আমি জানিনা যখন আমার নাশিকায় প্রাণবায়ু ফুকে দিলে, আর কতক্ষণ পর্যন্ত থাকবে বা রাখবে বলবৎ! অবশ্য অধিকার বা জানার প্রয়োজন দেখি না; একটা বিষয় বুঝতে পেরেছি, যা হলো, যতক্ষণ পর্যন্ত থাকবে তা চলমান, ততক্ষণ বলে যেতে হবে সেই সত্য বার্তা, নিছক বাস্তবতা; বহুজনেই সে খবর রাখে না, রাখার প্রয়োজনীয়তা বোধ করে না, নগদ যা পাও হাত পেতে নাও বাকীর খাতা শুণ্য পড়ে থাক! তবে আমাদের যাত্রাশেষে একটি সুনির্দিষ্ট অন্ত রয়েছে, বুঝতে হবে সকলের সে বিষয়; যেহেতু বিশ্বটি গোলাকার, সে সুবাদে মুভমেন্ট বন্ধ না করে চালিয়ে রাখলে, কখন যে একই বিন্দুতে পৌছে যাবে তা টেরই পাবে না। কেউবা বিষয়টি প্রকাশ করে এমন শব্দ চয়ন দিয়ে, বৃদ্ধ হলে নাকি ব্যক্তিটি শিশুবৎ হয়ে যায়, অবশ্য কালামপাকে কথাটা এভাবে বর্ণিত রয়েছে, শিশুদের মত না হলে কেউই খোদার রাজ্যে প্রবেশ করতে পারবে না। এক্ষেত্রে অধিক বলা হয়েছে, এইমাত্র জন্মেছে এমন শিশুর মত রুহানি দুধের জন্য আগ্রহী হও, যেন উহাদ্বারা বাড়িয়া উঠিতে উঠিতে পূর্ণতায় পৌছাতে পার।
কথাটার তাৎপর্য হলো, আমরা ইতোমধ্যে অখাদ্য কুখাদ্য খেয়ে খেয়ে পেটটাকে নষ্ট করে ফেলেছি, সুস্বাস্থ্য বলতে আর কিছুই নেই অবশিষ্ট। গোটা শরীর বিষাক্ত, কথায় কাজে বিষবাস্প নির্গত হচ্ছে; শরীরের জৈব রাসায়ন বিষে জড় জড়; সুস্থ চিন্তা, কাওকে গঠন দেয়া, গড়ে তোলার মত মন্ত্রনা যেন মাথায় আর নেই দেবার মত। ভাল কাজে ক্লান্তি ধরে; স্বভাব উল্টো পথে রয়েছে ধাবমান, সহজ সরল বুদ্ধি না দিয়ে সদা প্যাঁচালো মন্ত্রণা চলে আসে মাথায়। অবশ্য মন যা দিয়ে পরিপূর্ণ মুখ তো তা-ই প্রকাশ করবে। কণ্ঠনালী যেন এ¤িøফায়ার, প্রমটার যা কিছু ফিসফিস করে বলে দেয়, উচ্চ নিনাদে মাইক ও লাউডস্পিকার তা ঘোষণা করে দেয়। মনে যখন প্রেমভাব জাগে, চোখ ও জবান অমনি নতুন সুরে নতুন কথা বলে চলে; লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো বরফ গলানো, দুফোটা পান করে তেষ্টা নিবারণ। আবার মনটা যখন অস্থির থাকে, তখন কথাগুলো যেন ঝঞ্জাতাড়িত প্রবল হাওয়া এসে ঘটালো সুনামি, আর নেত্রবাণ সুমুখে যাকে পায় তাকে জ্বালিয়ে ভষ্ম করে দেয়। এমন ঝরো হাওয়া একটানা নাকি বহুদিন চলতে পারে। তবে একবার লেককনস্টাঞ্জে একটানা শাত দিবস তেমন ঝরো হাওয়া বইতে দেখেছি।
