জরাজীর্ণ ভবনের বদলে বছর দশেক আগে কর্মকর্তাদের ঠাঁই হয়েছে দোতলা নতুন ভবনে। পুরনো কর্মস্থলে এখন আগাছা, ময়লা আবর্জনায় ঠাসা। এভাবে অবহেলা আর অযত্নে পুরোনো ভবন পরিত্যক্ত হওয়ার পাশাপাশি বেহাতের শঙ্কায় পড়েছে সাতকানিয়া উপজেলা ডাকঘরের ৩৬ শতক সম্পত্তি। মৌজা দরে এসব জমির মূল্য বর্তমানে ১৪ কোটি ১৬ লাখ টাকারও বেশি। বাজারমূল্যে হিসাব করলে যা অর্ধশত কোটি টাকারও বেশি দাঁড়াবে।
সাতকানিয়া উপজেলা ও পৌর শহরের প্রাণকেন্দ্রে হওয়ায় সরকারি এ সম্পত্তিতে ‘চোখ পড়ছে’ বিভিন্ন ডেভেলপার সিন্ডিকেটের। ‘পরিত্যক্ত’ দেখিয়ে কোটি টাকার এই সম্পত্তি গিলে খেতে চায় এসব সিন্ডিকেট। বাণিজ্যিক ভবন গড়ে কোটি টাকা আয়ের স্বপ্ন তাদের। এমন পরিস্থিতিতেও নিজেদের সম্পদ রক্ষায় কোনো উদ্যোগ এখন পর্যন্ত চোখে পড়েনি ডাক বিভাগের।
ডাক বিভাগ বলছে, সরকারি সম্পত্তি গিলে খাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। শিগগিরই সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে খালি জায়গা সংস্কার করা হবে। ডাক বিভাগ দিন দিন আধুনিকায়ন হচ্ছে, এই জমি আধুনিকায়নের কাজে লাগানো হবে।
জানা গেছে, সাতকানিয়া উপজেলা ডাকঘরের পুরোনো ভবন জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় নির্মিত হয় দোতলা ভবন। পরে পুরনো ভবনকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ।
কর্তৃপক্ষের তথ্যমতে, উপজেলা ডাকঘরের অধীনে ১৬টি উপ–ডাকঘর রয়েছে। যেখান থেকে সরকারি চিঠিপত্র, পার্সেল, পরীক্ষার খাতা, সঞ্চয় স্কিম, মানি অর্ডারসহ বেশকিছু কার্যক্রম চলমান রয়েছে। উপজেলা ডাকঘরে একজন পোস্টমাস্টার, ৪ জন পোস্টাল অপারেটর, একজন পোস্ট ম্যান, একজন পেকার ও দুজন রানার কর্মরত। ব্যক্তিগত চিঠিপত্রের আনাগোনা না থাকলেও মানি অর্ডার, সঞ্চয় স্কিম, সরকারি চিঠিপত্র, পার্সেলের জমজমাট ডাকঘর। প্রতি কার্যদিবসেই এসবের জন্য গ্রাহকের ভিড় লেগেই থাকে। এছাড়া ১৬টি উপ–ডাকঘরের কার্যক্রমও এটিকে ঘিরে।
উপজেলা পোস্টমাস্টার মো. নুরুল আলম বলেন, উপজেলা ডাক বিভাগের পক্ষ থেকে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সীমানা প্রাচীরের বিষয়ে জানানো হয়েছে। পরে ঊর্ধ্বতন পরিদর্শক দল পরিদর্শন করে গেছেন। ওনারা সীমানা প্রাচীর নির্মাণসহ বেশকিছু প্রস্তাবনা দিয়েছেন।
ডেপুটি পোস্টমাস্টার জেনারেল তৈয়ব আলী বলেন, সরকারি সম্পত্তি দখল করার কোনো সুযোগ নেই। সরকারি বেসরকারি অংশীদারিত্বে ডাক বিভাগের কোনো সম্পত্তিতে স্থাপনা নির্মাণেরও নজির কোথাও নেই। সাতকানিয়া উপজেলা ডাকঘর পরিদর্শন করে সীমানা প্রাচীর সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে। শিগগিরই সীমানা প্রাচীর নির্মাণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসবে। ডাকবিভাগ দিন দিন আধুনিকায়ন হচ্ছে, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনায় ডাক বিভাগের এই জমি কাজে লাগানো হবে বলেও জানান তিনি।