হঠাৎ করেই কেউ কেউ লাঠিসোটা নিয়ে দৌড়ে যাচ্ছে এদিক সেদিক। কারো হাতে বাঁশের লাঠি কারো হাতে দেশীয় অস্ত্র বল্লম কুচ। তারা সবাই কিছু একটা লক্ষ্য করে দৌড়াচ্ছেন।
Advertisement
রোববার রাতে এমন এক ভিন্ন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় নান্দাইল পৌর এলাকায়।
নান্দাইল বাজারে হঠাৎ এরকম দেশীয় লাঠিসোটা অস্ত্র হাতে লোকজনকে দৌড়াদৌড়ি করতে দেখে প্রথমে থমকে গেলেও পরে বোঝা যায় এলাকার মানুষ কুকুর নিধনে নেমেছেন।
যেখানে কুকুর পাচ্ছেন সেখানেই পিটিয়ে মারা হচ্ছে। সন্ধ্যার পর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চলে বেওয়ারিশ কুকুর নিধন। নান্দাইল সদরেই মারা হয় ১২টি কুকুর। ভয়ার্ত অন্য কুকুরগুলো দৌড়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যায়।
সোমবার সারাদিন ঘুরেও নান্দাইল বাজার ও এর আশপাশে কোনো কুকুরের দেখা মেলেনি।
জানা যায়, রোববার ভোরে চাড়িআনিপাড়া এলাকায় ইজাজুল হক (৩৫) নামের এক ব্যক্তিকে একদল হিংস্র কুকুর কামড়িয়ে দেহের অধিকাংশ অংশ খেয়ে ফেলে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। এতে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী রোববার সন্ধ্যায় কুকুর নিধনে নামেন। নান্দাইল বাজার থেকে বাসস্ট্যান্ডে রাস্তায় যাওয়ার সময় একের পর এক কুকুরের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে এসব কুকুর মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে বলে জানান পৌর কর্মচারীরা।
নান্দাইল বাজারের শ্রমিক সরদার জানান, এ পর্যন্ত ১৫টি কুকুর মারা হয়েছে। অন্য কুকুরগুলো ভয়ে এলাকা ছেড়ে চলে গেছে।
নাথপাড়া মহল্লার সজিব মিয়া (২০) জানান, লোকজন ৬টি কুকুর মেরেছে।
চা বিক্রেতা সুভাষ চৌহান বলেন, কুকুর না মেরে উপায় নাই, যে হারে মানুষরে কামড়াচ্ছে।
পৌরসভার বাসিন্দা ব্যাংক কর্মচারী লালন মিয়া (৩০) বলেন, আমাদের এলাকায় কুকুর মারার জন্য লোকজন প্রস্তুত কিন্তু এখন এদের পাওয়া যাচ্ছে না কোথায় লুকিয়ে পড়েছে।
সোমবার রাতেও কুকুর নিধন কর্মসূচি বহাল থাকবে বলে জানিয়েছেন এলাকার যুবকেরা।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. হারুনর রশীদ বলেন, কুকুরের দলবদ্ধ হয়ে মানুষকে আক্রমণ এটা অনাকাঙ্ক্ষিত। সাধারণত কোনো কুকুর পাগল হলে পৌরসভার সহায়তায় আমরা কাজ করি। এসব ভাইরাস আক্রান্ত কুকুর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই মারা যায়।