কোটাবৈষম্য নিরসনে সংসদে আইন পাশের লক্ষ্যে জরুরি অধিবেশন আহ্বান এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।
এ উপলক্ষ্যে আজ রোববার বেলা ১১টায় বঙ্গভবন অভিমুখে গণপদযাত্রা ও রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করবেন আন্দোলনকারীরা।
এছাড়া অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান একই দাবিতে নিজ নিজ জেলা প্রশাসক কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা নিয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেবে। শনিবার সন্ধ্যার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।
সংসদে আইন পাশ করে কোটার সমস্যা সমাধান না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। তবে জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে তারা আপাতত অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচিতে যাচ্ছেন না।
এদিকে কোটা বহাল রাখার দাবিতে যশোরে বীর মুক্তিযোদ্ধারা সংবাদ সম্মেলন করেছেন এবং ঝালকাঠির নলছিটিতে বিক্ষোভ করেছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সন্তান কমান্ড।
এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে বিরোধীদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ তুলে কঠোর হচ্ছে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সরকারের একাধিক মন্ত্রী ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কথায় কঠোরতার বিষয়টি উঠে এসেছে।
ইতোমধ্যে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধাদান ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে পুলিশ মামলা করেছে। আন্দোলনকারীদের দাবি ও বক্তব্যকে সংবিধান ও রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির বিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। রাস্তা বন্ধ না করে আন্দোলন থেকে সরে আসতে বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান।
আন্দোলনের নামে জানমালের ক্ষতি করলে কিংবা সড়ক অবরোধ করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌক্তিক ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশীদ।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন এবং তাদের দাবি ন্যায্য হলেও সরকার ভিন্ন খাতে নিতে অপকৌশল করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। তবে আন্দোলনকারীরা সরকারি চাকরির সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটা ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাশের দাবি জানিয়ে আসছে।
এরই ধারাবাহিকতায় আজ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে পুলিশের দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ বেলা ১১টায় বঙ্গভবন অভিমুখে গণপদযাত্রা ও রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করবেন আন্দোলনকারীরা।
পুলিশের গাড়ি ভাঙচুর মামলা : কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় পুলিশকে মারধর এবং পুলিশের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করার অভিযোগে মামলা হয়েছে।
শুক্রবার রাতে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের গাড়িচালক খলিলুর রহমান শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন। শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিরা পুলিশের একটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। মামলার আসামির তালিকায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। অজ্ঞাত অনেকে পুলিশের গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। তদন্তসাপেক্ষে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিএমপির রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ আশরাফুল বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনে পুলিশের যানবাহন ভাঙচুর, পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে যা বলা হয়েছে : গাড়িচালক খলিলুর রহমানের করা মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে কোটা সংস্কারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি ছিল। সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে অজ্ঞাতনামা ছাত্ররা জড়ো হয়।
একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অতিক্রম করে বেআইনি জনতায় আবদ্ধ হয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করেন। তারা শাহবাগ মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন এবং পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করেন। এ সময় কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের মারধর করে সাধারণ জখম করেন।
পরে তারা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তারা ছাত্রদের বুঝিয়ে–শুনিয়ে পুনরায় শাহবাগ মোড়ে ফিরিয়ে আনতে যায়।
এ সময় বিএসএমএমইউ–এর পাশে নিরাপদ স্থানে রাখা এপিসি–২৫ ও ওয়াটার ক্যাননের চারদিকে ঘেরাও করে অনেক সংখ্যক আন্দোলনকারী উঠে উদ্দাম নৃত্য শুরু করেন। তারা ওয়াটার ক্যানন চালককে গাড়ি থেকে জোর করে বের করার চেষ্টা ও গতিরোধ করেন।
এর ফলে এপিসি–২৫–এর সামনের দুইটি এসএস স্ট্যান্ড, বনাটের উপরে বাম পাশে রেডিও অ্যান্টেনা এবং ডান পাশের পেছনের চাকার মাডগার্ড এবং ওয়াটার ক্যাননের বাম পাশের লুকিং গ্লাস ভেঙে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেন।
এ বিষয়ে শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ছাত্রদের অন্যান্য সিনিয়র স্যাররা বুঝিয়ে–শুনিয়ে এপিসি–২৫ ও ওয়াটার ক্যানন থেকে নামিয়ে আনেন এবং পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে পানির বোতল, টেপটেনিস বল ও ইটের টুকরা ছুড়ে মারেন। এতে অনেক পুলিশ সদস্য আঘাতপ্রাপ্ত হন।
এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ছাত্ররা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা এবং শাহবাগ থানায় ছাত্রদের ধরে নিয়ে গেছে বলে গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে পুলিশকে মারতে তেড়ে আসেন এবং পুলিশকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে শাহবাগ মোড় ত্যাগ করেন।
জনগণের ক্ষতি হলে যৌক্তিক ব্যবস্থা–হারুন : ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের অন্য কেউ ইন্ধন দিতে পারে, ঘটনাটি অন্যদিকে ধাবিত করারও চেষ্টা চলছে। কোনো গোষ্ঠীর ইন্ধনের বিষয়টি বের করতে ডিবি ও পুলিশ কাজ করছে। তিনি বলেন, কেউ যদি আদালতের আদেশ না মানে, আন্দোলনের নামে জানমালের ক্ষতি করে, সড়ক অবরোধ করে, তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে যৌক্তিক কাজ, সেটাই করা হবে। শনিবার দুপুরে মিন্টো রোডের নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
হারুন অর রশীদ বলেন, কোটা পদ্ধতি নিয়ে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর এক মাসের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ। সুপ্রিমকোর্ট সবার ভরসাস্থল। আদালতের নির্দেশনা সবার মেনে চলা উচিত। তবে কেউ যদি মনে করে আদালত মানবে না, পুলিশের কথা মানবে না, তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে ক্ষমতা, আমরা সেটাই করব। কারণ, আন্দোলনরতরা যদি জানমালের ক্ষতি করে, সড়ক অবরোধ করে এবং মানুষের স্বাভাবিক চলাচলে বিঘ্ন সৃষ্টি করে তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যে যৌক্তিক কাজ, সেটাই করা হবে। কেউ ইন্ধন দিচ্ছে কি না–এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, এসব নিয়ে ডিবির টিম ও পুলিশ কাজ করছে। কেউ যদি হাইকোর্টের নির্দেশনা না মেনে আন্দোলনের নামে সড়ক অবরোধ করে গাড়িতে হামলা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে তবে আমরা ধরে নিতে পারি অনুপ্রবেশকারীরাই এসব কাজ করছে।
আন্দোলন ভিন্ন খাতে নিতে অপকৌশলে সরকার–বিএনপি : শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলন ভিন্ন খাতে নিতে সরকার অপকৌশল করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। শনিবার দুপুরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ অভিযোগ করেন তিনি।
বঙ্গভবনে পদযাত্রা ও রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি : শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ, মামলা তুলে নেওয়া ও কোটা সংস্কারের এক দফা বাস্তবায়নের দাবিতে আজ বেলা ১১টায় গণপদযাত্রা ও রাষ্ট্রপতিকে স্মারকলিপি দেবেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে অনুষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংবাদ সম্মেলনে নতুন এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
তিনি বলেন, আমাদের এতদিন বাংলা ব্লকেড কর্মসূচি ছিল। এ কর্মসূচিকে অনেকে জনদুর্ভোগ হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করেছেন। আমরা বলতে চাই, সুস্থ সন্তান জন্মদানের জন্য সাময়িকভাবে প্রসবকালীন ব্যথা সহ্য করতে হয়। আমাদের ক্লাস–পরীক্ষা বর্জন ও ছাত্র ধর্মঘট চলছে। সেটির পাশাপাশি রোববারের কর্মসূচি থাকবে সব গ্রেডে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের জন্য রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া ও গণপদযাত্রা। সংসদে আইন পাশ করে কোটার যৌক্তিক সংস্কার না করা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
হাসনাত বলেন, এ কর্মসূচিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, সাত কলেজসহ ঢাকার আশপাশের যত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে, এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা গণপদযাত্রায় অংশ নেবেন। আজ বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে শুরু হবে। এছাড়া সারা দেশে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেবেন। সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ হাসান, সারজিস আলম, আসিফ মাহমুদ প্রমুখ।
যশোর : সরকারি চাকরিতে নিয়োগে কোটা বহাল রাখার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন যশোরের মুক্তিযোদ্ধারা। যশোর জেলার সর্বস্তরের মুক্তিযোদ্ধাবৃন্দের ব্যানারে শনিবার দুপুর ১২টায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ভবনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মুজিব বাহিনীর বৃহত্তর যশোর জেলার ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও জাসদের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি রবিউল আলম। সংবাদ সম্মেলনে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকার অবমাননা ও সুপ্রিমকোর্টের আদেশ লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
রাজবাড়ী : রাজবাড়ীতে কোটা প্রথার সংস্কার, শিক্ষা পণ্যের দাম কমানো, পরিবহণে হাফ ভাড়া ও শিক্ষায় দুর্নীতি বন্ধ করার দাবিতে জেলা ছাত্র ইউনিয়ন বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে রেলগেট এলাকায় গেলে ছাত্রদের বুঝিয়ে শান্ত করে পুলিশ। শনিবার দুপুর ১২টায় রাজবাড়ী রেলগেট শহীদ স্মৃতি চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ করে জেলা সংসদের নেতারা। পরে ১নং রেলগেট গিয়ে রেললাইনের ওপর অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা।
নলছিটি (ঝালকাঠি) : নলছিটিতে কোটাবিরোধী আন্দোলনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করা হয়েছে। শনিবার বেলা ১১টায় বাসস্ট্যান্ড বিজয় উল্লাস ৭১র সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সন্তান কমান্ডের নেতারা অংশ নেন। মিছিলটি শহর ঘুরে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়।