চুয়াডাঙ্গায় গম চাষের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর চুয়াডাঙ্গাতে গমের ব্যাপক চাষ হয়েছে। গমের সবুজ পাতার সমারোহ চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের মাঠ জুড়ে দেখা যাচ্ছে। গমচাষিরা আশা করছেন এবার প্রতি বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২ মণ করে গমের ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেইসঙ্গে বাজারে তুলনামূলক অনেক বেশি দাম পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এবার যারা গম চাষ করছেন তারা ভালো স্বাবলম্বী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা গেছে, অনেক কৃষক আমন ধান তোলার পরে চাষিরা আলু বা সরিষার আবাদ না করে গম চাষ করেছেন। জেলার বিভিন্ন মাঠে ঘুরে দেখা যায়, গম চাষের সমারোহ মাঠ জুড়ে শোভা পাচ্ছে। অল্প কিছুদিনের মধ্যে গমে পাক ধরতে শুরু করবে। অথচ কালের বিবর্তনের দিন দিন বিলুপ্তির পথে যেতে বসেছিল গম চাষ। এক সময় চুয়াডাঙ্গা জেলার বিভিন্ন উপজেলায় প্রায় প্রতিটি মাঠে ব্যাপক হারে গমের চাষ হতো। কিন্তু বর্তমানে কৃষক আলু চাষের দিকে বেশি ঝুকেছে। যার ফলে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে গমের চাষ। কিন্তু গত কয়েক বছরে চুয়াডাঙ্গাতে চাহিদার তুলনায় ভালোই গমের আবাদ হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গার সদর উপজেলার বেগমপুর গ্রামের আলতাফ হোসেন বলেন, গম চাষ করে গত বছর ভালো ফলন হয়েছে। দেড় বিঘা জমিতে গম চাষ করে পেয়েছেন ১৫ মণ। আশা করছি এবারও ভালো হবে।
একই এলাকার গমচাষি আরজ আলী বলেন, এ বছর আলু চাষ না করে সেই জমিতে গম চাষ করেছি। গমের চাষ খুব ভালো হয়েছে। গম চাষ করতে প্রতি বিঘা খরচ হয়েছে ১২ থেকে ১৫ হাজার টাকা। তবে সারের দাম বেশি না হলে আরও খরচ কম হতো। এবার গম চাষে তেমন রোগবালাই নাই। কিন্তু পেয়ে বসেছে ইঁদুরের হানা। কিছুতেই রোধ করা যাচ্ছে না এদেরকে। গমের গাছ কেটে সাবাঢ় করে দিচ্ছে ইঁদুর।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আমিরুল হক রাসেল বলেন, আগামীতে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চলতি মৌসুমে এ অঞ্চলে গমের বাম্পার ফলন হবে। আটার চাহিদা মেটাতে এ অঞ্চলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। গম চাষে কৃষক পর্যায়ে প্রশিক্ষণসহ উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার, সার, সেচ ও উন্নতমানের বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে। সরকারের নির্দেশনায় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংক গম চাষের জন্য কৃষকদের স্বল্প সুদে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করেছে।
চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ–পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, এ বছরে চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৯শ ৩২ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে এর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৫০ হেক্টর আলমডাঙ্গা উপজেলায় ৪শ ৩৯ হেক্টর দামুড়হুদা উপজেলায় ২শ ২০ হেক্টর এবং জীবননগর উপজেলায় ২শ ২৩ হেক্টর। তিনি আরও বলেন, আমরা চাষিদের মাঝে গমের চাষ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করছি। আশা করছি আগামী বছরে চুয়াডাঙ্গা জেলায় প্রচুর গমের আবাদ হবে।