একদা ক্লাসের শিক্ষক আমাদের হুকুম দিলেন, যার যার খাতার দিকে তাকিয়ে লিখতে হবে; বাস শ্রেণীর সবকটা ছাত্রছাত্রী ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির বনে গেল, এবং আমিও…। আমার মাথা থেকে কোনো লেখা আর বের হচ্ছে না, অগত্যা কলমটি কাগজের উপর ধরে ডানে বায়ে টানাটানি করে সময় ক্ষেপন করছি। ইতোমধ্যে আমার পাশের ছাত্রটি শিক্ষককে লক্ষ্য করে অভিযোগের সুরে বলে উঠলো, স্যার, দেখুন ওয়াহাব কিছুই লিখছে না। ছাত্রটি ভেবেছিল, কিছুই না লেখা মস্তবড় শাস্তিযোগ্য অপরাধ, তাই সম্ভবত: ইর্ষাকাতরতাহেতু এমন অভিযোগ দায়ের করা। বলার সাথে সাথে সুবিবেচক শিক্ষক তাকেই দাড় করালেন, তাকেই অপরাধীর কাঠগড়ায় দাড়াতে হলো। আর অপরাধটি ছিল শিক্ষকের আজ্ঞা লঙ্ঘণ। আপন আপন খাতার দিকে তাকিয়ে লেখার জন্য, আর যদি কেউ আপন আপন নথিপত্রের দিকে চোখ রাখে তবে অন্যের ছিদ্র দেখার অবকাশ কোথা? প্রিয় পিতা, আমি স্বীয় অপরাধের ক্ষতিয়ান প্রত্যক্ষ করে সম্পূর্ণ ম্রিয়মান হয়ে পড়েছি। কায়মন বাক্যে করজোড়ে বিষ্ফারিত নেত্রে তোমার পানে রয়েছি সদা তাকিয়ে; কথায় বলে যতক্ষণ স্বাস ততক্ষণ আশ। যার অর্থ দাড়ায়, আমার জীবদ্দশায় আমাকে ক্ষমা পেতে হবে, আর তা তোমার কাছে, অবশ্য আমার বিরুদ্ধে রয়েছে যাদের অভিযোগ তাদের কাছে আমি নিয়ত ক্ষমাপ্রার্থনা করে চলছি, আর যাদের বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ ছিল, তা বহুপূর্বেই ক্ষমা করে দিয়েছি; তাইতো অরিন্দম আর অরি নয় আসলে আমরা সকলেই যে একই আদমশুত, তা অস্বীকার করি কোন সুবাদে।
পিতা, তব মুখপানে আছি সদা তাকিয়ে; তোমাকে দেখে দেখে কেটে যাচ্ছে আমার চোখের ছানি, যা ইতোপূর্বে লাভ করেছিলাম অন্ধকারে জন্ম নেবার ফলে। ভুমিষ্ট হবার সাথে সাথে কুট মন্ত্রণা কর্ণকুহরে ঠেলে দিল, ভ্রান্ত শিক্ষায় গোটা সমাজ আছে ডুবে, একই আদমের মধ্যে দিয়ে জাত সন্তানের মধ্যে বিভাজন করা কেবল খোদাদ্রোহী নারদের আজন্ম ব্রত। খোদার বিরুদ্ধে সে সর্বদা থাকে কর্মরত; চোর আসে চুরি, খুন ও নষ্ট করার জন্য। তবে আবরণে তথা জবানিতে ওর পেটের মধ্যে যে বিষ রয়েছে তা সহজে টের পাবার কথা নয়, আদম হাওয়া না বুঝেই ধরা খেল, এমন সময় টের পেল যখন হয়ে গেল সবকিছু শেষ।
তুমি আমাদের হুশিয়ার করে দিয়েছ, সদাসর্বদা সবাধান থাকার জন্য। আমি স্বীকার করছি, আমার ব্যর্থতার কথা, মোহান্ধ অবস্থায় আমাকে পশুর সাথে জুড়ে দেয়া হয়েছিল, এতটাই মদে বুঁদ হয়ে পড়েছিলাম, কি যে ঘটেছে তার বিন্দুবিসর্গ বুঝতে পারি নি। আদমের মত ঠিক তখনই সবকিছু আমার কাছে পরিষ্কার হলো, যখন আমি ছিলাম মানব সমাজে সম্পূর্ণ পরিত্যাজ্য। আর আমার অসহায় অবস্থায়, অন্তিমলগ্নে তুমি হাত বাড়িয়ে দিলে, তুলে নিলে আপন কোলে, করে চললে স্নাতশুভ্র যেন পুনরায় সমাসীন করা চলে সুধীজনের কাতারে। গোটা বিশ্ব একই অপরাধে অপরাধী, তবে সকলে যে একই ক্ষণে