রাশিয়া বিশ্বকাপের পর কাতার বিশ্বকাপেও ফাইনালের টিকিট কাটে ফ্রান্স।
কিন্তু এবার শিরোপার লড়াইয়ে আর্জেন্টিনার কাছে হেরে যায় দিদিয়ের দেশমের দল।
২০২২ বিশ্বকাপের পরই আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় জানান ফ্রান্সের অধিনায়ক
এবং গোলরক্ষক হুগো লরিস। এরপর থেকেই গণমাধ্যমে গুঞ্জন ছিল দলটির নেতৃত্বভার
পেতে যাচ্ছেন তরুণ প্রতিভাবান ফরোয়ার্ড কিলিয়ান এমবাপে। অবশেষে সেই
গুঞ্জনই বাস্তবতার মুখ দেখতে যাচ্ছে। আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না এলেও কিলিয়ান
এমবাপের কাঁধেই পড়ছে ফ্রান্স দলের ভার।
আগামী ২৫ মার্চ হল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে শুরু হতে যাচ্ছে ফ্রান্সের
ইউরো বাছাইপর্ব। আর এ ম্যাচ দিয়েই নতুন অধিনায়কের যুগে প্রবেশ করবে
ফরাসিরা। তাই বুধবার সংবাদ সম্মেলনে স্বাভাবিকভাবেই এসেছিল অধিনায়কত্ব
প্রসঙ্গ। সেখানেই দেশটির বিশ্বকাপজয়ী কোচ দিদিয়ের দেশম বলেন, ‘অনুশীলনের
প্রথম কয়েক দিন আমি এই বিষয়ে ফুটবলারদের সঙ্গে কথা বলব। অবশ্যই কিলিয়ান
(এমবাপে) সেই ফুটবলারদের মধ্যে একজন। পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে আমি বিষয়টা
সম্পর্কে আরও ধারণা দিতে পারব। আরেকটু স্পষ্ট করে বললে ম্যাচের আগের দিন
বৃহস্পতিবার।’
ফ্রান্স কিংবা দেশম স্পষ্ট না করলেও সংবাদ সংস্থা এএফপি সাফ জানিয়ে দিয়েছে-
এমবাপেই হতে যাচ্ছে ফ্রান্সের নতুন অধিনায়ক। পিএসজিতে এখন সহ-অধিনায়কের
ভূমিকা পালন করছেন এমবাপে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ফুটবলের বিরতির আগে সর্বশেষ
ম্যাচে পিএসজিকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তিনি। মূলত নিয়মিত অধিনায়ক মারকুইনহোসের
অনুপস্থিতির কারণেই রবিবার রেনেসের বিপক্ষে দায়িত্বের ভার পড়েছিল তার
কাঁধে। তবে প্যারিস জায়ান্টদের নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতাটা মোটেও সুখকর
হয়নি।
কিন্তু ফ্রান্সের অধিনায়কত্ব পাওয়ার ক্ষেত্রে যে এই অভিজ্ঞতা খুব বেশি
কাজে আসবে না, সেটা দেশমের কথাতেই একদম সুস্পষ্ট। হুগো লরিসের নেতৃত্বেই
২০১৮ সালে রাশিয়া বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ফ্রান্স। তার নেতৃত্বে ২০২২
বিশ্বকাপেও শিরোপা জয়ের খুব কাছাকাছি চলে গিয়েছিল তারা। সেই বিশ্বকাপের পর
চলতি বছরের শুরুতেই আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে বিদায় নেন তিনি। তার জায়গায়
ফ্রান্স জাতীয় দলের নেতৃত্ব পাচ্ছেন এমবাপে। সোমবার বার্তা সংস্থা এএফপি
ফ্রান্স দলের ঘনিষ্ঠ এক সূত্রের বরাতে এই খবর প্রকাশ করেছে।
তারা জানায়, কোচ দিদিয়ের দেশমের সঙ্গে আলোচনার পর ২৪ বছর বয়সী এমবাপে
অধিনায়কত্বের প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। অধিনায়কের পাশাপাশি দলের জন্য একজন
সহ-অধিনায়কও ঠিক করেছে ফ্রান্স। ফরোয়ার্ড অ্যান্থনি গ্রিজম্যান পেয়েছেন
অবসর নেওয়া রাফায়েল ভারানের সেই দায়িত্ব।
দেশের হয়ে ৬৬ ম্যাচ খেলেছেন এমবাপে। ২০১৮ বিশ্বকাপ জেতার পথে বড় অবদান ছিল
তার। সেবার করেছিলেন ৪ গোল। ২০২২ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ ৮ গোল করে জিতে
নিয়েছেন গোল্ডেন বুট। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ফাইনালে হ্যাটট্রিকেরও
অবিস্মরণীয় কীর্তি গড়েছিলেন তিনি। দুই বিশ্বকাপেই ১২ গোল করা এমবাপের সামনে
আগামীতে সুযোগ আছে সব রেকর্ড নিজের করে নেওয়ার।
আসলে বিশ্বকাপে উল্কার গতিতে ছুটঠেন এমবাপে। নিজের দ্বিতীয় বিশ্বকাপেই
১২ গোল করে ফেলেছেন তিনি। তার সামনে রয়েছেন আর মাত্র পাঁচ জন। যে গতিতে
পিএসজির এই ফরাসি তারকা এগোচ্ছেন তাতে হয়তো পরের বিশ্বকাপেই সবাইকে ছাপিয়ে
যাবেন। হয়ে যাবেন বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ গোলদাতা। বিশ্বকাপে গোলদাতাদের
তালিকায় পেলের সঙ্গে যৌথভাবে পঞ্চম স্থানে রয়েছেন এমবাপে।