতা থাকে, তবে আপনি খোদার মহিমায় অবশ্যই হয়ে উঠেছেন এক নতুনসৃষ্টি; আপনাকে পরিবর্তন করা হয়েছে দুনিয়ার নূরে; যেমন একটি প্রজ্জ্বলিত মোম আপত্তি না করে শেষ অস্তিত্ব পর্যন্ত জ্বলে জ্বলে চারপাশের অন্ধকার দূর করে চলে। প্রত্যেকটি ব্যক্তির দ্বারা এমন সেবা হোক, খোদা তাই প্রত্যাশা করেন।