তা টের পায় তা বলা যাবে না। বোধোদয় হতে সম্ভবত একটা পরিবেশ পরিস্থিতির প্রয়োজন আছে। যেমন ফল ফলাদি; ধরে নেয়া যাক কলার বিষয়টি, সবুজ আভা কেটে দেখলাম, কেবল বিঃস্বাদ কষে ভরা। একটু ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করে রং বদলাতে সুযোগ দিলাম, চাকুর প্রয়োজন হলো না, ছোলাটা সহজেই খোলা গেল, আর ভিতরের কসটুকু অমৃতের স্বাদ ধারণ করেছে যা বড়ই তৃপ্তিদায়ক। সবকিছুর জন্য একটা সুনির্দিষ্ট সময়ের প্রয়োজন; ডিমের তরল পদার্থের মধ্যে যে একটা আস্ত চলমান ছানা শুপ্তাকারে রয়েছে উপস্থিত, তা বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই সময় দিতে হবে, ধৈর্যচ্যুতি ঘটলে চলবে না, গরম দুধে ঠোট পোড়ে, কথাটা জানা আছে তো?
বেহেশতি পিতা, তোমার কথা তোমাকে শুনিয়ে আর কি লাভ। বরং আমাকে যেভাবে স্থীর হতে বলেছো আমি তেমন সুস্থির হতে চাই। তুমি তো বলেই দিয়েছো, মাত্র একটি কথা, নিজের বুদ্ধির উপর নির্ভর করার ফলে তোমার আজ্ঞা লঙ্ঘন করা, আমার পায়ে আমারই কুঠারাঘাত করার, সমতুল্য হবে। তা আমি কোনো অবস্থায় আর করতে চাই না। তুমি আমাকে অপেক্ষা করতে বলেছো। আশির্বাদ তো কেবল তোমার কাছ থেকে নেমে আসে, আর তা পর্যাপ্ত পরিমাণে। ঘাটতি তো দেখি না কোনো কিছুতে। তবে ঘাটতি রয়েছে আমার দৃষ্টিতে। ঘাটতি রয়েছে আমার বিশ্বাসে। তোমার উপর শতভাগ বিশ্বাসের থলে যেন ফুটো হয়ে গেছে, বেলুনভর্তি বাতাস ফুটো দিয়ে বেরিয়ে পরছে, চোরা কাঁটা অপসারণ না করা পর্যন্ত তেমন ছিদ্রযুক্ত বিশ্বাস কোনো শুভফল বয়ে আসতে পারছে না। সন্দেহ যুক্ত বিশ্বাস তোমাকে সন্তুষ্ট করার ক্ষমতা রাখে না। তুমি আছো নিশ্চয়, আর তোমার অবস্থান কেবল আমারই মধ্যে তা আমি ভালো করেই জানি। এ জ্ঞানই আমার চলৎশক্তি, পথের দিশা, ক্লান্ত অবস্থায় যোগায় প্রেরণা, পতনের সাথে সাথে ঘুরে দাড়াবার শক্তি; আর তোমার দেয়া শক্তিতেই আমি বেঁচে আছি। মাত্র একটিই দায়িত্ব; ঐশি রাজ্য যা হবে আমার নিয়ত সাধনা।
অবশ্য অগণিত রাজ্যের সন্ধান রয়েছে জানা আমার; তবে তেমন রাজ্যগুলো কেবলই ক্ষণস্থায়ী, বিপাকে ফেলে দেয়। আর ওদেরই বা দোষ দেব কোন সুবাদে, যার নিজের নাই ঠাই, সে সঙ্করাকে ডাকে কি করে। ঋণগ্রস্থ কি করে দাঁতা সাজে তা আমার বোধে ধরে না।
যাকগে, যেহেতু তুমিই ছিলে, আছো আর থাকবে অনন্তকাল জুড়ে, তাই যাত্রাপথের ক্লান্তি, আমাকে আর দাবিয়ে রাখতে পারছে না। তুমিইতো কিনে নিলে পুনরায়। এত দাম দিলে যা সহজ ভাবনায় পড়ে না। আমাকে ঘিরে ধরেছে তোমার অনির্বাণ আলো, গড়ে তুলেছে আলোর ফোয়ারা, তুলে দিলে মুক্ত প্রবাহ; নিত্য গতিধারা, থেমে থাকার প্রশ্নই জাগে না।
