বৃন্তচ্যুত ফুলগুলো যেমন আস্তাকুড়ে অথবা জলস্রোতে নিজেদের ইচ্ছার বিপরীতে চলতে থাকে, চলতে বাধ্য, তেমনই মাবুদের সাথে বিদ্রোহ ঘোষণাকারি মানুষগুলো আসলেই নিদারুন অসহায়, আর সে কারণেই নিজেদের সুপ্রতিষ্ঠিত ভবিষ্যতের প্লাটফর্ম বিনির্মাণে নিয়ত, নিজেদের ক্ষুদে শক্তি-বল-মেধা ও কল্পনার নিরিখে চলতে থাকে, চলতে বাধ্য, যার যথার্থ প্রমাণ পাবেন তাদের নিত্যদিনের কর্মকান্ডের প্রতি নজর দিলে। খোদা তো কোনো মাস, কাল, বৎসর নিরুপন করে দেন নি। দিনপঞ্জি মানুষের হাতে হয়েছে নির্মিত। আর তা দুটি ভাগে বিভক্ত: সৈর বৎসর আর চান্দ্র বৎসর। ইংরেজিতে বলা হয় Solar Year and lunar year যার অর্থ হল, সূর্যের গতিবিধির উপর নির্ভর করে এ সময়-কাল হয়েছে রচিত, আর অন্যপক্ষ চন্দ্রের গতিবিধির উপর নির্ভরশীল। তথাপি উভয়কালই সন্দেহাতীতভাবে কল্পনা প্রসূত। যেমন বাংলা ভাষায় বৈশাখ-চৈত্র যা বঙ্গাব্দ নামে পরিচিতি। খৃষ্টাব্দ হলো দুটি ভাগে বিভক্ত, খৃষ্টপূর্ব আর খৃষ্টের আবির্ভাবের সময় কাল ধরে যে শাল গণনা করা হয় তা হলো খৃষ্টাব্দ নামে পরিচিত। জানুয়ারী-ডিসেম্বর। তাছাড়া ঋতু গণনা এশিয়া ও ইউরোপে অনেকটা ভিন্ন। যেমন বাংলায় হলো ষড় ঋতু যেমন গ্রীষ্ম, বর্ষা, শরৎ, হেমন্ত, শীত ও বসন্ত। আর ইউরোপে Spring, Summer, Autumn, Winter অর্থাৎ বসন্ত, গ্রীষ্ম, শরৎ ও শীতকাল। এ সকল কাল বিভক্তি কোনো চুলচেড়া বিভাগ নয়, যেমন সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় এক একটা এলাকা থেকে আর একটা এলাকায় সময়ের ব্যবধান মিনিটে মিনিটে ঘটে চলে কেবল দাঘিমার উপর নির্ভর করে আর উক্ত বিভক্তি মানুষের কল্পনা প্রসূতঃ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সময়ের ব্যবধান হলো ত্রিশ মিনিটের ব্যবধান। লন্ডন ও বাংলাদেশ ৬ ঘন্টার ব্যবধান। সৌদি আরব ও বাংলাদেশ ৩ঘন্টার তাই সময়ের এ বিভক্তি মানুষের হাতেই হয় পরিচালিত আর তা নেহায়েত কল্পনা প্রসূত। আপনি কখন মুখ খুলবেন আর কখন পানাহার বন্ধ করবেন তা কেবল আপনার ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর নির্ভর করে, তাতে মহান মাবুদের কিছুই এসে যায় না। কেননা মাবুদের অবস্থান তো আপনার হৃদয়ের মনিকোঠায়। তাছাড়া তাঁর উপর বিশ্বাস বা ঈমান তো কোনো খাদ্যদ্রব্যের উপর নির্ভর করতে পারে না। খোদার উপর বিশ্বাস একটি অভৌতিক, অশরীরি, অবস্তুগত বিষয়, আর খোদা হলেন রুহ ও সত্য, মহব্বত, ক্ষমাধন ও আশির্বাদের সীমাহীন পারাবার। তিনি যদিও অভৌতিক তবু তাঁর নিয়ন্ত্রনে নিয়ন্ত্রিত রয়েছে গোটা বিশ্বচরাচর। তিনিই তো গোটা বিশ্বের নির্মাতা, আর মানুষ নির্মিত হয়েছে কেবল তারই সুরতে, তাঁর প্রতিনিধিত্ব করণার্থে।
