দেশের উত্তরের জেলা ঠাকুরগাঁও। ধান প্রধান এই জেলায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পার্চিং পদ্ধতি ধান আবাদ। ধানের জমিতে গাছের ডাল, খুঁটি, বাঁশের কঞ্চি ও ধইঞ্চার ডাল পোতা হয় একে পার্চিং বলে। সেগুলোর উপর বিভিন্ন প্রজাতির পাখিরা বসে ফসলের তিকারক পোকামাকড় খেয়ে ফেলে। এই পার্চিং পদ্ধতি ফসলের পোকা দমনের জন্য অত্যন্ত কম ব্যয়বিহীন এবং পরিবেশবান্ধব।
এই পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদন খরচ ও কীটনাশকের ব্যবহার কমে পাওয়ায় এটি জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ঠাকুরগাঁও জেলার কৃষকদের মাঝে। অনেক কৃষক আমন ফসলের ক্ষেতে কীটনাশক পরিহার করে পোকা দমনে সহজ ও লাভজনক পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করছেন। জানা যায়, এ বছর ঠাকুরগাঁও জেলায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৫ হেক্টর জমিতে আমন চাষের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে উৎপাদনের ল্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৩ লাখ ৯৭ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন।
কৃষকরা তাদের আমন ফসলের তেকে তিকারক পোকা থেকে রার জন্য বাঁশের আগা, বাঁশের কঞ্চি, গাছের ডাল এবং জীবন্ত ধইঞ্চার ডাল পুঁতে বিভিন্ন পোকামাকড় থেকে ফসল রাক্ষা করেছেন। এসব ব্যবহারে শালিক, বুলবুলি, ফিঙ্গেসহ বিভিন্ন ধরনের পোকাখাদক পাখি খেতের পার্চিংয়ের উপরে বসে। সেখান থেকে উড়ে উড়ে গিয়ে তিকারক পোকা ও পোকার ডিম খেয়ে ফেলে। এর ফলে কীটনাশক ছাড়াই পোকার আক্রমণ থেকে ধানগাছগুলো সবল হয়ে উঠছে। এছাড়া পরিবেশের সৌন্দর্যের পাশাপাশি ধান উৎপাদন বেড়ে যাচ্ছে কয়েকগুণ। ঠাকুরগাঁও জেলার ৫টি উপজেলায় রানীশংকৈল, হরিপুর, বালিয়াডাঙ্গী ঠাকুরগাঁও সদর সহ পীরগঞ্জ উপজেলার পাকা রাস্তার পাশে ধান ক্ষেতের দিকে লক্ষ করলে দেখা যাবে কৃষকের আমন ক্ষেত সবুজ সতেজ হয়ে উঠেছে। ক্ষেতে কৃষকরা পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহার করছেন।
কৃষি সম্পসারণ অধিদফতরের উপ–পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, ঠাকুরগাঁও ধান উৎপাদনে বিখ্যাত জেলা। এবছর কৃষকদের আমন আবাদের লক্ষ্য মাত্র অর্জনে ও ভালো ফলনের জন্য আমন ক্ষেতে পার্চিং করা সহ পোকা দমনে যাবতীয় পরামর্শ ও সেবা দেয়া হয়েছে। আশাকরি ঠাকুরগাঁও জেলায় এবারও লক্ষমাত্রার অধিক উৎপাদন হবে এবং কৃষকরা ধানের ভালো দাম পেয়ে লাভবান হবে।