এতটা সম্পদ, অতীব মুল্যবান শিয়ালের পরামর্শে বোকা কাকের মত কা কা আওয়াজ তুলে ঠোট থেকে ফেলে দেয়া বিজ্ঞোচিত হবার নয়। তুমিই দিয়েছ, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তো কেবল তোমার। কি কারণ থাকতে পারে, অস্থির হবার। তুমি ভালো থাক, তোমার ভালো থাকাই আমার ভালো থাকা।
কথাটার তাৎপর্য হলো, আমরা ইতোমধ্যে অখাদ্য কুখাদ্য খেয়ে খেয়ে পেটটাকে নষ্ট করে ফেলেছি, সুস্বাস্থ্য বলতে আর কিছুই নেই অবশিষ্ট। গোটা শরীর বিষাক্ত, কথায় কাজে বিষবাস্প নির্গত হচ্ছে; শরীরের জৈব রাসায়ন বিষে জড় জড়; সুস্থ চিন্তা, কাওকে গঠন দেয়া, গড়ে তোলার মত মন্ত্রনা যেন মাথায় আর নেই দেবার মত। ভাল কাজে ক্লান্তি ধরে; স্বভাব উল্টো পথে রয়েছে ধাবমান, সহজ সরল বুদ্ধি না দিয়ে সদা প্যাঁচালো মন্ত্রণা চলে আসে মাথায়। অবশ্য মন যা দিয়ে পরিপূর্ণ মুখ তো তা-ই প্রকাশ করবে। কণ্ঠনালী যেন এ¤িøফায়ার, প্রমটার যা কিছু ফিসফিস করে বলে দেয়, উচ্চ নিনাদে মাইক ও লাউডস্পিকার তা ঘোষণা করে দেয়। মনে যখন প্রেমভাব জাগে, চোখ ও জবান অমনি নতুন সুরে নতুন কথা বলে চলে; লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো বরফ গলানো, দুফোটা পান করে তেষ্টা নিবারণ। আবার মনটা যখন অস্থির থাকে, তখন কথাগুলো যেন ঝঞ্জাতাড়িত প্রবল হাওয়া এসে ঘটালো সুনামি, আর নেত্রবাণ সুমুখে যাকে পায় তাকে জ্বালিয়ে ভষ্ম করে দেয়। এমন ঝরো হাওয়া একটানা নাকি বহুদিন চলতে পারে। তবে একবার লেককনস্টাঞ্জে একটানা শাত দিবস তেমন ঝরো হাওয়া বইতে দেখেছি।
একদা ক্লাসের শিক্ষক আমাদের হুকুম দিলেন, যার যার খাতার দিকে তাকিয়ে লিখতে হবে; বাস শ্রেণীর সবকটা ছাত্রছাত্রী ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠির বনে গেল, এবং আমিও…। আমার মাথা থেকে কোনো লেখা আর বের হচ্ছে না, অগত্যা কলমটি কাগজের উপর ধরে ডানে বায়ে টানাটানি করে সময় ক্ষেপন করছি। ইতোমধ্যে আমার পাশের ছাত্রটি শিক্ষককে লক্ষ্য করে অভিযোগের সুরে বলে উঠলো, স্যার, দেখুন ওয়াহাব কিছুই লিখছে না। ছাত্রটি ভেবেছিল, কিছুই না লেখা মস্তবড় শাস্তিযোগ্য অপরাধ, তাই সম্ভবত: ইর্ষাকাতরতাহেতু এমন অভিযোগ দায়ের করা। বলার সাথে সাথে সুবিবেচক শিক্ষক তাকেই দাড় করালেন, তাকেই অপরাধীর কাঠগড়ায় দাড়াতে হলো। আর অপরাধটি ছিল শিক্ষকের আজ্ঞা লঙ্ঘণ। আপন আপন খাতার দিকে তাকিয়ে লেখার জন্য, আর যদি কেউ আপন আপন নথিপত্রের দিকে চোখ রাখে তবে অন্যের ছিদ্র দেখার অবকাশ কোথা? প্রিয় পিতা, আমি স্বীয় অপরাধের ক্ষতিয়ান