দুঃখজনক হলেও সত্য, সেই আদুরে সৃষ্টি বৃন্তচ্যুত পুষ্পসম আস্তাকুড়ে পড়ে আছে, কতিপয় কালের স্রোতে গড্ডালিকা প্রবাহে ঠিকানাবিহীন অবস্থায় ছুটে চলছে নিয়ত।
আমাদের আলোচ্য বিষয় হল মাস-কাল-গণনা। আমরা যেভাবেই তা গণনা করি না কেন তাতে মাবুদের কিছুই এসে যায় না। তিনি আমাদের প্রত্যেককে এক একটা সময় বা আয়ুষ্কাল নিরুপণ করে রেখেছেন আর উক্ত সময়টুকু ফুরিয়ে যাবার সাথে সাথে আমরাও ফুরুত করে উড়ে যাবো পূর্ণতা প্রাপ্তির লক্ষ্যে, কেননা মাবুদ নিজেই আদমের নাশিকায় যে প্রাণ বায়ু ফুকে দিলেন তার কারলেন মাটির আদম জীবন্ত মানুষে হলেন পরিণত। আমরা প্রত্যেকে এক একটি ঐশি রূহ লাভ করেছি আমাদের ক্ষয়িষ্ণু মাটির দেহে; যতদিন উক্ত খোদার রূহ আমাদের মধ্যে বসবাস করতে থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত দেহটি থাকে খোদার সাথে যুক্ত আর আমাদের কাজকর্ম কিয়দংশে খোদার সাথে সম্পৃক্ততা প্রমাণ করে। তবে দুঃখজনক হলো, আমরা সকলে প্রথম মানুষটির স্খলনের সাথে সাথে হয়ে আছি স্খলিত, অর্থাৎ বৃন্তচ্যুত, কবলিত হয়ে আছি খোদার অবাধ্য ও দুষমণ অভিশপ্ত ইবলিসের কবলে, যে কারণে খোদার পক্ষে মানানসই কাজ না করে, নিয়ত ঘটিয়ে চলেছি লাগ্নিক পূজা পার্বন, যা কেবল ইবলিসের প্রতারণা মাত্র, আমাদের অতঃসার শুন্য ধার্মিকতার নামে নজরবন্দি করে রাখা হয়েছে।
খোদা হলেন অন্তর্যামি, সর্বশক্তিমান, সর্বত্র বিরাজমান এক মহানসত্ত¡া, যাকে আমাদের সীমিত মেধামননের মধ্যে পুরে রাখা সম্ভব নয়, বরং তিনিই আমাদের আদ্যাপন্ত সব কিছু বুঝতে পারেন, আর তিনি আমাদের অগ্র-পশ্চাৎ ঘিরে রেখেছেন বিধায় আমরা বেঁচে আছি। তিনি আমাদের যে পরামর্শ দিয়েছেন তাঁর মধ্যে জীবন-যাপন করার নিমিত্তে তা হলো, আমরা যেন শততঃ তাকে স্মরণে রেখে তারই মহিমাপূর্ণ কাজ কর্মে লিপ্ত থাকি যা হবে তাঁর মনোনীত উপযুক্ত এবাদত।
