রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার পাহাড়ি জনপদে বন্যহাতির পাল প্রচ–ভাবে নিয়মিত তা–ব চালাচ্ছেন। এসব তা–ব থেকে এলাকার নিরীহ কৃষক, ক্ষেত মজুরগণ অর্থনৈতিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। এভাবে ক্ষতিগ্রস্ত চলমান থাকলে ক্ষেতমজুর ও কৃষকগণ তাদের পেশাগত কাজ গুটিয়ে ফেলবে বলে জানা গেছে। এসব হাতির পাল থেকে কৃষকদের রক্ষার জন্য বছরের পর বছর ধরে সরকারের কাছে অভিযোগ করে আসছেন।
এ ব্যাপারে সরকারিভাবে কোনো রকম দৃষ্টি গোচরে নেই। জানা যায়, গতকাল রাতে উপজেলার পদুয়া বন্য হাতির পালটি ওই পাহাড়ি অঞ্চলে হানা দিয়েছে। এসব স্থানে থাকা বসতিদের মধ্যে আতঙ্কিত অবস্থায় আছেন।
স্থানীয়রা জানান, সুখবিলাস গ্রামের একজন কৃষক ৫০ খানি জমিতে ধান চাষাবাদ করেন। ওইসব ধানগুলো বাজার এর সাথে শিলক খালের পাড়ের গুদামে মজুদ করেন। সেখানে তার খামার বাড়ী রয়েছে।
গতকাল রোববার গভীর রাতে হাতির পাল এসে গুদামে হানা দেয়। প্রায় ঘণ্টা ধরে তা–ব চালিয়েছেন হাতির পাল। প্রায় হাজার আড়ি ধান খেয়ে আরো অন্যগুলি নষ্ট করে ফেলে। এছাড়া হাতি খামারে থাকা গাছ, বেড়াসহ ব্যাপক ভাঙচুর করে। এতে বেশ কিছু হাস–মুরগীও মারা যায়। পূর্বেও উক্ত খামারে কয়েকবার বন্য হাতি তা–ব চালিয়ে বারবার ক্ষতি করেছে বলে ওইসব কৃষকগণ অভিযোগ করেন।
পদুয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয়রা জানান, পদুয়ায় তা–ব চালানো ওই সন্ত্রাসী বন্যহাতির পালটি পাহাড়ের গহীন অরণ্যে থাকেন। প্রতিদিন যে কোনো মহল্লায় পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করে তারা।
স্থানীয় কৃষক মো. রফিক জানান, দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার পাহাড়ে থাকা মহল্লাবাসিরা জানান, আমাদের সব সময় ভয়ে থাকি কোনো সময় হাতি পালটি আক্রমণ চালাবে। প্রতিদিন আমরা আতঙ্কিত থাকি কোনো সময় পালটি আক্রমণ করে।
দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ার এসব পাহাড়ে বসবাসরতরা বলেন, প্রতি সিজনে ধান কাটার মৌসুমে আক্রমণ বেশি করে থাকে। সরফভাটা, কোদালা চা বাগান, পদুয়াসহ বিভিন্ন এলাকার লোকালয়ে খাবারের সন্ধানে বন্য হাতির পাল হানা দেয় বলে স্থানীয়রা জানান। লোকালয়ে হাতির পালের এমন তা–বে প্রতিবছর কৃষক ও পথচারিদের প্রাণহানিসহ ফসল ও সম্পদের নানা ক্ষতি হচ্ছে দক্ষিণ রাঙ্গুনিয়ায়। এতে হাতির প্রতি মানুষের আক্রমণাত্মক মানসিকতার সৃষ্টি হচ্ছে।
এ ব্যাপারে বন বিভাগের খুরুশিয়া রেঞ্জের কর্মকর্তা মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, বন্যহাতির আক্রমণ থেকে জান–মাল বাঁচাতে এবং হাতি–মানুষের দ্বন্দ্ব কমাতে আমাদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। পদুয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের খামারে রাতেই আমরা পরিদর্শন করেছি। সে যেনো ক্ষতিপূরণ পায় সেই ব্যাপারে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছি। এলাকায় বসবাসর জনসাধারণকে হাতির আক্রমণ ঠেকাতে বন্যহাতির দলকে উত্ত্যক্ত না করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।