প্রত্যক্ষ করে সম্পূর্ণ ম্রিয়মান হয়ে পড়েছি। কায়মন বাক্যে করজোড়ে বিষ্ফারিত নেত্রে তোমার পানে রয়েছি সদা তাকিয়ে; কথায় বলে যতক্ষণ স্বাস ততক্ষণ আশ। যার অর্থ দাড়ায়, আমার জীবদ্দশায় আমাকে ক্ষমা পেতে হবে, আর তা তোমার কাছে, অবশ্য আমার বিরুদ্ধে রয়েছে যাদের অভিযোগ তাদের কাছে আমি নিয়ত ক্ষমাপ্রার্থনা করে চলছি, আর যাদের বিরুদ্ধে আমার অভিযোগ ছিল, তা বহুপূর্বেই ক্ষমা করে দিয়েছি; তাইতো অরিন্দম আর অরি নয় আসলে আমরা সকলেই যে একই আদমশুত, তা অস্বীকার করি কোন সুবাদে।
পিতা, তব মুখপানে আছি সদা তাকিয়ে; তোমাকে দেখে দেখে কেটে যাচ্ছে আমার চোখের ছানি, যা ইতোপূর্বে লাভ করেছিলাম অন্ধকারে জন্ম নেবার ফলে। ভুমিষ্ট হবার সাথে সাথে কুট মন্ত্রণা কর্ণকুহরে ঠেলে দিল, ভ্রান্ত শিক্ষায় গোটা সমাজ আছে ডুবে, একই আদমের মধ্যে দিয়ে জাত সন্তানের মধ্যে বিভাজন করা কেবল খোদাদ্রোহী নারদের আজন্ম ব্রত। খোদার বিরুদ্ধে সে সর্বদা থাকে কর্মরত; চোর আসে চুরি, খুন ও নষ্ট করার জন্য। তবে আবরণে তথা জবানিতে ওর পেটের মধ্যে যে বিষ রয়েছে তা সহজে টের পাবার কথা নয়, আদম হাওয়া না বুঝেই ধরা খেল, এমন সময় টের পেল যখন হয়ে গেল সবকিছু শেষ।
তুমি আমাদের হুশিয়ার করে দিয়েছ, সদাসর্বদা সবাধান থাকার জন্য। আমি স্বীকার করছি, আমার ব্যর্থতার কথা, মোহান্ধ অবস্থায় আমাকে পশুর সাথে জুড়ে দেয়া হয়েছিল, এতটাই মদে বুঁদ হয়ে পড়েছিলাম, কি যে ঘটেছে তার বিন্দুবিসর্গ বুঝতে পারি নি। আদমের মত ঠিক তখনই সবকিছু আমার কাছে পরিষ্কার হলো, যখন আমি ছিলাম মানব সমাজে সম্পূর্ণ পরিত্যাজ্য। আর আমার অসহায় অবস্থায়, অন্তিমলগ্নে তুমি হাত বাড়িয়ে দিলে, তুলে নিলে আপন কোলে, করে চললে স্নাতশুভ্র যেন পুনরায় সমাসীন করা চলে সুধীজনের কাতারে। গোটা বিশ্ব একই অপরাধে অপরাধী, তবে সকলে যে একই ক্ষণে তা টের পায় তা বলা যাবে না। বোধোদয় হতে সম্ভবত একটা পরিবেশ পরিস্থিতির প্রয়োজন আছে। যেমন ফল ফলাদি; ধরে নেয়া যাক কলার বিষয়টি, সবুজ আভা কেটে দেখলাম, কেবল বিঃস্বাদ কষে ভরা। একটু ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করে রং বদলাতে সুযোগ দিলাম, চাকুর প্রয়োজন হলো না, ছোলাটা সহজেই খোলা গেল, আর ভিতরের কসটুকু অমৃতের স্বাদ ধারণ করেছে যা বড়ই তৃপ্তিদায়ক। সবকিছুর জন্য একটা সুনির্দিষ্ট সময়ের প্রয়োজন; ডিমের তরল পদার্থের মধ্যে যে একটা আস্ত চলমান ছানা শুপ্তাকারে রয়েছে উপস্থিত, তা বুঝতে হলে আপনাকে অবশ্যই সময় দিতে হবে, ধৈর্যচ্যুতি ঘটলে চলবে না, গরম দুধে ঠোট পোড়ে, কথাটা জানা আছে তো?
