গাজীপুর সদর উপজেলা নির্বাচনে ভোটগ্রহণে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। অন্তত ১২ ভোটকেন্দ্র ঘুরে কোথাও ভোটারদের দীর্ঘ লাইনও চোখে পড়েনি। সকাল ১১টার দিকে একটি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের সর্বোচ্চ পাঁচজনের একটি লাইন দেখা গেছে। অতীতের জমজমাট নির্বাচনগুলোর মতো ভোটকেন্দ্রের বাইরে ভোটের উৎসব, আগ্রহ কমই দেখা গেছে। অনেকটাই ছিল নিরুত্তাপ ভোট। সদরের মতো একই চিত্র দেখা গেছে জেলার কালীগঞ্জ ও কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাচনে। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া এই তিন উপজেলার নির্বাচনে কোথাও কোনো অঘটনের খবর পাওয়া যায়নি।
গাজীপুর সদর উপজেলার বিকেবাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে সকাল আটটায় ভোটগ্রহণের শুরুতেই ভোট দিয়েছেন বিএনপি’র (সদ্য বহিষ্কৃত) নেতা ইজাদুর রহমান। এই ভোটকেন্দ্রের সামনে ভোটারদের লাইন দেখা যায়নি। স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন, উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক এডভোকেট রীনা পারভীন সকালে ভোট দিয়েছেন পিরুজালী মধ্যপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে। ওই ভোটকেন্দ্রেও দুপুর একটার দিকে ভোটারের কোনো লাইন দেখা যায়নি।
তবে সকালের চেয়ে দুপুরের দিকে ভোটার উপস্থিতি একটু বাড়তে থাকে বলে জানিয়েছেন ওই কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসার মেহেদী হাসান। তিনি জানান, সকাল থেকে দুপুর বারোটা পর্যন্ত ভোট প্রদান করা হয়েছে ৫৩৩। শতকরা হিসেবে ১৫ দশমিক দুই ভাগ। আরেক প্রিসাইডিং অফিসার কাজী সাইদুর রহমান জানান, দুপুর বারোটা পর্যন্ত ওই কেন্দ্রে ৩৪০৯ ভোটের মধ্যে ভোট পড়েছে ৫২৩টি। ভোট প্রদানের হার ১১.৪৫ ভাগ। কেন্দ্রটির সামনে লাইন ধরে ভোটের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়নি কাউকে।
ভবানীপুর উচ্চ বিদ্যালয় (উত্তর) ভোটকেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারের নাইমুল ইসলাম জানান, ভোটগ্রহণ থেকে শুরু করে বিকাল চারটায় শেষ পর্যন্ত এই কেন্দ্রে মোট ভোট প্রদান করা হয়েছে ১০৬১। এই ভোট প্রদানের হার শতকরা ৩৪.৭১ ভাগ। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ছিল ৩০৫৬। তিনি আরও জানান, এই কেন্দ্রে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ভোট প্রদান করেন ৭৬১ জন। তখন পর্যন্ত ভোটগ্রহণের সংখ্যা ছিল শতকরা প্রায় ২৫ ভাগ।
উপজেলা তিনটিতে চেয়ারম্যান পদে ১০ জন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৭ ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৭ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এই তিনটি উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৬ লাখ ৯৬ হাজার ৭৪৩ জন। তিনটি উপজেলায় ২৫৮টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৫৪টি ছিল গুরুত্বপূর্ণ (ঝুঁঁকিপূর্ণ)। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ ও আনসার মোতায়েন ছিল। এ ছাড়া বিজিবি স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। ভোটকেন্দ্রসমূহে মোবাইল টিম ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিশেষ দায়িত্ব পালন করেছে। প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, প্রতিটি উপজেলায় দুই প্লাটুন করে বিজিবি মোতায়েন ছিল। এ ছাড়া র্যাব, পুলিশের টহল টিম, মোবাইল টিম নিয়োজিত ছিল। ভোটাররা যেন নির্বিঘেœ দ্রুত ভোট দিতে পারেন, সে জন্য প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে অস্থায়ী বুথও স্থাপন করা হয়।