এ যেন শাপলার মেলা। লতা–গুল্মে ভরা বিলের পানিতে ফুটে আছে শত–সহস্র সাদা শাপলা। প্রকৃতির বুকে আঁকা এ যেন এক নকশিকাঁথা।
শ্বেত শাপলার শুভ্র হাসি চোখ জুড়ানো এমন দৃশ্য উপভোগ করতে লোকজন ভিড় করছে মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার বাষ্টিয়া এলাকায়। স্থানীয়দের কাছে যার পরিচিতি মেন্দী বিল নামে। সৌন্দর্য্য উপভোগের পাশাপাশি স্থানীয় অনেকেই এখান থেকে শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন। বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে প্রায় চার–পাঁচ মাস বিলে পানি থাকে। সাধারণত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের শেষ থেকে অক্টোবর মাস জুড়ে এখানে শাপলার আধিপত্য থাকে।
শাপলা ফুটে রাতের স্নিগ্ধতায়, আর দিনের আলোতে আস্তে আস্তে ম্লান হয়ে যায়। একটি শাপলার স্থায়িত্ব একনাগাড়ে সাত দিন। তাই শাপলার সৌন্দর্য্য দেখতে ভোর বেলাতেই ভিড় শুরু হয়।
স্থানীয়দের আন্তরিকতাও বেশ চোখে পড়ার মতো। অন্য এলাকা থেকে কোনো দর্শনার্থী এলে, তারা নৌকায় করে ঘুরিয়ে দেখান বিলের সৌন্দর্য। তবে দ্রুত পানি কমে যাওয়ায় এবারের সৌন্দর্য এই মাসই থাকবে বলে জানান স্থানীয়রা।
বাষ্টিয়া এলাকার মো. ইকবাল হোসেন বলেন, আমাদের মেন্দীবিলে সাদা শাপলায় ভরে যায়। এমন দৃশ্য সেই ছোট বেলা থেকেই দেখি আসছি। এই বিল আমাদের কাছে ঐতিহ্য।
তারা জানান, এই সময় দুই মাস শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করি। শাপলার পরিমাণ দিন দিন কমে যাচ্ছে। সপ্তাহে ৩ দিন শাপলা তুলি। গড়ে দেড়–দুশ টাকার শাপলা বিক্রি করি।
স্থানীয় আব্দুল মজিদ বলেন, মেন্দীবিলে প্রচুর শাপলা ও শালুক জন্মে। এ এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য এই শাপলা শালুক। এ ছাড়াও মেন্দী বিলে লতা, গুল্ম জন্মে। কৃষকরা গোখাদ্য হিসেবে ব্যবহার করেন। স্থানীয়রা এই বিলের শাপলা সবজি হিসেবে ব্যবহার করেন।
বালিয়াখোড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল খান বলেন, পুরো বালিয়াখোড়া ইউনিয়নই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি। মেন্দীবিলের শাপলার সৌন্দর্য্য দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষজন আসেন।