কক্সবাজারের উখিয়ার সমুদ্র উপকূলে একের পর এক ভেসে আসছে মরা মা কাছিম। চলতি প্রজনন মৌসুমে পুরো কক্সবাজার উপকূলজুড়ে মরা অবস্থায় পাওয়া গেছে ১১টি মা কাছিম।
গতকাল শুক্রবারও (২ ফেব্রুয়ারি) উখিয়ার সোনারপাড়া সৈকতে ভেসে আসে বিশাল আকৃতির মরা কাছিম। যা পরিদর্শন করে কাছিম মরা যাওয়ার কারণ অনুসন্ধান করেছে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের গবেষকরা।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, সোনারপাড়া সৈকতে ১টি মরা কাছিম ভেসে আসার খবর দেয় স্থানীয় জেলেরা। তারপর ঘটনাস্থল সরেজমিন পরিদর্শন করি। দেখা যায়, কাছিমটি আনুমানিক ১০ থেকে ১২ দিন আগে মারা গেছে। এরপর এই কাছিমটি ডিম পাড়তে এসে নাকি ডিম পেড়ে চলে যাওয়ার সময় বাধাগ্রস্ত হয়ে মারা গেছে এটা পরীক্ষা–নিরীক্ষা করা হয়। দেখা যায়, মরা কাছিমটি পেটে কোন ধরণের ডিম ছিল না। এই থেকে প্রতীয়মান হয় যে, মরা কাছিমটি সৈকতের বালিয়াড়িতে ডিম দিয়ে ফিরে যাওয়ার সময় বাধাগ্রস্ত হয়ে মারা গেছে। পরবর্তীতে কাছিমটি বালিয়াড়িতে গর্ত করে পুঁতে ফেলা হয়েছে।
মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, কাছিম মরা যাওয়ার বেশকিছু কারণ চিহ্নিত করা হয়েছে। তার মধ্যে জেলেদের জালে আটকা পড়ে, ট্রলারের আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে এবং উপকূলের কুকুরের আক্রমনে কাছিম মারা যাচ্ছে। এটা জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক। সুতরাং, কাছিম রক্ষায় সকলকে সচেতন হতে হবে। আর কাছিমের প্রজনন বৃদ্ধিতে বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউট কাজ করছে। দুই পদ্ধতিতে হ্যাচারি স্থাপনের মাধ্যমে কাছিমের প্রজননকে সুন্দর ও সুষ্ঠু রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ১১টি মরা কাছিম কক্সবাজার উপকূলে পাওয়া গেছে। প্রতিবছর অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত অলিভ রিডলি কাছিমের প্রজনন সময়। বাংলাদেশের উপকূলে বিশেষ করে, সেন্টমার্টিন থেকে শুরু করে সোনাদিয়ায় অলিভ রিডলি কাছিম প্রজননের উত্তম স্থান।