খোদা, যিনি অনন্ত অসীম, প্রেমময়, ত্যাগ ও ক্ষমার গুণে পরিপূর্ণ, তিনি হলেন অদৃশ্য এক মহান শক্তিধর প্রেমসত্ত্বা! তাঁর সুবিশাল হস্ত রয়েছে বিস্তৃত সকলের উপর।
তিনিই মানুষ সৃষ্টি করেছেন স্বীয় প্রতিনিধিত্ব করার জন্য, গোটাবিশ্ব মানব জাতিতে পরিপূর্ণ করার জন্য।
তবে মজার বিষয় হলো, তিনি মাত্র একজন মানুষ সৃষ্টি করলেন, তাকে দোয়া করলেন, অভিশিক্ত করলেন, প্রজননের মাধ্যমে স্বজাতি উৎপাদন করে গোটাবিশ্ব আবাদ করার নিমিত্তে।
কাঁচের গ্লাস আর তেমন গ্লাসের ভাঙ্গ টুকরো একই বস্তু; তবে আস্তটি ব্যবহার করা চলে আর ভাঙ্গাটি মেরামতের অপেক্ষায় ক্ষণ গুণছে।
মানুষ পরষ্পরের সাথে কেন বিবাদে জড়িয়ে পড়ে? এটা কি ব্যক্তির মধ্যে পাকরূহের প্রভাব হেতু প্রতিক্রিয়া না মন্দ আত্মার পরিচালনার কারণে ঘটে থাকে তেমনটি? প্রশ্নটি নিজের কাছে রেখে যে জবাব পেলাম তা হলো কেবল অভিশপ্ত ইবলিসের কুটচালের কারণেই আজ গোটা বিশ্ব পাপাচারে ডুবন্ত।
মনের দিক দিয়ে তাদের নিদারুণ অসহায় করে রাখা হয়েছে। অথচ এই অসহায় অপাংক্তেয় মানুযষটিকে রক্ষা করার জন্য তথা তাকে এক নতুন সৃষ্টি হিসেবে দাড় করার জন্য, তার মহান নির্মাতা, তার জন্য এক চুড়ান্ত মূল্য শোধ দিলেন, অবশ্য তেমন অপ্রত্যাশিত খবরটুকু নেই অনেকেরই জানা।
খোদা মানুষকে মহব্বত করেন; তিনি আপনাকে মহব্বত করেন। আপনাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে, রক্ষা করার জন্য, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে রেখেছেন।
নিজেকে অসহায় ভেবে কেন আপনি কষ্ট পাবেন। কে আপনাকে খোদার বিরুপ ছবি দেখালো। সে তো কেবল অভিশপ্ত ইবলিস! ইবলিস বরাবর মিথ্যাবাদী, মানুষের ক্ষতি করা ও খোদার বিরুদ্ধে দুর্ণাম করা হলো ইবলিসের একমাত্র ব্রত। মিথ্যার পিতা হলো অভিশপ্ত ইবলিস। যারা আজ ইবলিসের কবলে কবলিত তাদের কাছ থেকে কেন আমরা সত্য প্রত্যাশা করব? প্রশ্নই জাগে না! করলার রস কেবলই তেতো আর তেতো, কখনোই মিষ্ট হয় না।
বাঁচতে হলে আপনাকে অবশ্যই ইবলিসের কব্জা থেকে হতে হবে অবমুক্ত; যা আপনার নিজস্ব শক্তি প্রজ্ঞা ধার্মিকতা অথবা নানাবিধ কৌশল অবলম্বনের দ্বারা স্বীয় মুক্তির উপায় অর্জিত হতে পারে না, অবশ্যই মহান নির্মাণকর্তার হাতে আমাদের সমর্পিত হতে হবে, সম্পূর্ণ হৃষ্টচিত্তে, গত্যন্তর নেই!
নবী–রাসুলগণ যত কিছু প্রচার প্রকাশ করে এসেছেন; তার সবটুকুই কেবল আপনাকে অভিযোগ করার নামান্তর; অবশ্য কেউ বা মুক্তির পথ–নির্দেশিকা জ্ঞাপন করে এসেছেন, তবে তাদের মধ্যে কেউই মুক্তিদাতা আর হতে পারলো না, কেবল হেদায়েতকারী, কোনো মতেই আর উদ্ধারকারী নয়।
মধুভর্তী কাঁচের পাত্র ঢাকনা না খুলেই পাত্রের চারপাশ চাটাচাটি করে প্রমাদ তৃপ্তি প্রকাশ কেবল ভণিতা মাত্র, হাতের শানিত তরবারী বেয়ে নিয়ত রক্ত ঝরছে। হায়রে মানবতা!
আসুন, খোদ নির্মাতার কাছ থেকে জেনে নেই, কোন কোন বিষয় সূচি নিয়ে তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন। তাঁর মহান পরিকল্পনা থেকে আমরা কতটা দূরে সরে গেছি। অবশ্যই আমাদের ফিরে আসতে হবে খোদ নির্মাতার কাছে, নতুবা অভিশপ্ত ইবলিস আমাদের শেষ করে দিবে, চিরকালের জন্য, বিষয়টি সুনিশ্চিত। মানুষ দুটি ভাগে বিভক্ত; কতিপয় বন্দি আর কতিপয় স্বাধীন; বন্দীদের সমস্যা হলো, তারা মনের খুশীমত চলতে পারে না; তবে যাদের ইতোমধ্যে স্বাধীন করা হয়েছে, তারা নির্মাতার পরিকল্পনা অনুযায়ী চলাফেরা করতে পারে।
আদম থেকে শুরু করে সকল মানুষ রয়েছে ইবলিসের কব্জাগত, পরাধিন; খোদার পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা চাইলেও চলতে পারে না। তাঁদের অবশ্যই মুক্ত করতে হবে পরাধিনতার জিঞ্জির থেকে, একবার যখন তারা হতে পারবে অবমুক্ত, ঠিক তখনই খোদার পরিকল্পনা অনুসারে পারবে তারা চলাফেরা করতে, বয়ে আনতে সক্ষম হবে খোদার গৌরব। “চোর কেবল চুরি, খুন ও নষ্ট করবার উদ্দেশ্য নিয়েই আসে। আমি এসেছি যেন তারা জীবন পায়, আর সেই জীবন যেন পরিপূর্ণ হয়” (ইউহোন্না ১০ : ১০)