তিনি মানুষের কল্যাণ কামনা করেন; সে সুবাদে আমাদের উচিৎ হবে গণমানুষের সেবা দান, বয়ে আনা তাদের কল্যাণ, ক্লান্তিহীনভাবে আজ আমাদের মানব কল্যাণে নিবেদিত থাকাই হবে খোদার উপযুক্ত সেবাদান। এ প্রসঙ্গে খোদা আমাদের যে শিক্ষা দিয়েছেন তা হলো, প্রদীপ যেমন নিয়ত জ্বলে থাকে অন্ধকার বিনাশনের ক্ষাতিরে তদ্রুপ ইবলিসের তাবৎ কর্মকান্ড স্তব্ধ করার জন্য আমাদেরও সদা-সর্বদা সজাগ সচেতন থাকতে হবে। কেননা গর্জনকারী সিংহের মতো ইবলিস সারাক্ষণ ওঁত পেতে আছে, কাকে কোন ফাঁকে গ্রাস করার সুযোগ পেয়ে বসে। তাই ওয়াক্তে ওয়াক্তে সচেতন থাকা নয়, সজাগ থাকতে হবে অতন্দ্র পহরীবৎ দিবানিশি। বর্তমানকার ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানগুলো রচিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে সময় কালের উপর নির্ভর করে। চন্দ্র-সূর্যের আবর্তের ফাঁকে ফাঁকে সর্বত্র বিরাজমান সর্বশক্তিমান মাবুদের বন্দনা করা কতই না হাস্যকর, এ যেন মেঘের ফাঁকে চন্দ্রদর্শন। মাবুদ চন্দ্র-সূর্যের নির্মাতা যা তিনি নিজেই নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। মানুষের হাতে তিনি তুলে দিয়েছেন সকল সৃষ্টি শাসন করার ক্ষমতা ও এদের থেকে সেবা পাবার অধিকার। খোলস থেকে বেরিয়ে আসার পরেই সম্ভব পাখির ছানার পক্ষে আকাশে উড়ে বেড়ানো। বীজ অঙ্কুরোদ্গমের পরেই দেখতে পায় আলোর মুখ, পরিণত হতে পারে বিশাল মহীরুহে। বেহেশত থেকে প্রথম মানুষ আদম (আ.) এর বিতাড়িত হবার সাথে সাথে গোটা বিশ্ববাসি আজ বিতাড়িত, হারিয়ে ফেলেছে ঐশিদত্ত অধিকার, প্রজ্ঞা, ধার্মিকতা সার্বিক ক্ষমতা, যে কারণে চন্দ্র-সূর্যের ভয়ে থাকে সদাই ভিত। যেমন সূর্য দেখা গেলে আর খোদার এবাদত চলতে পারে না, অথবা সূর্য মাথার উপর এসে পড়লে খোদার এবাদত হয়ে গেল নিষিদ্ধ! হায়রে ধর্মান্ধ! চোখের উপর পর্দা না কাটা পর্যন্ত তোমরা প্রকৃত সত্যের মুখো মুখি হতে পারবে না তা রয়েছে মাবুদের জানা।
তাইতো তিনি দয়াপরবশ হয়ে এক বিশেষ ‘আইক্যাম্প’ খুলে দিলেন; যে কেউ উক্ত ক্যাম্পের মধ্যে প্রবেশ করে সেই লাভ করে স্পষ্ট দেখার অভিজ্ঞতা, অর্থাৎ তার চোখ থেকে খসে গেছে কুসংস্কারের যাবতীয় কালো পর্দা। উক্ত ব্যক্তিকে ভুল পথে পরিচালনা করার কোনোই ক্ষমতা আর থাকলো না ইবলিসের হাতে। খোদার সেবার জন্য তাকে আর দেয়ালপঞ্জির উপর অথবা মনুষ্য রচিত নিনপঞ্জির উপর নির্ভর করতে হচ্ছে না। খোদার সাথে যোগাযোগ সম্পর্ক স্থাপন করা হলো তার হৃদয় ঘটিত বিষয়, তৃষ্ণা পেলে বুকের স্তণ্যপায়ী শিশু যেমন মুখ ব্যাদান করে স্তনবোটা খুঁজতে থাকে, ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিও