নতুন বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের হাতে উঠবে নতুন বই। সারা দেশে আজ বই উৎসব। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ নিতে উদ্গ্রীব হয়ে আছে শিক্ষার্থীরা। বছরের প্রথম দিনে প্রায় তিন কোটি ৮১ লাখ শিক্ষার্থীর হাতে বিনামূল্যে নতুন বই দেয়া হবে। বই উৎসবের আয়োজনের অনুমতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য ছাপানো হয়েছে ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৭টি বই। সেইসঙ্গে ছাপানো হয়েছে ৪০ লাখ ৯৬ হাজার ৬২৮ শিক্ষা সহায়িকা পাবেন শিক্ষকরা। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। গতকাল বই উৎসবের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথম থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দিয়ে নতুন শিক্ষাবর্ষের বই বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন তিনি।
প্রাথমিক, মাধ্যমিক, ইবতেদায়ি, দাখিল ও কারিগরি পর্যায়ের কিছু শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেন শেখ হাসিনা। সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে বই উৎসব উদ্বোধনের এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, যত টাকা লাগে আমরা দেবো। আন্তর্জাতিক যত নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয় আছে– তারা কীভাবে শিক্ষা দেয়, কী কারিকুলাম শেখায়, কীভাবে কোন পদ্ধতি ব্যবহার করে, আমরা তা অনুসরণ করে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থা বাংলাদেশে তৈরি করতে চাই। তিনি আরও বলেন, সরকার প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জাতি গড়ে তুলতে চায়। আমরা কখনো পিছিয়ে থাকবো না। পৃথিবীর অন্য দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। এজন্য আমরা চাই এই ছোট্ট বয়স থেকে আমাদের ছেলেমেয়েরা কম্পিউটার প্রযুক্তি শিখবে। সেজন্য আমাদের শিক্ষা কারিকুলামগুলো পরিবর্তন আনা দরকার। ধন সম্পদ অনেক কিছু থাকতে পারে কিন্তু শিক্ষা এমন একটা জিনিস যা কেউ কেড়ে নিতে পারে না। আগামী দিনে এই ছেলেমেয়েরাই তো একদিন আমার মতো প্রধানমন্ত্রী হবে, মন্ত্রী হবে বা ভালো শিক্ষক হবে। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম প্রমুখ। এ বছর প্রাক–প্রাথমিক ও প্রাথমিক পর্যায়ের বই উৎসব দেশব্যাপী হলেও আলাদাভাবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজন করবে রাজধানীর মিরপুরের ন্যাশনাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে। আর মাধ্যমিক পর্যায়ের উৎসব কুমিল্লার সুয়াগঞ্জ তফাজ্জল আহাম্মদ চৌধুরী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজে অনুষ্ঠান আয়োজনের আবেদন করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে এতে অসম্মতি জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।