সারা বিশ্বের মানুষের ভোগান্তির কথা তুলে ধরে যত দ্রুত সম্ভব
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসকে বিশেষ
উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার কাতার
ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে (কিউএনসিসি) জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠকে শেখ
হাসিনা এ আহ্বান জানান।
পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। মন্ত্রী জানান, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবকে বিশেষ উদ্যোগ নিতে বলেছেন। জাতিসংঘ মহাসচিবকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধের ফলে আমাদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। বিশেষ করে স্যাংশনের কারণে জিনিসপত্র ঠিকমতো না আসায় দেশে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে। এতে মানুষের অনেক কষ্ট হচ্ছে। দুনিয়াজুড়ে মানুষের কষ্ট হচ্ছে। তাই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব যুদ্ধ বন্ধ করা দরকার।
শেখ হাসিনা বলেন, যুদ্ধ তাড়াতাড়ি শেষ হলে দেশের জন্য, দশের জন্য মঙ্গল হবে। রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার এক বছরের বেশি সময় ধরে চলমান এই যুদ্ধের কারণে যারা বেশি লাভবান হচ্ছেন, তাদের উচিত যুদ্ধে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন সেই সব দেশকে সাহায্য করা। এর আগে দোহায় স্বল্পোন্নত দেশসমূহের পঞ্চম জাতিসংঘ সম্মেলনে (এলডিসি-৫) যোগ দিতে কাতার পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে দোহার হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে শনিবার সোয়া ১১টার দিকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর
থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি-৩২৫ ভিভিআইপি ফ্লাইটে দোহার উদ্দেশে
ঢাকা ছাড়েন প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দরে কাতার সরকারের উচ্চপর্যায়ের
প্রতিনিধি এবং দোহায় নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. নজরুল ইসলাম শেখ
হাসিনাকে স্বাগত জানান। বিমানবন্দর থেকে প্রধানমন্ত্রী সফরকালীন আবাসস্থলে
যান। পরে বিকেলে আবাসস্থল থেকে তিনি কাতার ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে যান।
সফরের প্রথম দিনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ছাড়াও জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনের প্রেসিডেন্ট সাবা কোরোসি এবং ইউএনডিপির প্রশাসক অসিম স্টেইনার বৈঠক করবেন। সফরের দ্বিতীয় দিন ৫ মার্চ প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনে বিশেষ আমন্ত্রিত বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেবেন। এ অধিবেশনে জাতিসংঘের মহাসচিব, সাধারণ পরিষদের সভাপতি ও এলডিসি গ্রুপের বর্তমান চেয়ার মালাউইর প্রেসিডেন্টও বক্তব্য রাখবেন।
এ ছাড়া স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পথে থাকা তিন এশীয় দেশ-বাংলাদেশ, নেপাল ও লাওস পিডিআর কর্তৃক আয়োজিত অনুষ্ঠানেও বক্তব্য দেবেন শেখ হাসিনা। এ ছাড়া এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি, রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তৃতীয় দিন ৬ মার্চ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত বিজনেস সামিট, আঞ্চলিক দূত সম্মেলনে অংশ নেবেন।
এদিন শেখ হাসিনা মালয়ের প্রেসিডেন্ট লাজারাস মাকারথির সঙ্গে বৈঠক করবেন। চতুর্থ দিন ৭ মার্চ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে অংশগ্রহণ বাড়ানোর ওপর গোলটেবিল বৈঠক, স্মার্ট বাংলাদেশ সম্পর্কিত অনুষ্ঠান, কাতার প্রবাসী বাংলাদেশী নাগরিকদের আয়োজিত কমিউনিটি ইভেন্টে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী। কাতার সফর শেষে ৮ মার্চ স্থানীয় সময় সকালে দোহা থেকে রওনা হয়ে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে ঢাকায় ফিরবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে রয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।