বগুড়া সদরের নামুজা ইউনিয়নের শোলাগাড়ী এলাকায় রাস্তার পাশে একটি মৃত মাদি হাতি পাওয়া গেছে। সোমবার রাতে কে বা কারা হাতিটি ফেলে দিয়ে যায়। মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত কেউ হাতির মালিকানা স্বীকার করেনি।
সদর থানা পুলিশ ও রাজশাহী থেকে আসা বন বিভাগের কর্মকর্তারা সৎকারের পরিকল্পনা করছিলেন।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মঙ্গলবার সকালে বগুড়া সদরের নামুজা ইউনিয়নের শোলাগাড়ী এলাকায় নামুজা–দুপচাঁচিয়া সড়কের পাশে একটি মৃত হাতির পড়ে ছিল। গায়ে ঘা ও রোগাক্রান্ত হাতির শরীর থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। হাতির পা শিকল দিয়ে রাস্তার পাশে গাছে বাঁধা ছিল।
খবর পেয়ে সদর থানার এসআই জাহিদ হোসেন ঘটনাস্থলে আসেন। তিনি বিষয়টি বন বিভাগকে অবহিত করেন। বিকাল পর্যন্ত কেউ হাতির মালিকানা স্বীকার করেননি। ধারণা করা হচ্ছে, মারা যাওয়ার পর ট্রাক থেকে হাতিটি ফেলে দেওয়া হয়েছে।
এলাকাবাসী বলছেন, নামুজা ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য রাকিবুল ইসলাম রানা আত্মীয় বান্দরবানের বাসিন্দা আজগরের কাছ থেকে হাতিটি ভাড়া নিয়েছেন। তিনি বগুড়ার শিবগঞ্জের দামগাড়ার এনামুল হক নামে এক মাউথের মাধ্যমে হাতি বিভিন্ন সার্কাস পার্টিকে ভাড়া দিয়ে থাকেন। সার্কাস পার্টি বন্ধ থাকলে এনামুল এ হাতি দিয়ে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি করেন।
বগুড়ার মহাস্থানের দি বুলবুল সার্কাস ও রাজমনি সার্কাসসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার সার্কাস পার্টি ভাড়া নিয়ে থাকে। সর্বশেষ কুষ্টিয়ায় এক সার্কাস পার্টিকে হাতি দেওয়া হয়েছিল। সেখান কাজ শেষে মাউথ এনামুল সোমবার হাতি ট্রাকে তুলে বগুড়ার দিকে রওনা দেন।
পথিমধ্যে অসুস্থ হাতিটি মারা যায়। তখন ট্রাক নিয়ে নামুজার চাঁদমুহায় রানার বাড়িতে আনা হয়। রানা হাতির দায়িত্ব নিতে অস্বীকৃতি জানালে মাউথ এনামুল শোলাগাড়ী এলাকায় এসে গাছের সঙ্গে শিকল দিয়ে হাতির পা বাঁধে। এরপর ট্রাক চালিয়ে গেলে হাতি রাস্তায় পড়ে যায়। এরপর মাউথ এনামুল ফোন বন্ধ করে চম্পট দেয়।
নামুজা ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য রাকিবুল ইসলাম রানা দাবি করেন, তিনি নন; এনামুল তার বান্দরবানের আত্মীয়ের কাছ থেকে হাতি ভাড়া নেয়। এ হাতির মালিক তার আত্মীয় হলেও তিনি এর সঙ্গে সম্পৃক্ত নন। হাতি অসুস্থ হয়ে মারা গেলে ওই এলাকায় ট্রাক থেকে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ফোন বন্ধ থাকায় হাতির মাউথ এনামুলের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
মঙ্গলবার বিকালে রাজশাহী থেকে আসা বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির জানান, একটা হাতি ১২৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। রাস্তার পাশে ফেলে দেওয়া মৃত মাদি হাতিটির বয়স ৮০ থেকে ৯০ বছর হবে। মৃত হাতিটি সৎকারের ব্যাপারে পুলিশ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে আলাপ–আলোচনা করছেন। দ্রুত সৎকার না করলে এলাকায় রোগ–জীবাণু ছড়াবে। বিকালে এ খবর পাঠানোর সময় মৃত হাতিটির ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে বড় গর্ত খুঁড়ে সৎকারের প্রস্তুতি চলছিল।