বেহেশতি পিতা, তোমার কথা তোমাকে শুনিয়ে আর কি লাভ। বরং আমাকে যেভাবে স্থীর হতে বলেছো আমি তেমন সুস্থির হতে চাই। তুমি তো বলেই দিয়েছো, মাত্র একটি কথা, নিজের বুদ্ধির উপর নির্ভর করার ফলে তোমার আজ্ঞা লঙ্ঘন করা, আমার পায়ে আমারই কুঠারাঘাত করার, সমতুল্য হবে। তা আমি কোনো অবস্থায় আর করতে চাই না। তুমি আমাকে অপেক্ষা করতে বলেছো। আশির্বাদ তো কেবল তোমার কাছ থেকে নেমে আসে, আর তা পর্যাপ্ত পরিমাণে। ঘাটতি তো দেখি না কোনো কিছুতে। তবে ঘাটতি রয়েছে আমার দৃষ্টিতে। ঘাটতি রয়েছে আমার বিশ্বাসে। তোমার উপর শতভাগ বিশ্বাসের থলে যেন ফুটো হয়ে গেছে, বেলুনভর্তি বাতাস ফুটো দিয়ে বেরিয়ে পরছে, চোরা কাঁটা অপসারণ না করা পর্যন্ত তেমন ছিদ্রযুক্ত বিশ্বাস কোনো শুভফল বয়ে আসতে পারছে না। সন্দেহ যুক্ত বিশ্বাস তোমাকে সন্তুষ্ট করার ক্ষমতা রাখে না। তুমি আছো নিশ্চয়, আর তোমার অবস্থান কেবল আমারই মধ্যে তা আমি ভালো করেই জানি। এ জ্ঞানই আমার চলৎশক্তি, পথের দিশা, ক্লান্ত অবস্থায় যোগায় প্রেরণা, পতনের সাথে সাথে ঘুরে দাড়াবার শক্তি; আর তোমার দেয়া শক্তিতেই আমি বেঁচে আছি। মাত্র একটিই দায়িত্ব; ঐশি রাজ্য যা হবে আমার নিয়ত সাধনা।
অবশ্য অগণিত রাজ্যের সন্ধান রয়েছে জানা আমার; তবে তেমন রাজ্যগুলো কেবলই ক্ষণস্থায়ী, বিপাকে ফেলে দেয়। আর ওদেরই বা দোষ দেব কোন সুবাদে, যার নিজের নাই ঠাই, সে সঙ্করাকে ডাকে কি করে। ঋণগ্রস্থ কি করে দাঁতা সাজে তা আমার বোধে ধরে না।
যাকগে, যেহেতু তুমিই ছিলে, আছো আর থাকবে অনন্তকাল জুড়ে, তাই যাত্রাপথের ক্লান্তি, আমাকে আর দাবিয়ে রাখতে পারছে না। তুমিইতো কিনে নিলে পুনরায়। এত দাম দিলে যা সহজ ভাবনায় পড়ে না। আমাকে ঘিরে ধরেছে তোমার অনির্বাণ আলো, গড়ে তুলেছে আলোর ফোয়ারা, তুলে দিলে মুক্ত প্রবাহ; নিত্য গতিধারা, থেমে থাকার প্রশ্নই জাগে না।
এতটা সম্পদ, অতীব মুল্যবান শিয়ালের পরামর্শে বোকা কাকের মত কা কা আওয়াজ তুলে ঠোট থেকে ফেলে দেয়া বিজ্ঞোচিত হবার নয়। তুমিই দিয়েছ, রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তো কেবল তোমার। কি কারণ থাকতে পারে, অস্থির হবার। তুমি ভালো থাক, তোমার ভালো থাকাই আমার ভালো থাকা।