তদ্রুপ প্রয়োজন মোতাবেক তাঁর মাবুদের স্মরণ ও শরণ নিতে থাকে। আর সে কারণেই ইউনুস নবী মাছের পেটে নোংরা, ক্লেদাক্ত, বিশ্রি দুর্গন্ধে ভরা অবস্থায় খোদার কাছে বিপদ মুক্তির জন্য ফরিয়াদ জ্ঞাপন করেছেন! কেউবা বলে এটি একটি দোয়া। কঠিন বিপদে পড়ে তারা উক্ত দোয়াটি পড়তে থাকে। ‘লাইলাহা ইলা আনতা ছুবহানাকা ইন্নিকুন্তু মিনাজযোয়ালেমিন’ যার অর্থ হলো, তুমি ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই, তুমিই পবিত্র, আর কেবল তোমারই কাছে আমার বিপন্নদশা থেকে মুক্তি কামনা করি। ইউনুস নবী অবাধ্য অবস্থায় খোদার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভেগে যাচ্ছিলেন, তখন তাকে জাহাজ থেকে ফেলে দেয়া হয়েচিল, আর অমনি অতিকায় একটা মাছ তাকে আস্ত গিলে ফেললো। উক্ত বিপন্ন দশায় তাঁর এমন কাতর উক্তি, যাকে আর এক কথায় ‘তওবাতুননসুহা’ বলা হলে কমানো বাড়ানো হবে না। নসুহাও এমন কাজ করে বসেছিল যা ধরা খেলে নির্ঘাত ছিল মুন্ডপাতের শাস্তি প্রাপ্য। যাকগে, খোদাকে ডাকার জন্য লগ্ন আবার কোন পূজায় লাগে বলুন। আপনি শততঃ তাঁকে ডাকতে থাকুন, তিনি হৃষ্টচিত্তে আপনার ডাকে নিশ্চয়ই সাড়া দিবেন। অন্তযামি মাবুদ আপনার হৃদয়ের অবস্থা দেখতে পান, তবে ধর্মের ধ্বজাধারি ষণ্ডাপান্ডা তা বুঝতে পারে না, তাদের চাই বাহিৃক প্রমান শুধু বাণিজ্যিক স্বার্থের প্রয়োজনে।
দুঃখজনক হলেও সত্য, সেই আদুরে সৃষ্টি বৃন্তচ্যুত পুষ্পসম আস্তাকুড়ে পড়ে আছে, কতিপয় কালের স্রোতে গড্ডালিকা প্রবাহে ঠিকানাবিহীন অবস্থায় ছুটে চলছে নিয়ত।
আমাদের আলোচ্য বিষয় হল মাস-কাল-গণনা। আমরা যেভাবেই তা গণনা করি না কেন তাতে মাবুদের কিছুই এসে যায় না। তিনি আমাদের প্রত্যেককে এক একটা সময় বা আয়ুষ্কাল নিরুপণ করে রেখেছেন আর উক্ত সময়টুকু ফুরিয়ে যাবার সাথে সাথে আমরাও ফুরুত করে উড়ে যাবো পূর্ণতা প্রাপ্তির লক্ষ্যে, কেননা মাবুদ নিজেই আদমের নাশিকায় যে প্রাণ বায়ু ফুকে দিলেন তার কারলেন মাটির আদম জীবন্ত মানুষে হলেন পরিণত। আমরা প্রত্যেকে এক একটি ঐশি রূহ লাভ করেছি আমাদের ক্ষয়িষ্ণু মাটির দেহে; যতদিন উক্ত খোদার রূহ আমাদের মধ্যে বসবাস করতে থাকে ততক্ষণ পর্যন্ত দেহটি থাকে খোদার সাথে যুক্ত আর আমাদের কাজকর্ম কিয়দংশে খোদার সাথে সম্পৃক্ততা প্রমাণ করে। তবে দুঃখজনক হলো, আমরা সকলে প্রথম মানুষটির স্খলনের সাথে সাথে হয়ে আছি স্খলিত, অর্থাৎ বৃন্তচ্যুত, কবলিত হয়ে আছি খোদার অবাধ্য ও দুষমণ অভিশপ্ত ইবলিসের কবলে, যে কারণে খোদার পক্ষে মানানসই কাজ না করে, নিয়ত ঘটিয়ে চলেছি লাগ্নিক পূজা পার্বন, যা কেবল ইবলিসের প্রতারণা মাত্র, আমাদের অতঃসার শুন্য ধার্মিকতার নামে নজরবন্দি করে রাখা হয়েছে।
