পুরোপুরিভাবি সমাজ যখন অমানিশায় ডুবে থাকে, তখন তাদের খুঁজে বের করার জন্য অবশ্যই আলোর প্রয়োজন, প্রয়োজন আলোর ফোয়ারার!
চলার পথে পা পিছলে যেতেই পারে, তাতে দোষের এমন আর কি আছে। এমন কোন যানবাহন আছে যা এক্সিডেন্টের উর্ধ্বে? এমন কোন মাছ আছে যার মধ্যে কাঁটা নেই? এমন কোন খাদ্য আছে যার মধ্যে বর্জ নেই? পৃথিবীতে যা কিছু দেখছেন সবগুলোই ক্ষণভঙ্গুর। স্থায়ী বসবাসের শুপ্ত আকাঙ্খা কর্পূরের মত উবে যেতে বাধ্য।
মানুষ হলো খোদার সুরতে, তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে সৃষ্ট! কথাটা শুনে হতচকিত হবার কোনো কারণ দেখি না! কে যে সর্বপ্রথম বলেছে ‘মানুষ মরণশীল’ তা খোদার জানা আছে কিনা সন্দেহ জাগে। মানুষ তো খোদার হাতেই হলেন সৃষ্টি। অনন্তজীবি খোদা কেন মরণশীল মানুষ সৃষ্টি করলেন, তা অবশ্যই জিজ্ঞাস্য বিষয়।। খোদার মৃত্যু নেই, এমন কি তাঁর চোখে ঘুম নেই, করেন না তিনি আহার বিহার! আর খোদার আকার আকৃতি মানুষ মাপতে পারে না। তবে তিনি যে বর্ণনা দিয়েছেন, তাতে বুঝতে সহজ হবে; আসমানে তাঁর সিংহাসন আর জমীনে তাঁর পাদযুগল রাখেন। এবার ভেবে দেখুন, কেন মানুষকে বিভ্রান্ত করে রেখেছেন? খোদার ঘর নির্মানের নামে লক্ষকোটি অর্থ সাধারণের কাছ থেকে আদায় করে চলছেন।
মানুষের ইন্তেকাল হবে, যার অর্থ হল, মাটির দেহ ত্যাগ করে সে খোদার সাথে মিলিত হবে, আর সেখানে বেঁচে থাকবে অনন্ত কাল ধরে যা হলো কিতাবের বর্ণনা। তাছাড়া খোদা ব্যক্তির গ্রীবা শিরার চেয়েও অধিক নিকটে থাকেন, কেননা তিনি হলেন এক রুহানী সত্ত¡া। যিনি পূতপবিত্র ও সত্যে সদা বাস করেন। কোনো পাপের কালিমা তাকে কলঙ্কিত করার ক্ষমতা রাখে না। খোদা হলেন নূর, যাকে বলা চলে “শিখা–অনির্বাণ”। মানুষ খোদার সৃষ্টি অর্থাৎ খোদার প্রাণবায়ু মানুষের নাকে ফুকে দেবার ফলে প্রথম মানুষ আদম, জীবিত মানুষ হিসেবে জীবন–যাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। মানুষের মধ্যে যে প্রাণবায়ু রয়েছে তা খোদারই দান। মানুষের নিজের নয়; কেউ তেমন দাবিটি বিশ্লেষণ করে দেখতে পারে সহজেই। মানুষটিকে মাতৃগর্ভে রোপন করলেন ও গঠন দিয়েছেন?
আলোর দায়িত্ব হলো অন্ধকারে লুকানো বস্তু প্রকাশ করে দেয়া। আলো কিন্তু দেখিয়ে দেয়, কোনো কিছু স্থানান্তরীত করে না।
সমাজে ভ্রান্ত শিক্ষা ও অবক্ষয় নিয়ে আলোর ফোয়ারা বরাবর সোচ্চার! তবে সমাজ পরিবর্তনের দায়দায়িত্ব বর্তায় সচেতন ব্যক্তিদের উপর বর্তায়, আর ভুক্তভোগী যখন প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠে, তখনও সমাজপতিরা নড়ে চড়ে বসে। আলোর ভুমিকা তবে নগণ্য নয়; সে আপনাকে গোপন কিছু দেখিয়ে দিচ্ছে, যেন আপনি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।
সৌরালোক থেকে শক্তি আহরণ, তা তো গবেষণারই ফল। সমাজ তথা দেশের নরনারী সমান শক্তি ও অধিকার মান–মর্যাদা ভোগ করবে, আপন আপন দায়িত্বপালন করবে, দেশ এগিয়ে যাবে তা কতইনা আনন্দের বিষয়, অবশ্য এক্ষেত্রেও গবেষণা পরীক্ষা–নিরীক্ষার আন্দোলন সংগ্রাম চালাতে হয়েছে সুদীর্ঘকাল ধরে। অন্ধকারের কীট চেলাচামুন্ডা দিবানিশি ষড়যন্ত্র চালিয়ে আসছে নারী শিক্ষার বিরুদ্ধে।
আলোর বিকাশ আপনা থেকেই ঘটে চলে। আপনার দায়িত্ব শক্ত হতে প্রজ্জ্বলিত প্রদীপটি উচুতে তুলে ধরা। আঘাত যতই আসুক না কেন