ভাঙ্গা উপজেলার চুমুরদী ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী নামক স্থানে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পাশে ২৫ থেকে ৩০ বিঘা জমিতে আবাদ হয়েছে বাঙ্গির। মাঠ জুড়ে প্রচুর বাঙ্গি লক্ষ্য করা গেছে । ভাঙ্গা উপজেলার সদরদীর বাঙ্গি এ অঞ্চলের মানুষদের কাছে খুবই বিখ্যাত। খেতেও সুস্বাদু।
ভাঙ্গা ছাড়াও এসব বাঙ্গি পার্শ্ববর্তী মাদারীপুর, ফরিদপুর ,শরীয়তপুর এবং গোপালগঞ্জে ব্যাপকভাবে বিক্রি হচ্ছে। ওই অঞ্চলের বিক্রেতারা খেত থেকে প্রতিদিন সকালে এসব বাঙ্গি সংগ্রহ করছেন। তারা স্তুপিকৃত বাঙ্গি দরাদরি করে কৃষকদের নিকট থেকে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। কেউবা বাঙ্গি খেত কিনে ফেলেছেন। ফরিদপুরের সদর উপজেলার মহিলা রোডের ব্যবসায়ী শাকিব মিয়া জানান, তিনি বাছাই করে ২০০ বাঙ্গি ১২০০০ টাকায় কিনেছেন।
মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার টেকেরহাটের ব্যবসায়ী সাইদুল এবং হেদায়েত খেত থেকে বাঙ্গি কেনার জন্য ভাঙ্গার সদরদী এসেছিলেন। তারা জানান, ভাঙ্গার বাঙ্গি খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। ক্রেতারা ভাঙ্গার বাঙ্গি খুঁজতে থাকে। ভাঙ্গার বাঙ্গি পেলে তারা দর কষাকষি করে না। তারা বলেন, আমরা প্রতিদিন এখান থেকে বাঙ্গি কিনে নিয়ে মাদারীপুরের টেকেরহাট, রাজৈর এবং গোপালগঞ্জ সদরের বিভিন্ন হাটে বিক্রি করে থাকি।
বাঙ্গি মাঠ থেকে সংগ্রহ করে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের পূর্ব সদরদী বাস স্ট্যান্ড থেকে ২০০গজ দূরে রাস্তার পাশে বসে বিক্রি করেন কৃষকেরা। এ সময় দেখা যায় গাড়ি থামিয়ে অনেকেই বাঙ্গি কেনার জন্য ভিড় জমান। তারা জানান, খেতের টাটকা বাঙ্গি কেনার জন্য এবং স্বল্প দামে বিক্রির কারণে তারা এখান থেকে কিনে থাকেন।ভাঙ্গার সদরদী গ্রামের কৃষক সালাম বেপারী বলেন, তিনি এ বছর ২৫ শতাংশ জমিতে বাঙ্গি চাষ করেছেন। তিনি বলেন, কার্তিক মাসের শেষে চাষ শুরু হয়।
পরিপূর্ণতা পায় ফাল্গুন- চৈত্র মাসে। বাঙ্গি উৎপাদনে খরচ খুব বেশি হয় না। তবে মাঠে প্রচুর পরিমাণ পানি দিতে হয়। একই গ্রামের কাদের বেপারী ৫৪ শতাংশ জমিতে, সোহাগ বেপারী ২৪ শতাংশ জমিতে আব্দুল হাই মাতুব্বর দুই বিঘা সাজ্জাদ বেপারী ৩২ শতক, মাসুদ সেখ তিন বিঘা জমিতে বাঙ্গি চাষ করেছেন। তারা বলেন ,বাঙ্গি খেতে কালো সার এবং লাল সার প্রয়োগ করতে হয়। কিছু কীটনাশক দিতে হয়। তবে উৎপাদন খরচের চেয়ে লাভ অনেক বেশি।
এ বছর বাঙ্গির ব্যাপক উৎপাদন সত্ত্বেও শেষ সময়ে এসে বৃষ্টিতে আমাদের ক্ষতি হয়েছে। জানা যায় ২০ থেকে ২২ বছর পূর্বে এ অঞ্চলে বাঙ্গি চাষ শুরু হয়। তখন থেকে প্রতি বছর বাড়ছে বাঙ্গি চাষ।
সরেজমিনে সম্প্রতি সদরদী বাঙ্গি খেতে গিয়ে দেখা যায়, কৃষকেরা ঝাঁকা ভরে খেত থেকে বাঙ্গি তুলে রাস্তায় নিয়ে আসছেন। তবে প্রচুর পরিমাণ বাঙ্গি ফেটে যাওয়া অবস্থায় দেখতে পাওয়া যায়।তারা বলেন, আমাদের বাঙ্গি বিক্রি করতে দূরে যেতে হয় না। ব্যবসায়ীরা আমাদের এখান থেকেই কিনে নেয়। রমজান মাসে বাঙ্গি পেকে যাওয়ায়- ব্যাপক চাহিদা বেড়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে তাদের চোখে হতাশার ছাপ লক্ষ্য করা যায়। ব্য
বসায়ী সাইদুল ইসলাম জানান, আমরা পুরো খেতের অগ্রিম টাকা দিয়ে কৃষকের কাছ থেকে কিনেছিলাম ।কিন্তু বৃষ্টির কারণে আমাদের ব্যবসার ক্ষতি হবে।
এ প্রসঙ্গে ভাঙ্গা উপজেলা কৃষি অফিসার সুদর্শন শিকদার বলেন, ভাঙ্গায় সীমিত আকারে বাঙ্গি চাষ হচ্ছে। বৃষ্টিতে কৃষকদের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।