খোদা হলেন অন্তর্যামি, সর্বশক্তিমান, সর্বত্র বিরাজমান এক মহানসত্ত¡া, যাকে আমাদের সীমিত মেধামননের মধ্যে পুরে রাখা সম্ভব নয়, বরং তিনিই আমাদের আদ্যাপন্ত সব কিছু বুঝতে পারেন, আর তিনি আমাদের অগ্র-পশ্চাৎ ঘিরে রেখেছেন বিধায় আমরা বেঁচে আছি। তিনি আমাদের যে পরামর্শ দিয়েছেন তাঁর মধ্যে জীবন-যাপন করার নিমিত্তে তা হলো, আমরা যেন শততঃ তাকে স্মরণে রেখে তারই মহিমাপূর্ণ কাজ কর্মে লিপ্ত থাকি যা হবে তাঁর মনোনীত উপযুক্ত এবাদত।
তিনি মানুষের কল্যাণ কামনা করেন; সে সুবাদে আমাদের উচিৎ হবে গণমানুষের সেবা দান, বয়ে আনা তাদের কল্যাণ, ক্লান্তিহীনভাবে আজ আমাদের মানব কল্যাণে নিবেদিত থাকাই হবে খোদার উপযুক্ত সেবাদান। এ প্রসঙ্গে খোদা আমাদের যে শিক্ষা দিয়েছেন তা হলো, প্রদীপ যেমন নিয়ত জ্বলে থাকে অন্ধকার বিনাশনের ক্ষাতিরে তদ্রুপ ইবলিসের তাবৎ কর্মকান্ড স্তব্ধ করার জন্য আমাদেরও সদা-সর্বদা সজাগ সচেতন থাকতে হবে। কেননা গর্জনকারী সিংহের মতো ইবলিস সারাক্ষণ ওঁত পেতে আছে, কাকে কোন ফাঁকে গ্রাস করার সুযোগ পেয়ে বসে। তাই ওয়াক্তে ওয়াক্তে সচেতন থাকা নয়, সজাগ থাকতে হবে অতন্দ্র পহরীবৎ দিবানিশি। বর্তমানকার ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানগুলো রচিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে সময় কালের উপর নির্ভর করে। চন্দ্র-সূর্যের আবর্তের ফাঁকে ফাঁকে সর্বত্র বিরাজমান সর্বশক্তিমান মাবুদের বন্দনা করা কতই না হাস্যকর, এ যেন মেঘের ফাঁকে চন্দ্রদর্শন। মাবুদ চন্দ্র-সূর্যের নির্মাতা যা তিনি নিজেই নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। মানুষের হাতে তিনি তুলে দিয়েছেন সকল সৃষ্টি শাসন করার ক্ষমতা ও এদের থেকে সেবা পাবার অধিকার। খোলস থেকে বেরিয়ে আসার পরেই সম্ভব পাখির ছানার পক্ষে আকাশে উড়ে বেড়ানো। বীজ অঙ্কুরোদ্গমের পরেই দেখতে পায় আলোর মুখ, পরিণত হতে পারে বিশাল মহীরুহে। বেহেশত থেকে প্রথম মানুষ আদম (আ.) এর বিতাড়িত হবার সাথে সাথে গোটা বিশ্ববাসি আজ বিতাড়িত, হারিয়ে