বিশ্বে আফিম উৎপাদনে শীর্ষ অবস্থানে স্থান ছিলো আফগানিস্তান। দেশটির বর্তমান সরকার নিষেধাজ্ঞার পর আফিমের ফলন প্রায় ৯৫ শতাংশ কমে গেছে বলে জাতিসংঘের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
জাতিসংঘের মাদক ও অপরাধ সংক্রান্ত দপ্তর (ইউএনওডিসি) এক প্রতিবেদনে বলেছে, সারা দেশে আফিম চাষ ২ লাখ ৩৩ হাজার হেক্টর থেকে কমে ২০২৩ সালে ১০ হাজার ৮০০ হেক্টরেরও কম হয়েছে। আফিমের উৎপাদন আগের বছরের থেকে ৯৫ শতাংশ কমে ৩৩৩ টনে দাঁড়িয়েছে।
সংস্থাটির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, এটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের কৃষকদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে, যেখানে বেশিরভাগ মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল এবং পপি (আফিম/পোস্ত) রপ্তানির মূল্য কখনও কখনও সমস্ত আনুষ্ঠানিক রপ্তানি পণ্যের মূল্যকে ছাড়িয়ে গেছে। তালেবানের নীতিগত পরিবর্তনের সুদূরপ্রসারী প্রভাব পড়বে দেশটির অর্থনীতিতে। দেশটির বর্তমান জনসংখ্যার প্রায় দুই–তৃতীয়াংশর ইতিমধ্যেই মানবিক সহায়তার প্রয়োজন।
ইউএনওডিসির নির্বাহী পরিচালক ঘাডা ওয়ালি একটি বিবৃতিতে বলেছেন, সামনের মাসগুলোতে আফগানিস্তানে আফগান কৃষকদের আফিম থেকে দূরে থাকার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য ও টেকসই জীবিকার জন্য বড় অঙ্কের বিনিয়োগের প্রয়োজন।
তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা ২০২২ সালের এপ্রিলে মাদকের চাষ নিষিদ্ধ করেছিলেন। এর আগে ২০০০ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে তালেবান আফিম চাষ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। আফিম চাষকে ‘অনৈসলামিক’ আখ্যা দিয়ে তৎকালীন তালেবান নেতা মোল্লা মোহাম্মদ ওমর বলেন, কেউ পপি বীজ রোপণ করলে তাকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হবে।
তবে বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও তহবিল পাওযার কৌশল হিসেবে উদ্যোগ নিয়েছিল তারা।
একসময় আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশে ঐতিহ্যগতভাবে দেশের অর্ধেকেরও বেশি আফিম চাষ হতো। কিন্তু, তালেবান নিষেধাজ্ঞার পর আফিম চাষ কমে গেছে। এখন গমকেও বিকল্প হিসাবে ধরা হচ্ছে। পপি চাষে পতনের ফলে একই অঞ্চলে গম চাষ বৃদ্ধি পেয়েছে, কিন্তু লাভের পরিমাণ কম হওয়ায় দরিদ্র কৃষকদের এটি গ্রহণ করার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে মনে হয়।