চট্টগ্রামের মীরসরাইয়ে বিয়ের আসর থেকে পালাতে সাহায্য করতে গিয়ে বন্ধুর প্রেমিকাকে নিজেই বিয়ে করলেন সাঈদ নামে এক যুবক; কিন্তু মেয়ের বাবার অভিযোগে বরকে যেতে হলো জেলহাজতে। মঙ্গলবার তাকে জেলহাজতে পাঠান আদালত।
জানা গেছে, মীরসরাই উপজেলার ইছাখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ মঘাদিয়া গ্রামের কিশোরী (১৮) গত ১৪ এপ্রিল গায়েহলুদের রাতে পালিয়ে যাচ্ছিলেন পাশের বাড়ির প্রেমিক নোমানের সঙ্গে। কিশোরীকে সিএনজিতে বসিয়ে ঘর থেকে কিছু কাগজপত্র আনতে গেলে বাবা–মা ঘটনা টের পেয়ে আটকে ফেলে তাকে।
অবশেষে নোমানের বন্ধু সাইদুর রহমান সাঈদকে (২০) বলে চট্টগ্রামের নির্ধারিত ঠিকানায় কিশোরীকে নিয়ে যেতে। চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়ার দুদিন পরও বন্ধু না আসায় ওই কিশোরী ও সাঈদের মন দেওয়া–নেওয়া হয়ে যায়। কিশোরীও প্রেমিকের বন্ধুকেই বিয়ে করতে চান। ১৬ এপ্রিল চট্টগ্রামের জজকোর্টে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করে দুজন বিয়ে করেন।
এদিকে কিশোরীর পরিবার খুঁজতে বের হয় মেয়েকে। এমন খবর পেয়ে বর ও কনে গা ঢাকা দেয়। অবশেষে পাত্রের দুলাভাই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশ সদস্যের মাধ্যমেই তাদের মধ্যে আপস মীমাংসা বা সমাধান করে দেবে বলে সোমবার জোরারগঞ্জ থানায় আনা হয় তাদের। সেখানে মেয়েকে আলাদা করে পৃথক জবানবন্দি নিয়ে আদালতে হাজির করে অপহরণ ও ধর্ষণ মামলা দিয়ে মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে সাঈদকে পাঠানো হয় জেলহাজতে।
এ বিষয়ে জোরারগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল হারুন বলেন, মেয়ের বাবা অভিযোগ দায়ের করেছেন এবং মেয়ে তার পক্ষেই জবানবন্দি দিয়েছেন। তাই আদালতই এর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করবেন।
আবার কিশোরীর বড় ভাই কামরুল হাসান বলেন, আমার অবুঝ বোনকে জোর করে ওরা নানান কথা বলিয়েছে। মাত্র ১ লাখ টাকা কি কাবিন হয়? এমন প্রশ্নও বড় ভাইয়ের।
কিন্তু এখন সাঈদের মা পারভিন আক্তার অশ্রুসিক্ত নয়নে গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, আমার ছেলে তো মেয়েটির সম্মান বাঁচাতে ও মেয়ের ইচ্ছাতেই বিয়ে করেছে; কিন্তু এরপরও সমাধানের কথা বলে আমার ছেলেকে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
মা কাঁদতে কাঁদতে আরও বলেন, ওরা ১০ লাখ টাকা কাবিন দাবিসহ ২ লাখ টাকা নগদ চেয়েছে; কিন্তু ওর বাবা দিদারুল আলম সামান্য সিএনজিচালক; এত টাকা দেওয়ার সামর্থ্য আমাদের নেই। বন্ধুর প্রেমিকা ও বন্ধুর সম্মান রক্ষা করতে গিয়ে আমার ছেলে এখন জেল খাটছে!