ফেলেছে ঐশিদত্ত অধিকার, প্রজ্ঞা, ধার্মিকতা সার্বিক ক্ষমতা, যে কারণে চন্দ্র-সূর্যের ভয়ে থাকে সদাই ভিত। যেমন সূর্য দেখা গেলে আর খোদার এবাদত চলতে পারে না, অথবা সূর্য মাথার উপর এসে পড়লে খোদার এবাদত হয়ে গেল নিষিদ্ধ! হায়রে ধর্মান্ধ! চোখের উপর পর্দা না কাটা পর্যন্ত তোমরা প্রকৃত সত্যের মুখো মুখি হতে পারবে না তা রয়েছে মাবুদের জানা।
তাইতো তিনি দয়াপরবশ হয়ে এক বিশেষ ‘আইক্যাম্প’ খুলে দিলেন; যে কেউ উক্ত ক্যাম্পের মধ্যে প্রবেশ করে সেই লাভ করে স্পষ্ট দেখার অভিজ্ঞতা, অর্থাৎ তার চোখ থেকে খসে গেছে কুসংস্কারের যাবতীয় কালো পর্দা। উক্ত ব্যক্তিকে ভুল পথে পরিচালনা করার কোনোই ক্ষমতা আর থাকলো না ইবলিসের হাতে। খোদার সেবার জন্য তাকে আর দেয়ালপঞ্জির উপর অথবা মনুষ্য রচিত নিনপঞ্জির উপর নির্ভর করতে হচ্ছে না। খোদার সাথে যোগাযোগ সম্পর্ক স্থাপন করা হলো তার হৃদয় ঘটিত বিষয়, তৃষ্ণা পেলে বুকের স্তণ্যপায়ী শিশু যেমন মুখ ব্যাদান করে স্তনবোটা খুঁজতে থাকে, ধর্মপ্রাণ ব্যক্তিও তদ্রুপ প্রয়োজন মোতাবেক তাঁর মাবুদের স্মরণ ও শরণ নিতে থাকে। আর সে কারণেই ইউনুস নবী মাছের পেটে নোংরা, ক্লেদাক্ত, বিশ্রি দুর্গন্ধে ভরা অবস্থায় খোদার কাছে বিপদ মুক্তির জন্য ফরিয়াদ জ্ঞাপন করেছেন! কেউবা বলে এটি একটি দোয়া। কঠিন বিপদে পড়ে তারা উক্ত দোয়াটি পড়তে থাকে। ‘লাইলাহা ইলা আনতা ছুবহানাকা ইন্নিকুন্তু মিনাজযোয়ালেমিন’ যার অর্থ হলো, তুমি ছাড়া আর কোনো মাবুদ নেই, তুমিই পবিত্র, আর কেবল তোমারই কাছে আমার বিপন্নদশা থেকে মুক্তি কামনা করি। ইউনুস নবী অবাধ্য অবস্থায় খোদার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ভেগে যাচ্ছিলেন, তখন তাকে জাহাজ থেকে ফেলে দেয়া হয়েচিল, আর অমনি অতিকায় একটা মাছ তাকে আস্ত গিলে ফেললো। উক্ত বিপন্ন দশায় তাঁর এমন কাতর উক্তি, যাকে আর এক কথায় ‘তওবাতুননসুহা’ বলা হলে কমানো বাড়ানো হবে না। নসুহাও এমন কাজ করে বসেছিল যা ধরা খেলে নির্ঘাত ছিল মুন্ডপাতের শাস্তি প্রাপ্য। যাকগে, খোদাকে ডাকার জন্য লগ্ন আবার কোন পূজায় লাগে বলুন। আপনি শততঃ তাঁকে ডাকতে থাকুন, তিনি হৃষ্টচিত্তে আপনার ডাকে নিশ্চয়ই সাড়া দিবেন। অন্তযামি মাবুদ আপনার হৃদয়ের অবস্থা দেখতে পান, তবে ধর্মের ধ্বজাধারি ষণ্ডাপান্ডা তা বুঝতে পারে না, তাদের চাই বাহিৃক প্রমান শুধু বাণিজ্যিক স্বার্থের প্রয়োজনে।